পশ্চিমবঙ্গে কোনোভাবেই এনআরসি চালু হবে না জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ভারতীয় গণতন্ত্রের ভীত ধ্বংস করেছে ডাবল ইঞ্জিন সরকার। ২০২৯-এর আগেই মুখ থুবড়ে পড়বে মোদি সরকার।
বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলা ভাষাভাষীদের ওপর অত্যাচার, বাঙালি বিদ্বেষ ও বিভাজনের রাজনীতিকে হাতিয়ার করে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের রূপরেখা সাজিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই হিসেবে চলছে তার রাজনৈতিক কর্মসূচি। সেই রাজনৈতিক কর্মসূচি অনুযায়ী বাঙালি বিদ্বেষ ইস্যুতে সোমবার বীরভূম জেলার বোলপুর থেকে ‘ভাষা আন্দোলন’ শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। আর সেখানেই এমন বক্তব্য রাখেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমি কোনো ভাষার বিরোধী নই। বৈচিত্র্যের মধ্যেই ঐক্য—এই আমাদের গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি।
বিজেপির বিরুদ্ধে আঙুল তুলে মমতা বলেন, ডাবল ইঞ্জিন সরকার দেশের ভিত ধ্বংস করছে। বিরাট গেম প্ল্যান চলছে। কিন্তু বাংলার মানুষ মাথা নত করবে না। আমরা লড়তে জানি, লড়াই করে বাঁচতে জানি। দরকার হলে জীবন দেব, আমার ভাষা কেড়ে নিতে দেব না। এই সরকার ২০২৯ পর্যন্ত থাকবে না।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দিল্লি থেকে গুজরাট, হরিয়ানা, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র—বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালিদের হেনস্থা করা হচ্ছে। আমি কখনও কোনো হিন্দিভাষীকে বাংলা ছাড়তে বলিনি। তাহলে বাংলা বলায় বাঙালিদের কেন বারবার অপমানিত হতে হবে?
বাংলা ভাষাকে নিরন্তর অবমাননা করা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে মমতা বলেন, বাংলা বিশ্বে প্রায় ৩০ কোটি মানুষের ভাষা। তবু দিল্লিতে, হরিয়ানায়, অসমে গুজরাটে, এমনকি ওড়িশাতেও বাংলা বললেই হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে। দিল্লিতেও এমন ঘটনা ঘটেছে গতকাল। একের পর এক বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিকে বাংলা ভাষা বলায় হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ওরা বলছে বাংলায় দেড় কোটি রোহিঙ্গা রয়েছে, যাদের নাম বাদ যাবে ভোটার তালিকা থেকে। এত রোহিঙ্গা কোথা থেকে এল? গুজরাটে বসে বাংলার ভোটার তালিকা তৈরি হচ্ছে! আমি বেঁচে থাকতে এনআরসি করতে দেব না। দরকার পড়লে জীবন দেব, কিন্তু ভাষা কেড়ে নিতে দেব না।
বাংলাদেশে বাঙালি পুশব্যাকের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যাকে তাকে বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে। বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও মানুষকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হচ্ছে। এটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না।
মহারাষ্ট্রে সংখ্যালঘুদের খুন এবং দলিতদের ওপর অত্যাচারের প্রসঙ্গ তুলে মমতা বলেন, এই ভারতকে আমি চিনি না। এ কেমন দেশ গড়ছে ওরা? সৌদি আরবে গেলে, মালদ্বীপে গেলে আপনি তো হিন্দু না মুসলমান দেখেন না? তাহলে এখানে এত বিভাজন কেন?
এবি