জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটার বা প্রার্থী হতে পারবেন না অধিভুক্ত কোনো কলেজ বা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী, এবং এমফিল, পিএইচডি বা সমমানের কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘জকসুর গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা ২০২৫’-এর বিশ্লেষণে এ তথ্য জানা যায়।
নীতিমালার ধারা-৪ এর ২(ক) অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সান্ধ্যকালীন কোর্স যেমন এমবিএ, ইএমবিএ, এমএড, অথবা কোনো পেশাদার, নির্বাহী বা বিশেষ মাস্টার্স কোর্স, এমফিল ও পিএইচডি বা সমমানের কোর্স, ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্স, ভাষা কোর্সসহ এ ধরনের অন্যান্য প্রোগ্রামে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা ভোটার বা প্রার্থী হতে পারবেন না। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কোনো কলেজ বা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরাও জকসু বা হল সংসদের সদস্য হতে পারবেন না।
জকসু নির্বাচন ও বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ আন্দোলনের পর রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পাওয়ার মাধ্যমে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) নীতিমালাটি চূড়ান্ত হয়। এর আগে সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসানকে আহ্বায়ক ও সহকারী অধ্যাপক আনিসুর রহমানকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের জকসু নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরবর্তীতে সেই কমিটিকেই নির্বাচন কমিশন হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জকসু নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করে। ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী ২৭ নভেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বলা হয়েছিল, ৮ অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে, তবে তা গঠিত হয়েছে বুধবার (২৯ অক্টোবর)।
কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন এখন নীতিমালা ও আচরণবিধি চূড়ান্ত করা, তফসিল ঘোষণা, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ, মনোনয়নপত্র জমা ও বাছাইসহ নির্বাচনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির সদস্য মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন বলেন, 'গঠনতন্ত্রে ‘অধিভুক্তি’ বলতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরের কোনো কলেজ বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বোঝানো হয়েছে। আমাদের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট তো মূল বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন। তাই তাদের শিক্ষার্থীরা ভোটার ও প্রার্থী দু’টিই হতে পারবেন।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, 'জকসুর নীতিমালা আমরা হাতে পেয়েছি, নির্বাচন কমিশনও গঠন হয়েছে। আমরা অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিতে আগাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ, যথাযথ সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।'
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এটাই প্রথম জকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ২০০৫ সালে জগন্নাথ কলেজ পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হওয়ার পর থেকে আর কোনো ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন–২০০৫’-এ ছাত্র সংসদ সংক্রান্ত কোনো ধারা না থাকায় এতদিন নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হয়নি। কলেজ থাকাকালে মোট ১৪ বার ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সর্বশেষ ১৯৮৭–৮৮ শিক্ষাবর্ষে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভিপি নির্বাচিত হন মো. আলমগীর সিকদার লোটন এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন জাহাঙ্গীর সিকদার জোটন।
এসআর