আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ঘোষিত প্রাথমিক প্রার্থী তালিকায় নাটোর-১ (লালপুর -বাগাতিপাড়া) আসনে মনোনীত প্রার্থী নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও প্রয়াত যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটলের কন্যা ব্যারিস্টার ফারজানা শারমিন পুতুল নেতাকর্মীদের শান্ত ও সহনশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার গৌরীপুরের পৈতৃক বাড়িতে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে আমাদের যে পথ চলা শুরু হয়েছিলো, সেই সব অঙ্গীকারকে পরিনতি দিতে আমাদের সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল, একটি পরিবার। আমাদের সম্মিলিত পথচলাই কেবল পৌঁছে দিতে পারে আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে। আমাদের দেশ, আমাদের মাতৃভূমি এক দীর্ঘ সময় ধরে স্বৈরাচারের যাতাকলে পিষ্ট হয়েছে। আমাদের একতাবদ্ধ চেষ্টা, পরিশ্রম আর দেশের প্রতি দায়বদ্ধতাই কেবল পারে আমাদের সন্তান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে। ধানের শীষ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের প্রতীক। ধানের শীষকে বিজয়ী করে তারপর হবে আমার আনন্দ মিছিল। এই মুহুর্তে দল এবং দেশের মানুষের আমার প্রতি আস্থার যথাযথ মর্যাদা রক্ষা করাই আমার একমাত্র দায়িত্ব বলে মনে করছি।”
এ সময় তিনি আরও বলেন, “ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল আমাকে সংসদীয় আসন ৫৮ (নাটোর -১ লালপুর বাগাতিপাড়া ) থেকে ধানের শীষের প্রার্থী মনোনীত করায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও স্থায়ী কমিটির সব নেতৃবৃন্দসহ দলের সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমাকে মনোনয়নের দেয়ার মাধ্যমে লালপুর–বাগাতিপাড়ার মানুষের আশা ও আকাঙ্ক্ষার পূর্ণতা পেয়েছে।”
ব্যারিস্টার পুতুল আরও বলেন, ‘বিএনপি যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন দেখছে, নারীর সমান অধিকার ও ক্ষমতায়নের যে অঙ্গীকার করেছে, আমাকে মনোনয়নের মাধ্যমে সেই পথের যাত্রা শুরু হল। এর জন্য আমাকে অনেক ত্যাগ ও পরিশ্রম করতে হয়েছে। দলের প্রতি ভালোবাসা, নিবেদন ও যোগ্যতা দিয়ে যে আস্থা অর্জন করেছি, তা আরও বেগবান হবে ইনশাআল্লাহ।’
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ছাড়াও অনেকগুলো দল রয়েছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপিসহ অন্য সব দল ও জনগণ যদি ভোটে অংশগ্রহণ করে, সরকার ও প্রশাসন মিলে যদি একটি উৎসবমুখর সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারে, তাহলে সেটিই হবে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। সেখানে নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারলো কি পারলো না সেটা বিবেচ্য বিষয় হবে না।’
এ সময় একই পরিবার থেকে বড় ভাই ডা. ইয়াসির আরশাদ রাজন ও তার নিজের মনোনয়ন চাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পারিবারিক ও রাজনৈতিক কৌশলের কারণে তারা একই সঙ্গে মাঠে রাজনীতি করেছেন। একই সঙ্গে মনোনয়ন চেয়েছেন। দল যাকে যোগ্য মনে করেছে, তাকে দিয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল পটল পরিবারের মধ্যে যেন মনোনয়ন নিশ্চিত করা যায়। সে উদ্দেশ্যে আমরা কাজ করেছি। আশা করছি দ্রুত বড় ভাইয়ের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবো।’
তার মনোনয়ন পাওয়ার পরে এলাকায় সহিংসতার বিষয় তিনি বলেন, ‘বিএনপি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। গত ১৭ বছরে বিএনপিসহ কোন রাজনৈতিক দল নির্বাচন করতে পারেনি। প্রতিটি আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য প্রার্থী রয়েছে। তারা সবাই যোগ্য এবং দলের ত্যাগী কর্মী। পছন্দের প্রার্থী মনোনয়ন না পাওয়া সমর্থকদের মধ্যে কিছুটা রাগ ও ক্ষোভ থেকে থাকতে পারে। তাদেরকে দুষ্কৃতিকারী বলা ঠিক হবে না। তবে কেউ যদি আমার ভাইয়ের নাম নিয়ে কোন অপপ্রচার করে থাকে তাহলে সেটা একেবারেই ঠিক নয়। আমাদের মধ্যে কোন বিভেদ নাই। অচিরেই সব সমর্থক ও নেতাকর্মীরা আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলে ধানের শীষের জন্য কাজ করবেন।’
পরে তিনি তার বাবা সাবেক যুব ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মরহুম ফজলুর রহমান পটল ও প্রয়াত অন্য স্থানীয় বিএনপি নেতাদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে তার নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন বলে জানান। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে তার পাশে থাকার আহ্বান জানান।
ইখা