এইমাত্র
  • হাদিকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হচ্ছে সোমবার
  • সোমবার হাদিকে থাইল্যান্ডে নিতে চায় তার পরিবার
  • আবারও রাজধানীতে বাসে আগুন
  • প্রধান উপদেষ্টাকে ফোন করে শোক জানালেন জাতিসংঘ মহাসচিব
  • সেই ফয়সালের সই করা বিপুল চেকসহ আটক ৩
  • সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে
  • কুড়িগ্রামের দুই সেনাসদস্য সুদানে শহিদ, ‘নীরব হওয়ার’ শেষ বার্তা শান্তর
  • বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে সাকিব-লিটনের পোস্ট
  • ছোট পুঁজি নিয়েও পাকিস্তানকে হেসে-খেলে হারাল ভারত
  • সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শামীমের বাড়িতে শোকের মাতম
  • আজ সোমবার, ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    শান্তিরক্ষী সবুজ মিয়ার বাড়ী গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে চলছে শোকের মাতম

    রবিউল ইসলাম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৫ পিএম
    রবিউল ইসলাম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৫ পিএম

    শান্তিরক্ষী সবুজ মিয়ার বাড়ী গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে চলছে শোকের মাতম

    রবিউল ইসলাম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৫ পিএম

    সুদানে জাতিসংঘের(ইউএন)শান্তিরক্ষা মিশনের ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর মধ্যে একজন লন্ড্রি কর্মচারী সবুজমিয়ার বাড়ী গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায়।

    ভাগ্য বদলের স্বপ্ন নিয়ে দেশের সীমানা পেরিয়ে আফ্রিকার দেশ সুদানে গিয়েছিলেন সেনাসদস্য সবুজ মিয়া (৩৫)। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর বাস্তবায়ন হলো না। সেনাবাহিনীর সঙ্গে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে সুদানে ড্রোন হামলায় শহীদ হয়েছেন গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার এই তরুণ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে লন্ড্রি কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।

    পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সবুজ মিয়া ২০১০ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে লন্ড্রি কর্মচারী হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করলেও পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর আশায় কখনো পিছপা হননি তিনি। সর্বশেষ গত ৭ নভেম্বর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অংশ হিসেবে সুদানে যান সবুজ।

    গতকাল শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে সেখানে দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান সবুজ মিয়াসহ ৬ সেনাসদস্য। রাতে তার মৃত্যুর খবর পৌঁছে গেলে মুহূর্তেই স্তব্ধ হয়ে যায় গ্রামের বাড়ী।

    সবুজ মিয়া গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মহাদিপুর ইউনিয়নের ছোট ভগনবানপুর গ্রামের পূর্বপাড়ার বাসিন্দা। তার বাবা মৃত হাবিদুল ইসলাম। দুই ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন পরিবারের প্রধান ভরসা। দেড় বছর আগে বিয়ে করেন সবুজ। আর্থিকভাবে অসচ্ছল পরিবারটির একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি।

    সরেজমিনে শহীদ সবুজের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চলছে শোকের মাতম। বাড়ীর আঙিনা ও আশপাশে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসীর ভিড়। কেউ নীরবে চোখ মুচছেন, কেউ আবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। উঠানে বসে থাকা মা সকিনা বেগম বারবার ছেলের নাম ধরে ডাকছেন। ভেতরের ঘরে স্ত্রী নুপুর বেগম নির্বাক হয়ে বসে আছেন, হঠাৎ হঠাৎ কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। পুরো বাড়িজুড়ে ভারি হয়ে উঠেছে শোকের পরিবেশ।

    ছেলের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ মা সকিনা বেগম বলেন, ও বলেছিল, মা আর একটু কষ্ট করো। আমি ফিরে এলে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু আল্লাহ আমার ছেলেটাকে ফিরিয়ে দিল না।

    স্বামী হারানোর শোকে ভেঙে পড়া স্ত্রী নুপুর বেগম বলেন, আমাদের সংসারটা নতুন ছিল। এত তাড়াতাড়ি সব শেষ হয়ে যাবে ভাবিনি। আমার জীবনের সব স্বপ্ন ওর সাথেই শেষ হয়ে গেল।

    সবুজ মিয়ার মৃত্যুতে পুরো ছোট ভগনবানপুর গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এলাকাবাসী জানান, তিনি ছিলেন শান্ত স্বভাবের, পরিশ্রমী ও ভদ্র একজন মানুষ। পরিবারের সুখের জন্যই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদেশে কাজ করতেন।

    এলাকাবাসী দ্রুত নিহত সবুজ মিয়ার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি শোকাহত পরিবারের পাশে রাষ্ট্রীয় সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।

    এনআই

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…