পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করল ভারত- এমন খবর গণমাধ্যমে আসতে না আসতেই দেশের বাজারে আবারও বেড়েছে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম। ফের অস্থির হচ্ছে পেঁয়াজের বাজার।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার খবর প্রকাশ করে ভারতের অর্থ ও বাণিজ্য বিষয়ক অনলাইন পোর্টাল মানি কন্ট্রোল। তবে এই সিদ্ধান্ত আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এক লাফে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।
এদিন সকালে রাজধানীর কাওরান বাজার ও শ্যামবাজারে পাইকারিতে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ মানভেদে ৯৮-১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর পাবনার পেঁয়াজ ১৩০-১৪০ টাকা এবং ফরিদপুরের পেঁয়াজ ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার খবর পাওয়ার পর ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ রেখেছেন।
তারা বলছেন, হঠাৎ করে দেশের বাজারে পেঁয়াজের সংকট দেখা দিয়েছে। ভারতের বাজারে পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার খবরে আমদানিকারকরাও পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে বাজারে পেঁয়াজের সংকট দেখা দিলে পণ্যটির দাম বেড়েছে।
আজ সন্ধার দিকে রাজধানীর কাওরানবাজারের পাইকারিতে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ মানভেদে ১৪০-১৫০ টাকা, পাবনার পেঁয়াজ ১৮০-২০০ টাকা এবং ফরিদপুরের পেঁয়াজ ১৬০-১৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায় ব্যবসায়ীদের। আবার অনেক পাইকারি ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ করে রাখেন।
কাওরান বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বাশার আহমেদ জানান, সকালে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ ৯৮-১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এবং দেশি পেঁয়াজ ১৩০-১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু ভারতীয় পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরে শ্যামবাজারেই প্রতি কেজি পেঁয়াজে ১৫-২০ টাকা বেড়ে যায়।
এদিকে শ্যাম বাজারের ব্যাবসায়ীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, হঠাৎ করে আমদানিকারকরা পেঁয়াজ সরবরাহ বন্ধ রেখেছে৷ ফলে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজের ২০ টাকা দাম বেড়ে গেছে।
এ বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, এই মুহূর্তে দেশের পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। যতবার ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে, দেশে ঠিক ততবার অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে দাম বাড়িয়েছে। এবারও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, দেশে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ও আমদানি পর্যাপ্ত পরিমাণে হয়েছে। পাশাপাশি নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করেছে। তাই তদারকির মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা না হয় অসাধু চক্র ফের ভোক্তার পকেট কাটবে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দেওয়া এক আদেশে, ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারত। মূলত দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে ভারত সরকার আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করার এ পদক্ষেপ নেয়।
এক বিজ্ঞপ্তিতে ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) জানায়, পেঁয়াজের রপ্তানি নীতি ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে, তবে তা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর অনুরোধের পর কেন্দ্রীয় সরকার থেকে দেওয়া প্রদত্ত অনুমতির ভিত্তিতে।