এইমাত্র
  • ফুলেল শ্রদ্ধায় জাতীয় পতাকার রূপকার শিব নারায়ণের শেষ বিদায়
  • গাইবান্ধায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • ভালোবাসার মানুষকে জীবনসঙ্গী পেতে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চিঠি
  • অর্থ মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, নেবে ৪৮ জন
  • পাবনায় হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু
  • উপজেলা পরিষদ নিবার্চন রাজনৈতিক নিবার্চন নয়: ইসি আলমগীর
  • খুলনায় ১২ স্বর্ণের বারসহ আটক ১
  • সোনার দাম কমেছে, আজ থেকেই কার্যকর
  • টাঙ্গাইলে টিচার্স ফাউন্ডেশনের সনদ ও বৃত্তি প্রদান
  • ইবিতে চোর সন্দেহে ২ জনকে পুলিশে সোপর্দ
  • আজ শনিবার, ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২০ এপ্রিল, ২০২৪
    বিনোদন

    অভিনয়ে শাকিব খানের অপ্রতিরোধ্য দুই যুগ

    রবিউল ইসলাম রুবেল প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৩, ০৬:১৪ পিএম
    রবিউল ইসলাম রুবেল প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৩, ০৬:১৪ পিএম

    অভিনয়ে শাকিব খানের অপ্রতিরোধ্য দুই যুগ

    রবিউল ইসলাম রুবেল প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৩, ০৬:১৪ পিএম

    শাকিব খান দেশীয় চলচ্চিত্রের সেরা নায়ক। ১৯৯৯ সালে অনন্ত ভালবাসা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু হয়। দেশের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা। গণমাধ্যমে তিনি "কিং খান" ও "ঢালিউড কিং" হিসাবে সম্বোধিত হন। দুই যুগের কর্মজীবনে একাধিক পুরস্কার অর্জন করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে চারটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

    বড় হয়ে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে চাওয়া শাকিব আজ দেশের শীর্ষ অভিনেতা। এ প্রসঙ্গে শাকিব খান বলেন, 'ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হব। কারণ আমি সাইন্সের (বিজ্ঞানের) ছাত্র ছিলাম। সবসময় বুকে লালন করতাম ডাক্তার হয়ে দেশের মানুষের সেবা করব। এর বাইরে যে অপশনটি আমার মধ্যে কাজ করত তা হলো ইঞ্জিনিয়ার (প্রকৌশলী) হওয়া। খুব পছন্দ ছিল এই পেশাটিও। কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করার পর হঠাৎ করেই যেন ছোটবেলার স্বপ্নগুলো হারিয়ে যেতে থাকল।'

    গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদীতে জন্ম নেয়া শাকিব খানের বাবা একজন আব্দুর রব ছিলেন একজন সরকারি কর্মচারী এবং মাতা নূরজাহান একজন গৃহিণী। বাবার চাকরির সুবাদে তার শৈশব কৈশোর থেকে বেড়ে ওঠা নারায়ণগঞ্জ জেলায়। মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র অনন্ত ভালবাসা হলেও 'সবাইতো সুখী হতে চায়' শিরোনামের সিনেমা দিয়েই প্রথম ক্যামেরার সামনে দাড়ান তিনি।

    'সবাইতো সুখী হতে চায়' শিরোনামের সিনেমায় ঢালিউড কিং খানের বিপরীতে ছিলেন নবাগতা কারিশমা শেখ। দেশীয় এই সুপারস্টার অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র 'অনন্ত ভালবাসা' মুক্তি পায় ঠিক আজকের দিনে ১৯৯৯ সালের ২৮ মে। চলচ্চিত্রটিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন আরেক নায়িকা মৌসুমীর ছোট বোন ইরিন জামান। 'অনন্ত ভালোবাসা' ব্যবসায়ীক ভাবে খুব একটা সফল না হলেও নায়ক হিসেবে শাকিব সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন। সে সময়ের শীর্ষ অভিনেত্রী শাবনূরের বিপরীতে অভিনয় জীবনের দ্বিতীয় বছরেই কাজ করার সুযোগ পান তিনি।

    ঢালিউডের এই সুপারস্টারের অভিনয় জীবনের দুই যুগ পূর্ণ হলো আজ। অনন্ত ভালবাসা'র মশাল থেকে লিডার:আমিই বাংলাদেশের নাফিস হয়ে দর্শক মনে নিজের শক্ত অবস্থান আজও ধরে রেখেছেন তিনি। সিনেমা ইন্ডাষ্ট্রিতে পা দিয়েই একের পর এক হিট, সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন। নিজেকে নিয়ে গেছেন সাফল্যের সর্বোচ্চ চূড়ায়। অভিনয় জীবনে তাঁর শ্রেষ্ঠ দিনেও 'প্রিয়তমা' সিনেমার শুটিংয়ে ব্যস্ত তিনি।


    দুই যুগের পথচলা নিয়ে শাকিব খান বলেন, আজ যখন চলচ্চিত্রে আমার ২৪ বছরে হলো সেদিনও আমি শুটিং করছি 'প্রিয়তমা' সিনেমার। এরচেয়ে বড় পাওয়া আর কী থাকতে পারে একজন অভিনেতার জীবনে। চলচ্চিত্রের মানুষ হিসেবে অবশ্যই আনন্দিত। চলচ্চিত্রের প্রতিটি মানুষ, আমার দর্শক, ভক্ত, সাংবাদিক সবার কাছে অনেক কৃতজ্ঞতা। তাদের সবার জন্য আজকের আমি। আসলে মানুষের ভালোবাসার ওপর আর কিছু নাই। পেছন দিকে তাকিয়ে অনেককিছু দেখতে পাই। কিন্তু পেছনের দিনগুলো মনে রেখে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। এই যে আজও শুটিং করছি ব্যস্ত রয়েছি সিনেমার জন্য।

    ঢাকাই চলচ্চিত্রে এত দিন রাজ করা নায়ক আগেও দেখা মেলে নি। সফলতার কোনো মূলমন্ত্র নেই এই নায়কের কাছে। তিনি বলেন, 'একজন হিরোর সাফল্যের মূলমন্ত্র কিন্তু দর্শকদের ভালোবাসা। নায়ক যদি দর্শকদের চাওয়া-পাওয়ার মূল্য দেয়, তাহলে দর্শকদের কাছে সে গ্রহণযোগ্যতা পায়। সাফল্যও আসে।'

    ব্যর্থতার পরে আসে সফলতা। ধৈর্য ধরে সময়ের অপেক্ষা আর কঠোর পরিশ্রমই একজন মানুষকে সফলতার চূড়ান্তপর্যায়ে নিয়ে যায়। তবে কাজ করে যেতে হয় একাগ্রচিত্তে। শাকিব শুধু মন দিয়ে তাই করে গেছেন। পথচলার শুরুতে তিনি ভাবেনও নি তিনি হবেন ঢালিউড 'কিং'। পথটা ছিল কন্টকাকীর্ণ। থেমে যাননি তবুও। নারায়ণগঞ্জ থেকে এফডিসি, এফডিসি থেকে কাকরাইল, পরিচালকদের দুয়ারে দুয়ারে হানা- সবই করেছেন। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ তিনি রাজ করছেন এ অঙ্গন। 'অনন্ত ভালোবাসা' ছবির রোগাটে ছেলেটাই বাংলা চলচ্চিত্রে রাজ করবে এমনটা ভাববার অবকাশ ছিলনা। অথচ আজ এই নায়কের সাফল্য ও দর্শকপ্রিয়তায় তার ধারের কাছেও কোনো নায়ককে পাওয়া যাবে না।

    ক্যারিয়ারের এত দিনেও প্রযোজকদের লগ্নির টাকা শুধু শাকিবের সিনেমা দিয়ে ফেরত আনা সম্ভব এই নিশ্চয়তা দেশের সকল নির্মাতা এবং প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ভাল করেই বুঝে গেছে। তাই তার সিডিউলের জন্য অপেক্ষা করেন বছরের পর বছর।

    ২০০৭-০৮ সালে শাকিবের ২৯টি সিনেমা মুক্তি পায়। এই তালিকায় রয়েছে, ডাক্তার বাড়ি,কথা দাও সাথী হবে,আমার প্রাণের স্বামী,মা আমার স্বর্গ, তুই যদি আমার হইতি রে, জমজ, এক বুক জ্বালা, স্বামীর সংসার, কপাল আলী, দানব সন্তান, কাবিননামা, কঠিন প্রেম, তোমার জন্য মরতে পারি, সমাধি, যদি বউ সাজো গো, আমাদের ছোট সাহেব, সন্তান আমার অহংকার, তুমি স্বপ্ন তুমি সাধনা, আমার জান আমার প্রাণ, মনে প্রাণে আছো তুমি, বিয়ের প্রস্তাব, প্রিয়া আমার প্রিয়া, রাজধানীর রাজা, টিপ টিপ বৃষ্টি, ভালবাসার দুশমন, ১ টাকার বউ, তোমাকে বউ বানাবো, হৃদয় আমার নাম, তুমি আমার প্রেম। ২০০৯ সালে দুই ঈদে তার ৯টি সিনেমা মুক্তি পায়। যা দেশের নায়কদের ইতিহাসে বিরল।

    আজ ক্যারিয়ারের বিশেষ এই মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে ভক্ত-দর্শক-শুভাকাঙ্ক্ষীদের শুভেচ্ছা, ভালোবাসায় ভাসছেন ঢালিউড কিং। এ পর্যন্ত প্রায় ২৪৭টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন শাকিব খান। সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরে মুক্তি প্রাপ্ত সিনেমা 'লিডার: আমিই বাংলাদেশ' রয়েছে হিটের তালিকায়। মশাল থেকে নাফিস সব চরিত্রেই নিজেকে ভিন্ন রূপে উপস্থাপন করার চেষ্টা ছিল চোখে পড়ার মতো। যেটা একজন নায়কের ক্যারিয়ারের সেরা পালক বলা যায়। যে চেষ্টায় তিনি আজ সফল। নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙ্গেছেন নিজেই গড়েছেন।

    ক্যারিয়ারে যেমন রয়েছে তার সফলতার গল্প তেমনি রয়েছে সমালোচনার গল্প। অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ভক্তদের অফুরন্ত ভালবাসার গল্পে বিগত ১০ বছরে বেশ সমালোচিতও হয়েছেন ঢালিউড নবাব। কখনো প্রেম,বিয়ে বা ডিভোর্স আবার কখনো মানহানি মামলা, সন্তান নিয়ে থানা-পুলিশ, নির্বাচনে সমর্থিত প্যানেলের পরাজয় বা বয়কটের ডাক ছিল ইত্যাদি ছিল সমালোচনার বিষয়। তবে সব ছাপিয়ে তিনি সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিকে একাই নিজের ঘাড়ে টেনে এগিয়ে চলেছেন।

    শাকিবের ধ্যানে জ্ঞানে শুধু সিনেমা। এসব আলোচনা সমালোচনা ছাপিয়ে নির্বিবাদে ডুব দিতে হবে লাইট-অ্যাকশন-ক্যামেরার জগতে এই প্রত্যাশা তার ভক্ত শুভাকাঙ্ক্ষীদের।

    আরআইআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…