রাজধানীর মোহাম্মদপুরের চন্দ্রিমা হাউজিংয়ে দেয়াল ভাঙার অভিযোগে আদাবর থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনোয়ার হাসান জীবন ওরফে লেদু হাসানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর আদাবর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। তবে মামলার বাদী মোহাম্মদ সোলায়মান দাবি করেছেন, তিনি স্বেচ্ছায় নয়, বরং চন্দ্রিমা মডেল হাউজিং কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই মামলা করেছেন।
মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, ‘চন্দ্রিমা হাউজিংয়ের ওই জায়গা নিয়ে আমার চাচা আনার হোসেনের সঙ্গে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছিল। চাচা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, সেই কারণে হাউজিংয়ের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক সারোয়ারের কাছে জমিটি বিক্রি করে দেন।’
তিনি আরও জানান, ‘৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর আমরা হাউজিং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা আমাদের দখল নিতে বলেন। তাদের অনুমতিতেই গত ১৬ সেপ্টেম্বর আমরা দেয়াল নির্মাণ শুরু করি। কিন্তু রাতের অন্ধকারে দেয়ালটি ভেঙে ফেলা হয়।’
সোলায়মানের দাবি, ‘হাউজিং কর্তৃপক্ষই আমাদের জানায়, এই ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছেন মনোয়ার হাসান জীবন। পরে বর্তমান এমডি মনির হোসেন ও প্রকৌশলী ইমরান আমাকে তাকে প্রধান আসামি করে মামলা দিতে বলেন। আমি তাদের নির্দেশেই মামলা করেছি। পরে জানতে পারি, জীবনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘হাউজিং কর্তৃপক্ষ আমাদের কোনো সিসিটিভি ফুটেজ দেখায়নি। তারা যেভাবে বলেছে, আমরা সেভাবেই মামলা করেছি। এখন বুঝতে পারছি, হয়তো ভুল করেছি।’
অভিযোগের বিষয়ে মনোয়ার হাসান জীবন ওরফে লেদু হাসান বলেন, 'আমি এই ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নই। রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। এ মামলার পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই।'
এদিকে সোলায়মানের এমন দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে চন্দ্রিমা মডেল টাউনের এমডি মো. মনির হোসেন বলেন, ‘বাদী ও তাঁর ভাই আমাদের কাছে এসে জায়গার বিষয়ে সহযোগিতা চান। আমরা বলেছিলাম, যেহেতু তাঁদের চাচা জমিটি বিক্রি করেছেন, আগে পারিবারিকভাবে সমাধান করুন। কিন্তু তাঁরা নিজেরাই দেয়াল তুলতে শুরু করেন এবং নিজেদের দাগ ছাড়াও অন্যের জমি ঘিরে ফেলেন।’
রাতের আঁধারে দেয়াল ভাঙার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রাতের অন্ধকারে দেয়াল ভাঙার ঘটনাটি কে ঘটিয়েছে, আমরা জানি না। তারা নিজেদের ইচ্ছায় মামলা করেছে, এখন আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইসলাম মল্লিক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো কংক্রিট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। হাউজিং থেকেও কোনো সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায়নি। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, অভিযোগের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ নেই। খুব দ্রুতই মামলার ফাইনাল রিপোর্ট আদালতে দাখিল করা হবে।’
আরডি