এইমাত্র
  • দেশের কৃষক বাঁচার জন্য যা প্রয়োজন সেটাই করবে সরকার: কৃষি মন্ত্রী
  • রাজধানীর শিশু হাসপাতালে আগুন
  • প্রথম পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাশ মারা গেছেন
  • শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটারের থেকে প্রশাসন বেশি: হাসান জাহাঙ্গীর
  • প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে ৬৩৮ পদে নিয়োগ
  • আশঙ্কাই সত্যি হলো, ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল
  • ভারতে লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু
  • সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয়ে ঘুষ নিতে গিয়ে ধরা
  • বন্ধুর স্ত্রীকে শাড়ি উপহার দিয়ে সমালোচনার মুখে ব্যারিস্টার সুমন
  • স্বর্ণের দাম সব রেকর্ড ভাঙল
  • আজ শুক্রবার, ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

    ভোমরা স্থলবন্দরে দফায় দফায় হয়রানীর শিকার বৈধ পাসপোর্ট যাত্রীরা

    সময়েরকণ্ঠস্বর প্রকাশ: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:১১ পিএম
    সময়েরকণ্ঠস্বর প্রকাশ: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:১১ পিএম

    ভোমরা স্থলবন্দরে দফায় দফায় হয়রানীর শিকার বৈধ পাসপোর্ট যাত্রীরা

    সময়েরকণ্ঠস্বর প্রকাশ: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:১১ পিএম

    স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, সময়ের কণ্ঠস্বর: সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরে বৈধ পাসপোর্ট যাত্রীদের দফায় দফায় হয়রানির অভিযোগ উঠেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ(বিজিবি) সদস্যদের বিরুদ্ধে। ফলে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে বৈধ পাসপোর্ট যাত্রীদের যাতায়াত হ্রাস পেয়েছে।

    গত ডিসেম্বরে ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে যেখানে হাজার হাজার দেশি-বিদেশি পাসপোর্টযাত্রীদের বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত করেছে সেখানে জানুয়ারীতে নেমে গেছে তলানীতে। বৈধ পাসপোর্ট যাত্রীদের অভিযোগ, ?বৈধ পথে আসলেও পথে পথে বিভিন্ন জায়গায় বিজিবি তাদের তল্লাশি করছে। ভারত থেকে সঙ্গে আনা পণ্য আটক দেখিয়ে রেখে দেয়া হচ্ছে। এসব পণ্যের কোনো কাগজপত্র বা সিজার লিস্ট দেয়া হচ্ছে না। প্রতিবাদ করলে দেওয়া হচ্ছে মামলা দিয়ে চালান দেয়ার হুমকি।?

    সরেজমিনে দেখা যায়, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ব্রীজ পার হতে না হতেই ভারত থেকে আগত বৈধ পাসপোর্ট যাত্রীদের ব্যাগসহ যাবতীয় মালামাল তল্লাসী করছে বিজিবি। এরপর ইমিগ্রেশনে পাসপোর্ট চেকিং শেষে বের হলেই কোন কোন পাসপোর্ট যাত্রীদের ডেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আইসিপি ঘরে। সেখানে ব্যাগ থেকে পণ্য নামিয়ে ফের করা হচ্ছে তল্লাসী। এরপর সেখান থেকে ছেড়ে দেওয়ার পর পাসপোর্ট যাত্রীরা যাচ্ছেন কাস্টমসে। সেখানে মালামাল চেকিং শেষ করে বাইরে আসতে না আসতেই আবার পাসপোর্ট যাত্রীদের ডেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিজিবির আইসিপি ঘরে। ব্যাগ থেকে পণ্য ইচ্ছামতো মেঝেতে নামিয়ে পুণরায় তল্লাসী চালানো হচ্ছে। আর একটু বেশি মালামাল পেলেই ঠনকু অজুহাতে সেগুলো রেখে দেওয়া হচ্ছে। একজন পাসপোর্ট যাত্রীর কাছ থেকে কিকি পণ্য নেওয়া হলো তার কোন সিজার লিস্টও দেওয়া হচ্ছেনা। এরপর সেখান থেকে ছেড়ে দিলে ভোমরা স্থলবন্দরের শেষ সীমানার বাঁশকলে এবং আলীপুর বিজিবি চেকপোস্টে আবারো চেক করা হচ্ছে।

    ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগণার প্রফুল্ল নগর এলাকার বাসিন্দা পিন্টু বিশ্বাস(পাসপোর্ট নং আর০৬৯১০৪৩) বলেন, ?আমি ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে দ্বিতীয় বার আসলাম। আত্মীয়দের দেওয়ার জন্য আমি সাথে করে একটি কম্বল, কিছু ইমিটেশন পণ্য নিয়ে এসেছিলাম। যেগুলোর আনুমানিক মূল্য ৭ হাজার টাকা। ইমিগ্রেশন, কাস্টমস কম্পিলিট করার পর রাস্তায় আসামাত্র বিজিবি ডেকে নিয়ে আমার সকল পণ্য রেখে দিয়েছে। আমি অনেক রিকোয়েস্ট করলাম তবুও আমার কিছুই ফেরত দেওয়া হয়নি। তারা বলেছেন, ?এগুলো ট্যাক্স হয়। আপনি ট্যাক্স দেননি। আমাদের মালামাল যদি এভাবে রেখে দেয় তাহলে আমরা আসবো কি করে? আমাদের যেন এরূপ হয়রানী করা না হয় সে ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আমরা দাবী জানাচ্ছি।?

    ভারতের কৃষ্ণনগর গোয়ালদাহ এলাকার সুজিত বিশ্বাস (পাসপোর্ট নং ভি১২৩৩২৪৮) বলেন, ?আমি এই প্রথম বাংলাদেশে এসেছি। সাথে করে আমি ৫টি শাড়ী নিয়ে এসেছিলাম কিন্তু বিজিবি আমার সেই শাড়ী ৫ টা নিয়ে নিয়েছে। আমি অনেক রিকোয়েস্ট করেছি। বলেছি স্যার আমিতো ব্যবসা করিনা। এগুলো আত্মীয়-স্বজনদের জন্য এনেছি। তবুও তারা মানেনি। কাস্টমস সহ সকল জায়গা কম্পিলিট করার পরও যদি বিজিবি আমাদের জিনিস এভাবে নিয়ে নেয় তবে এখানে কাসটমস থাকার দরকার কি? আমরা যে পরিমাণ হয়রানির শিকার হচ্ছি তাতে ভোমরা বর্ডার দিয়ে আর আমরা আসবোনা এবং কেউ যাতে না আসে সেজন্য নিষেধ করবো।?

    খুলনা এলাকার পাসপোর্টযাত্রী ইয়াছিন বলেন, কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দারা ব্যাগ তল্লাশি করে ছেড়ে দিয়েছে। তারপর গেট পার হলে রাস্তার উপর থেকে বিজিবি ডেকে নিয়ে ওই একই ব্যাগ খুলে তল্লাশি করেছে। তারপর শুনছি সামনে আরো কয়েক জায়গায় বিজিবি তল্লাসী করবে। এটা কি কোনো সভ্য সমাজের কাজ হতে পারে?

    ভোমরা স্থলবন্দরের একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পাসপোর্টযাত্রীর কাছ থেকে বিজিবি যেসব পণ্য রেখে দিচ্ছে তার কোনো কাগজপত্র দিচ্ছে না। এই পণ্যগুলো কোথায় কীভাবে যাচ্ছে বা কাস্টমসে সঠিকভাবে জমা হচ্ছে কি-না তার কোনো সঠিক প্রমাণাদি থাকছে না। ওইসব পণ্যের মালিক থাকার পরও মালিকবিহীন দেখিয়ে তারা সিজ করছে। এর আগে বিজিবি পাসপোর্টযাত্রীদের কাছ থেকে যেসব পণ্য আটক করতো তাদের নাম ও পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করে কাস্টমসে জমা দিত এবং যাত্রীদের এক কপি কাগজও দিয়ে দিত। ওই কাগজ নিয়ে যাত্রী কাস্টমস থেকে সরকারি শুল্ক পরিশোধ করে পণ্য চালান ছাড় দিতে পারতেন। কিন্তু সিজার লিস্ট না দেওয়ার ফলে যাত্রীরা ওই পণ্য সরকারি শুল্ক দিয়ে ছাড়িয়ে নিতেও পারছেন না। আটক সব পণ্য কাস্টমস গোডাউনে জমা করা হয় কি না তা নিয়েওতো প্রশ্ন আছে।

    ভোমরা বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার হিসেবে ওহিদুল ইসলাম আসার পর থেকে সরকারি ভ্রমণ কর দিয়ে বৈধপথে ভারত থেকে ব্যবহারের কিছু জিনিসপত্র আনার পরও বিজিবির হাতে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন পাসপোর্ট যাত্রীরা।

    কাস্টমসের একটি সূত্র জানায়, বন্ডেড এলাকার মধ্যে বৈধ পাসপোর্টযাত্রীদের কোনো পণ্য দেখার নিয়ম না থাকলেও তারা এটা দেখছে আমাদের করার কিছু নেই। এনিয়ে বার বার বৈঠক হওয়া স্বত্তেও বিজিবি তা মানছে না।

    ভোমরা ইমিগ্রেশনের ওসি মাজরিয়া হোসাইন বলেন, ?গত ডিসেম্বরের চেয়ে জানুয়ারী মাসে পাসপোর্ট যাত্রীদের যাতায়াত কমে গেছে। তবে কি কারণে কমে গেছে সেটি বলতে পারবোনা।?

    ভোমরা বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার অহিদুল ইসলাম বলেন, ?বাংলাদেশের কাস্টমস আইনে ইন্ডিয়ান নাগরিকের জন্য ১০ টাকারও লাগেজ সুবিধা নেই। এছাড়া ইন্ডিয়ান নাগরিকের কাছ থেকে যে পণ্য আমরা সিজ করি তার কোন সিজার লিস্ট আমরা দেইনা। আমরা সরকারের নিয়ম অনুযায়ী কাজ করি। বিজিবি আইন, পুলিশ আইন, মাদক দ্রব্য আইন শেখার পর এই ভোমরায় এসে আমাকে কাস্টমস আইন শেখা লেগেছে। এজন্য আমি সকল বিষয় জানি।?

    বৈধ পথে আসা পাসপোর্ট যাত্রীদের হয়রানী করা অমানবিক উল্লেখ করে ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ খান বলেন, ?যাদের সন্দেহ হয় তাদের বিজিবি চেক করুক। ১০০ জনের মধ্যেতো আর ১০০ জনইতো আর খারাপ না। ইচ্ছামতো সকলকে চেক করা বন্ধ হওয়া উচিৎ। আমরা বিভিন্ন মিটিং এই বিষয়ে কথা বলেছি কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি।?

    এ ব্যাপারে জানার জন্য সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটলিয়ান অধিনায়কের মোবাইল নম্বরে একাধিক বার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

    ট্যাগ :

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…