বরগুনার তালতলী উপজেলায় এক যুবক নেশার টাকা না পেয়ে বাবার উপর চড়াও হন। এসময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে বাবার হাতে থাকা ছুরির আঘাতে ওই যুবক খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেল ৫ টার দিকে উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের ইদুপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি সন্ধ্যায় নিশ্চিত করেছেন তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশাদুর রহমান।
নিহত মো. সফিক (২৭) পাশ্ববর্তী উপজেলার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা এলাকার হারুন হাওলাদারের ছেলে। তাঁরা পরিবারসহ জীবিকার তাগিদে ৫ বছর ধরে ইদুপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসা নিয়ে বসবাস করতেন। এ ঘটনার পর থেকে হারুন হাওলাদার পালাতক রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মো. সফিক দীর্ঘদিন ধরেই মাদকাসক্ত ছিলেন। তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে একাধিকবার রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে পাঠানো হলেও তিনি সুস্থ হননি। সর্বশেষ গত ৭ অক্টোবর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে ১০ ডিসেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পান সফিক। মুক্তির পর বাড়িতে ফিরে তিনি প্রায়ই বাবার কাছে মাদকের টাকা দাবি করতেন। ঘটনার দিন দুপুরে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বাবা-ছেলের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়।
এসময় বাবা হারুনের হাতে থাকা ছুরির দিয়ে সফিকের পিঠে আঘাত করেন। এসময় গুরুতর আহত অবস্থায় সফিককে তার বাবা নিজেই তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর খবর পেয়ে হারুন হাওলাদার মূহূর্তেই পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে নিহতের মা রাসেদা বেগম বলেন, 'আমার ছেলে মাদকাসক্ত ছিল। বহুবার রিহ্যাবে দিয়েছি, এমনকি জেলেও গেছে। কিন্তু ছাড়া পাওয়ার পরও সে ঠিক হয়নি। আজ বাবা-ছেলের ঝগড়ার একপর্যায়ে এই ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশাদুর রহমান বলেন, 'প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, মাদকের টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে বাবার সঙ্গে ছেলের বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে বাবার ছুরিকাঘাতে সফিক হাওলাদার নিহত হয়েছেন। অভিযুক্ত বাবা নিজেই তার ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তবে ছেলের মৃত্যুর পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। এখন পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।'
এনআই