যশোরে রীতিমতো তাপদাহের দাপট চলছে। অতিরিক্ত গরমে বা হিটস্ট্রোকে খামারের ব্রয়লার লেয়ার ও সোনালী মুরগি। গত কয়েক দিনে প্রায় ১০ সহস্রাধিক মুরগি মারা গেছে। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন খামারিরা।
জানা গেছে , যশোরে মুরগি খামার রয়েছে ১৫৩৪টি। এর মধ্যে ব্রয়লার ২৯২টি, লেয়ারের ৩৭টি ও সোনালী মুরগির খামার রয়েছে ২০৫টি। এসব খামারে বছরে ৪৮ কোটি ৫ লাখ পিস ডিম উৎপাদন হয়।
শহরের নাজির শংকরপুর এলাকার খামারি সানজিদা বেগম জানান, প্রচন্ড গরমে তারসহ আশপাশের খামারে মুরগি মারা যাচ্ছে। অসুস্থ থাকছে সব সময়। তার খামারে ৭শ' মুরগি ছিল। এখন আছে ২৫০টি। মাস খানেক আগেও হঠাৎ ৪শ' মুরগি মারা যায়। গত কয়েকদিনে মারা গেছে ৫০টির মতো। তিনি বলেন, প্রচন্ড গরমে ‘হিটস্ট্রোকে’ মুরগি মারা যাচ্ছে।
শহরতলীর চাঁচড়া ভাতুড়িয়া গ্রামের আলাউদ্দিন জানান, তার খামারে ৩২শ' ব্রয়লার মুরগি ছিল। এর মধ্যে গত দুই দিনে ৩২টি মুরগি গরমের কারণে মারা গেছে।
একই গ্রামের ফিরোজ হোসেন জানান, তারা খামারে সাড়ে ৪ হাজার ব্রয়লার মুরগির মধ্যে গরমের কারণে ২শ' মুরগি মারা গেছে।
সদর উপেজলার ফতেপুর গ্রামের পারভেজ হাসান জানান, তার খামারে ২শ' দেশি মুরগি রয়েছে। প্রচন্ড গরমে মুরগি মারা না গেলেও অসুস্থ হয়ে পড়ায় ডিম উৎপাদন হচ্ছে না। তিনি নিয়মিত স্যালাইন ও লেবুর রস খাওয়াচ্ছেন।
যশোর সরকারি হাঁস-মুরগি খামারের ব্যবস্থাপক বখতিয়ার হোসেন জানান, খামারটিতে সাড়ে ৩ হাজার মুরগি রয়েছে। তারা নিয়মিত পরিচর্যা করছেন। টিনশেডে পানি দিয়ে ঠান্ডা রাখছেন। এতে মুরগি মারা না গেলেও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। সেই সাথে ডিমের উৎপাদন কমে গেছে।
যশোর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তপু কুমার জানান, তার অধীনে ২৪৯টি ব্রয়লার ও ২৫টি লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে। গত দুই দিন ধরে যশোরে প্রচন্ড গরম পড়েছে। এতে মুরগি অসুস্থ হয়ে মাারা যাচ্ছে। হিটস্ট্রোক বেড়ে গেছে। খাওয়া কমে গেছে। তবে ঠিক কী পরিমাণ মুরগি মারা গেছে তার হিসাব নেই।
যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রাশিদুল হক জানান, প্রচন্ড গরমে ব্রয়লার মুরগি অসুস্থ হয়ে মারা যাচ্ছে। প্রায় প্রতিটি প্রান্তিক ব্রয়লার খামারে মুরগি মারা গেলেও সঠিক পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই। তবে মারা যাবার হার ১০ হাজারের মতো হতে পারে। আমরা খোঁজ খবর রাখছি।
উল্লেখ্য, বুধবার যশোরে সর্বোচ্চ রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে মঙ্গলবার তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি ও সোমবার ছিল ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এআই /বিল্লাল হোসেন