ভোলার দৌলতখান উপজেলায় টাকার অভাবে একটি মসজিদের নির্মাণ কাজ দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে নামাজ আদায়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার ধর্মপ্রান মুসল্লীরা। মসজিদটি নির্মাণে দেশ ও দেশের বাইরের সবার কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।
নির্মাণাধীন মসজিদটির নাম আল মদিনা জামে মসজিদ। এটি ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের দক্ষিণ চর লামছি পাতা গ্রামের সুবেদার মোড় সংলগ্ন জাহাঙ্গীর মিয়ার ব্রিকস মিলের সামনে অবস্থিত।
মুসল্লীরা জানান, ২৭ বছর আগে নির্মাণ করা আল মদিনা জামে মসজিদটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় গেল দুই বছর আগে এলাকাবাসীর উদ্যেগে পুরাতন মসজিদটি ভেঙে নতুনভাবে নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। মুসল্লী ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন, পিলার এবং নিচের অংশেই খরচ হয়ে যায় ১৩ লাখ টাকা। এতে হিমশিম খেয়ে পড়েন মসজিদ কমিটি। মসজিদটি সম্পন্ন করতে এখনো প্রয়োজন ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। যা ওই এলাকাবাসীর পক্ষে বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই সবার সহযোগিতা চেয়েছেন ওই গ্রামের ধর্মপ্রান মুসল্লীরা।
মসজিদটির ইমাম মাওলানা মো. মাইনুদ্দিন জানান, অর্থের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে মসজিদের নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় নামাজ আদায়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন তারা। বর্তমানে পাশের একটি মাদ্রাসায় নামাজ আদায় করছেন। মাদ্রাসাটি ছোট হওয়ায় গাদাগাদি করে নামাজ আদায় করতে হয় মুসল্লীদের। শুক্রবার হলে ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়। বেশিরভাগ মুসল্লীদের নামাজ আদায় করতে হয় বাহিরে রোদে অথবা বৃষ্টিতে ভিজে।
মসজিদটির নিয়মিত মুসল্লী আনিসুল হক জানান, দুই বছর আগে মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করলেও এখন পযন্ত দেয়াল কিংবা ছাদ কিছুই করা সম্ভব হচ্ছে না। পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে নির্মাণ কাজ। যতটুকু কাজ করা হয়েছে সেগুলোও এখন নষ্টের পথে। তাই দ্রুত বাকী স্থাপনা নির্মাণ করতে দেশ ও দেশের বাইরের সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।
একটি মসজিদ মানে শুধু ইট-পাথরের স্থাপনা নয়, এটি ঈমানের প্রতীক, মুসল্লীদের মিলনের স্থান, আর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথ। যেখানে মুসল্লীরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন। সেই নামাজ আদায়ের স্থানে সিজদাহ্ দিতে না পারায় আক্ষেপে পুড়ছে আল মদিনা জামে মসজিদের প্রায় দুইশত মুসল্লীর হ্নদয়।
এ বিষয়ে চরপাতা ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বে থাকা প্যানেল চেয়ারম্যান মো. সবুজ মিয়া সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, 'দুই বছর ধরে মসজিদের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে, বিষয়টি জানা নেই। মসজিদ কমিটির লোকজন যদি ইউনিয়ন পরিষদ বরাবর আবেদন করে, তাহলে মসজিদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে।'
দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়তি রাণী কৈরী সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, 'একটি মসজিদের নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকা দুঃখজনক বিষয়। তারা আবেদন করলে যতটুকু সম্ভব সহায়তা দেওয়া হবে।'
বলা হয়ে থাকে মসজিদ আল্লহর ঘর, আর আল্লাহর ঘর নির্মাণ মানে দান নয়, এটি এক চিরস্থায়ী সওয়াবের পথ। দুনিয়ার ঘর হয়তো একদিন ফুরিয়ে যাবে, কিন্তু আল্লাহর ঘর নির্মাণে অংশ নিলে, আখেরাত পর্যন্ত মিলবে সওয়াব ও অনন্ত কল্যাণ।
তাই সবার সহযোগিতায় হয়ে উঠুক থেমে যাওয়া দেয়ালগুলো, জেগে উঠুক ঈমানের আলো ও মুসলমানদের সিজদার স্থান।
নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকা মসজিদের ইমাম কিংবা সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ বা সাহায্য করতে ০১৭১৯৫৬৭৪২২ ( নগদ ও বিকাশ) এই নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।
ইখা