ইতালিতে ২০২৬ থেকে ২০২৮ সাল পর্যন্ত বিদেশি কর্মী নিয়োগের নতুন ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার।৷
ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল (EEA)-এর বাইরের দেশগুলো থেকে সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫৫০ জন কর্মীকে কাজের সুযোগ দেওয়া হবে এ ঘোষণার মাধ্যমে। এই সংক্রান্ত সরকারি আদেশটি গত ২ অক্টোবর স্বাক্ষরিত হয়ে ১৫ অক্টোবর ইতালির সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হয়।
গত ২৩ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে আবেদন শুরু হয়েছে, আবেদন চলবে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে বিদেশি কর্মীদের জন্য কাজের অনুমোদন (নুলা অস্তা) পেতে অনলাইনে প্রি-ফিলিং আবেদন করা যাবে। এই সময়ে নিয়োগকর্তা, তাদের প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থা ও অনুমোদিত পেশাজীবীরা প্রাথমিক ফর্ম পূরণ করতে পারবেন।
আবেদন জমা দিতে হবে ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘এএলআই সার্ভিসেস পোর্টাল’-এর মাধ্যমে। লগইনের জন্য ব্যবহার করতে হবে এসপিআইডি ডিজিটাল আইডি বা ইলেকট্রনিক আইডেন্টিটি কার্ড (সিআইই)।
দেশ ও কাজের ধরনভেদে আবেদন করার দিন আলাদা করে নির্ধারণ করা হয়েছে। ১২ জানুয়ারি (২০২৬) মৌসুমি কৃষি খাত, ৯ ফেব্রুয়ারি (২০২৬) মৌসুমি পর্যটন খাত, ১৬ ফেব্রুয়ারি (২০২৬) অ-মৌসুমি বিভিন্ন খাত, ইতালীয় বংশোদ্ভূত স্বনিয়োজিত কর্মী, শরণার্থী ও রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি, ১৮ ফেব্রুয়ারি (২০২৬) গৃহস্থালী ও যত্ন সেবা খাত।
জানা গেছে, ইতালির সহযোগিতা চুক্তিভুক্ত ৩৭টি দেশের নাগরিকদের জন্য ১৮ হাজার কোটা সংরক্ষিত থাকবে। এই তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন, মিশর, নাইজেরিয়া, মরক্কো, সেনেগালসহ আরও অনেক দেশ।
২০২৬ সালের জন্য নির্ধারিত কোটার মধ্যে ৩০০ কোটা রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি ও শরণার্থীদের জন্য, ১৩ হাজার ৬০০ কোটা পরিবারভিত্তিক যত্ন ও সহায়তা সেবার কর্মীদের জন্য, ১৯ হাজার ৩০০ কোটা সাধারণ অ-মৌসুমি কর্মীদের জন্য, ৬৫০ কোটা স্বনিয়োজিত পেশাজীবীদের জন্য বরাদ্দ পেয়েছে।
এ ছাড়া ইতালীয় বংশোদ্ভূত নাগরিকদের জন্য ৫০টি কোটা এবং উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী, পেশাজীবী ও শিল্পীদের জন্য বিশেষভাবে ৫০০ কোটা বরাদ্দ থাকবে।
যেসব উদ্যোক্তা অন্তত পাঁচ লাখ ইউরো বিনিয়োগ করে তিনটি নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করবেন, তাদের জন্য বিশেষ কোটা রাখা হয়েছে। এ ছাড়া অন্তত তিন বছর ধরে সক্রিয় ইতালীয় কোম্পানির পরিচালক, সিইও বা অডিটর, উদ্ভাবনী স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠাতা ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শিল্পীরাও এই কোটা থেকে সুযোগ পাবেন।
১৬ই অক্টোবর প্রকাশিত যৌথ সার্কুলারে আবেদন প্রক্রিয়া ও শর্তাবলি স্পষ্ট করা হয়েছে। এতে অংশ নেয় ইতালির স্বরাষ্ট্র, শ্রম, কৃষি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
নতুন ঘোষণার ফলে ইতালিতে বৈধভাবে কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্যও। প্রবাসী শ্রমবাজার বিশ্লেষকদের মতে, এবার “ডেক্রেতো ফ্লুসি” বাংলাদেশি কর্মীদের ইউরোপে প্রবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ তৈরি করেছে।
এফএস