জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ডোপ টেস্টে মাদকাসক্ত প্রমাণিত হলে প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে প্রকাশিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের খসড়া আচরণবিধিতে এসব নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এতে বলা হয়েছে, কমিশন প্রত্যেক প্রার্থীর মাদকাসক্তি যাচাই করবে এবং কেউ পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকলে তার প্রার্থিতাও স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলে গণ্য হবে।
আচরণবিধিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো প্রার্থী যদি ফৌজদারি অপরাধে শাস্তিপ্রাপ্ত হন বা শৃঙ্খলাভঙ্গ, যৌন অপরাধ বা অনুরূপ অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তিনি ভোটাধিকার ও প্রার্থিতার অযোগ্য হবেন। একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী শাস্তির মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। তবে শাস্তির মেয়াদ শেষে নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে মর্যাদা ফিরে পেলে তিনি ভোটার ও প্রার্থী হতে পারবেন।
নির্বাচনী প্রচারণা বিষয়ে বিধিমালায় বলা হয়, প্রচার চালাতে প্রার্থীদের বিভাগ, হল, শিক্ষাবর্ষ, পাঠ্য ও সহপাঠ্য কার্যক্রমের বিবরণ উপস্থাপন করতে হবে। ক্লাস বা পরীক্ষার সময় শ্রেণিকক্ষ ও পরীক্ষার হলে প্রচারণা নিষিদ্ধ থাকবে। কমিশনের অনুমতি ছাড়া ২৫ জনের বেশি জমায়েত হওয়া যাবে না এবং কোনো বহিরাগত ব্যক্তি প্রচারণায় অংশ নিতে পারবে না।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী বা উইকেন্ড/প্রফেশনাল শিক্ষার্থীদের প্রচারণায় অংশগ্রহণ বা প্রভাব বিস্তারের ওপরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
প্রচার উপকরণে সীমাবদ্ধতা আরোপ করে বলা হয়েছে, প্রার্থীরা শুধুমাত্র হ্যান্ডবিল বা প্রচারপত্র ব্যবহার করতে পারবেন। অন্য কারও ছবি প্রচারণায় ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনী প্রচারণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এছাড়া কোনো যানবাহন, ধর্মীয় উপাসনালয় বা খাদ্য উপঢৌকন বিতরণ নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহার করা যাবে না। ব্যক্তিগত চরিত্রহনমূলক, বিদ্বেষমূলক বা উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়া যাবে না। ভোটগ্রহণের ২৪ ঘণ্টা আগে সব প্রচারণা বন্ধ করতে হবে।
প্রচারণার সময় স্পিকার বা সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার নিষিদ্ধ; তবে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি সাপেক্ষে হ্যান্ডমাইক ব্যবহার করা যাবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জকসু নির্বাচন পরিচালনায় পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করে। সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসানকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কানিজ ফাতেমা কাকলি, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জুলফিকার মাহমুদ ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আনিসুর রহমানকে সহকারী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এনআই