প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান মার্কিন ভিসানীতি বলেছেন,'যুক্তরাষ্ট্র ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করে খুব ভালো করেছে। তারা বলেছে, যারা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করবে, তাদের বিধিনিষেধ দেবে। সরকার বলেছে, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। বাধা দিতে চাই না।'
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন আরবান অ্যান্ড রিজিওনাল প্ল্যানিং’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কিছু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দলের সদস্য ও রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর গতকাল শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় বাধাদানকারী ব্যক্তিদের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করার ঘোষণা দেওয়ার পর ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস এ তথ্য জানায়।
যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা বিধিনিষেধ সরকার কীভাবে দেখছে- এমন প্রশ্নের জবাবে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করে খুব ভালো করেছে। তারা বলেছে, যারা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করবে, তাদের বিধিনিষেধ দেবে। সরকার বলেছে, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। বাধা দিতে চাই না।’
সালমান এফ রহমান আরও বলেন, ‘প্রধান বিরোধী দল বলছে, তারা নির্বাচন হতে দেবে না। তার মানে কীভাবে হতে দেবে না? একটাই পথ- ভায়োলেন্স (সহিংসতা)। ভিসা বিধিনিষেধ জারি হয়েছে যারা নির্বাচনে বাধা দেবে তাদের জন্য। বিধিনিষেধের তালিকায় তো অপজিশনের (বিরোধী দল) নামও আছে।’
এই ভিসা বিধিনিষেধ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সালমান এফ রহমান বলেন, বাণিজ্যের সঙ্গে এই ভিসা বিধিনিষেধের কোনো সম্পর্ক নেই। যুক্তরাষ্ট্রের বাজার বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে কোনো বিশেষ সুবিধা দেয়নি। সাড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ঢুকতে হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), কানাডা ও যুক্তরাজ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে, যেটা যুক্তরাষ্ট্র দেয়নি।
ইইউ যদি পর্যবেক্ষক না পাঠায়, তাহলে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘মোটেও না। নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, আপনাদের এমন বক্তব্যের সঙ্গে আমি একমত নই। পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না, সেটা তো তাদের ব্যাপার। আমার ইলেকশন আমি সংবিধান অনুযায়ী করব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যে কথাটা বারবার বলেছি, আমাদের ইলেকশন কমিশন শতভাগ স্বাধীন ও নিরপেক্ষ। এর আগে নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে ছিল। শেখ হাসিনা সেটা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনস্থ থেকে সরিয়ে স্বাধীন একটি নির্বাচন কমিশনের রূপ দিয়েছেন। আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বক্স করেছি।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতামতের সঙ্গে একমত জানিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘তারা বলেছেন তারা স্বচ্ছ নির্বাচন চান। আমরাও বলেছি আমরা স্বচ্ছ নির্বাচন করব। এখন তাদের পর্যবেক্ষক আমাদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আসল কী আসল না, সেটা তাদের ব্যাপার। এতে আমাদের নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত কোনো প্রভাব পড়বে না।’