শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে আবারও উত্তর আকাশে ভেসে উঠেছে বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা। টানা কয়েকদিনের মেঘলা আবহাওয়ার পর গত তিন দিন ধরে মেঘমুক্ত আকাশে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় অবস্থিত তিস্তা ব্যারেজ থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে এই পর্বতশৃঙ্গ।
গত দুদিন থেকে ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে দিগন্তজোড়া সাদা রূপালি চূড়া যেন নতুন দিনের সৌন্দর্যে এক অন্য রকম আবেশ যোগ করেছে। আকাশ পরিষ্কার থাকায় সকাল থেকেই তিস্তা ব্যারেজ ও পার্শ্ববর্তী সানিয়াজান নদী এলাকায় ভিড় করছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা।
উত্তরের সীমান্তবর্তী এই জেলায় কয়েকদিন ধরেই দূর আকাশে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মিলছে। বিনা পাসপোর্টে ভারত বা নেপালে না গিয়েই তিস্তা ব্যারেজ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত প্রকৃতিপ্রেমীরা। অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করছেন এবং ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছেন, যা দেখে অন্যরাও উৎসাহী হয়ে উঠছেন।
১০ কিলোমিটার দূর থেকে আসা দর্শনার্থী মেহেদী হাসান শুভ বলেন, ‘সকালে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পেয়েছি, মনে হয় যেন সাদা বরফে মোড়া কোনো স্বপ্নের পাহাড়। এমন দৃশ্য দেখতে পেয়ে আমরা আনন্দিত। আপনারাও তিস্তা বেড়াতে আসতে পারেন কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে।’
ভূগোলবিদদের মতে, কাঞ্চনজঙ্ঘা হিমালয়ের পূর্বাংশে নেপাল ও ভারতের সিকিম রাজ্যের সীমান্তে অবস্থিত। এর উচ্চতা ৮ হাজার ৫৮৬ মিটার (২৮ হাজার ১৬৯ ফুট), যা এভারেস্ট ও কে-টু’র পর বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। তিস্তা ব্যারেজ থেকে এই শৃঙ্গের দূরত্ব তুলনামূলক কম হওয়ায় প্রতি বছর শীতের শুরুতে আকাশ পরিষ্কার থাকলে প্রায়ই এর অপরূপ সৌন্দর্য ধরা দেয়।
প্রকৃতিপ্রেমী আরএম রিমন এই দৃশ্যকে কেন্দ্র করে পর্যটনের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কাঞ্চনজঙ্ঘার এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য শীতের অল্প সময়ের জন্য হলেও, তিস্তাপাড়ের সৌন্দর্যকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে। আমি মনে করছি, এই দৃশ্যকে কেন্দ্র করে তিস্তা ব্যারেজকে দ্রুতই একটি আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে।
আরডি