দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম অসংখ্য শহীদের আত্মত্যাগ এবং অদম্য সাহসের ফলস্বরূপ ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলা পুরোপুরি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়। ত্রিশালবাসীর কাছে এই দিনটি শুধু একটি তারিখ নয়, এটি গৌরবোজ্জ্বল বিজয় ও স্বাধীনতার মাইলফলক।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্রিশাল ছিল ১১ নম্বর সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত। ৮ ডিসেম্বর রাতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা সুসংগঠিত হয়ে ত্রিশাল থানা ঘাঁটিতে অবস্থান নেওয়া হানাদার বাহিনীর ওপর চূড়ান্ত আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন।মুক্তিযোদ্ধা এই ঐতিহাসিক সম্মুখযুদ্ধের নেতৃত্ব দেন মেজর আফসার বাহিনীর কমান্ডার আইয়ুব আলী ও আব্দুল বারী মাস্টার এবং ভালুকার মেজর আফসার বাহিনীর নাজিম উদ্দিন কমান্ডার।৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে শুরু হয় মরণপণ সম্মুখযুদ্ধ। রাতভর প্রচণ্ড গোলাগুলিতে
প্রকম্পিত হয়ে ওঠে ত্রিশাল শহর মুক্তিযোদ্ধাদের দুর্ধর্ষ লড়াইয়ের সামনে টিকতে পারেনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের স্থানীয় দোসর রাজাকাররা। তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়।অবশেষে ৯ ডিসেম্বর ভোররাতেই পাকিস্তানি দখলদার মুক্ত হয় ত্রিশাল।মুক্তির সংবাদে স্থানীয় জনতা বাঁধভাঙা আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে। বিজয়ের সেই মুহূর্তটি স্মরণীয় করে রাখতেে ৯ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে স্থানীয় নজরুল একাডেমি মাঠে হাজারো জনতা সমবেত হন।
সেদিন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জৈমত আলী মাস্টারের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। এই পতাকার মাধ্যমেই ত্রিশালকে হানাদারমুক্ত ঘোষণা করা হয়।এই ঐতিহাসিক মুহূর্তটি প্রতি বছর ত্রিশালবাসীকে বিজয়ের সেই সোনালী দিনের কথা প্রবলভাবে স্মরণ করিয়ে দেয়। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে ত্রিশালে নানা কর্মসূচি পালন করা হবে।
এসআর