নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল হোসেন চৌধুরীর নানা অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা।
এ সময় ছাত্র-ছাত্রীরা কলেজের নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির বিষয় তুলে ধরে জানায়, কলেজের কম্পিউটার ল্যাব, সাইন্স ল্যাব ও লাইব্রেরি বছর ধরে তালা লাগানো। কম্পিউটার শিক্ষকরা বাসায় নিয়ে গেছেন। কলেজের সরকারি বরাদ্দের সিংহভাগ কোন কাজ না করেই আত্মসাৎ করেন অধ্যক্ষ।
রবিবার(২৫ ফেব্রুয়ারি)সকাল ৯টা থেকে কলেজের কয়েকশ শিক্ষার্থী মিলে পাঁচ ঘণ্টা ব্যাপি কলেজ চত্তরে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি ও মানববন্ধন করে।
তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে দ্বাদশ শ্রেণির রবিবারে নির্বাচনী পরীক্ষা বন্ধ রাখেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এতে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীর পরীক্ষা ব্যাহত হয়েছে জানা যায়।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিজয় কুমার রায় বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা সমস্যা সমাধানে ১০ দিনের সময় দিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে। আগামী দশ দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধান নাহলে তারা আবারও কর্মসূচি নতুন ঘোষণা করা হবে বলে শিক্ষার্থীদের থেকে জানায়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজে খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান একেবারেই বন্ধ। খেলাধোলার সামগ্রী চাইলে অধ্যক্ষ বলেন-বরাদ্দ নেই। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বিষয়ে বরাদ্দের অজুহাত দেন তিনি। জাতীয় কোন প্রোগ্রামে বা আলোচনা সভায় অধ্যক্ষ উপস্থিত থাকেন না। অন্য শিক্ষকরা মিলে যতটুকু পালন করেন তাতে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণের সুযোগ পায় না। বহিরাগতরা কলেজ চত্ত্বরে এসে মাদক সেবন করে শিক্ষার পরিবশে নষ্ট করছে কিন্তু এসব বিষয়ে পদক্ষে নিতে অধ্যক্ষের কোন উদ্যোগ নেই।
বরাদ্দের টাকা লুটপাটের বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। এছাড়া কম্পিউটার ল্যাব, সাইন্স ল্যাব ও লাইব্রেরি দ্রুত চালু করাসহ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য দাবি জানায় তারা। অন্যথায় কঠোর কর্মসুচি দেওয়ার হুমকি দেয় তারা।
শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, কলেজের কম্পিউটার ল্যাবটি সারা বছর তালা দেওয়া থাকে। শিক্ষার্থীরা ল্যাব ব্যবহার করতে পারে না। ল্যাবের কোন কম্পিউটার-ল্যাপটপ শিক্ষকরা বাসায় নিয়ে গেছেন। তাদের বাচ্চারা এতে গেম খেলে। কলেজে লাইব্রেরি থাকলেও সেটিও তালা লাগানো বছর ধরে। সাইন্স ল্যাবরেটরিতে কোন উপকরণ নেই। এটির অবস্থাও একই রকম। পড়াশোনার যথাযথ পরিবেশ নেই তাই শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট ভীষণ খারাপ হচ্ছে। এছাড়া অধ্যক্ষ নিজেও নিয়মিত কলেজে আসেন না, ভালো মন্দ খোঁজখবর রাখেন না।
এ বিষয়ে জানতে অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল হোসেন চৌধুরীর স্থানীয় সাংবাদিকদের অনেকে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যাায়নি।
কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা জ্যেষ্ঠ প্রভাষক বিজয় কুমার রায় বলেন, শিক্ষার্থীদের অনেক দাবিই যৌক্তিক। আমরা শিক্ষকরাও এতে একমত পোষণ করি। অধ্যক্ষ স্যার ছুটি থেকে আসলে আমরা তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে এসব সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করব।
পিএম