মায়ের শেখানো ভাষাতেই আমারা আমাদের জীবনের প্রথম আধো আধো কথা বলতে শিখি। সবারি জীবনের প্রথম হাতে খড়ি হয় মায়ের কাছে। মা আমাদের জীবনের প্রথম বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক। তবে মায়ের কাছে বাড়িতে পড়েই বিশ্ব রেকর্ড করার কথা হয়তো কেউ ভাববে না। কিন্তু জেনে অবাক হবেন যে, সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা ঘটেছে। যিনি মায়ের তত্ত্বাবধানে ১০ বছর বাসায় পড়াশোনা করে , মাত্র ১৭ বছর বয়সে পিএইচডিও শেষ করে ফেলেছেন।
বলছি ডরোথি জিন টিলম্যান এর কথা, ডরোথি যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর বাসিন্দা। মাত্র ১৭ বছর বয়সে অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি শেষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। তবে এত দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষার সবচেয়ে বড় ডিগ্রি অর্জনের পেছনে কাজ করেছেন ডরোথি জিন টিলম্যানের মা। তার মা তাকে ১০ বছর পর্যন্ত বাসায় রেখে পড়াশোনা করিয়েছেন, যা তাকে তার নিজের গতিতে পড়াশোনা করার সুযোগ দিয়েছে। এর ফলে সাধারণ স্কুলের থেকেও দ্রুত বিভিন্ন শিক্ষা স্তর পার হতে পেরেছেন। তবে ডরোথি তাঁর পড়াশোনায় অত্যন্ত মনোযোগী ছিলেন এবং উচ্চ স্তরের পাঠ্যক্রম ও গবেষণার কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলেন।
শুধু যে নিজে পড়াশোনা করেছেন তাই নয়, এ সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করেছেন নিজের ইনস্টিটিউটও। অল্প বয়সে এত বড় একাডেমিক সাফল্যের পেছনের গল্প শুনিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন মায়ের উৎসাহ ও সহযোগিতাই তাঁকে এত দূর পৌঁছে দিয়েছে।
ডরোথির মা জিমালিটা টিলম্যান বলেন, ‘যখন অনেক ছোট, তখনই তিনি খেয়াল করেন ডরোথি গণিতে অনেক ভালো। আমাদের চাইল্ড কেয়ার প্রোভাইডার মিস মেরি প্রথম বিষয়টি খেয়াল করেন যে ডরোথির যখন তিন-চার বছর বয়স, তখন থেকেই সে দুই অঙ্কবিশিষ্ট সংখ্যা নিয়ে কাজ করতে পারে। আমরা তার লেখাপড়ার প্রতি ভালোবাসা দেখে সত্যিই আশ্চর্যান্বিত হয়ে যাই।’
১৭ বছর বয়সে পিএইডি ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠা করেছেন নিজের ইনস্টিটিউটও। অল্প বয়সে এত বড় একাডেমিক সাফল্যের পেছনের গল্প শুনিয়েছেন তিনি। ডরোথির এ সাফল্যের পেছনে তার ৭৭ বছর বয়সী নানির ভূমিকাও আছে। ডরোথি জিন টিলম্যানের নানি, যার নাম ডরোথি জিন রাইট টিলম্যান একজন মহীয়সী নারী।
জানা যায়, ২০১৬ সালে ডরোথি ১০ বছর বয়সে কলেজ অব লেককাউন্টি থেকে অ্যাসোসিয়েট ডিগ্রি নিয়ে ফেলে। ১২ বছর বয়সে আলবেনিস এক্সেলসিয়র কলেজ থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ১৪ বছর বয়সে মাস্টার অব সায়েন্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। সিদ্ধান্ত নেন অন্য বাচ্চাদের তার মতোই একই ক্যারিয়ার বেছে নিতে সহায়তা করার। ফলশ্রুতিতে প্রতিষ্ঠা করেন ডরোথি জিনিয়াস স্টেম লিডারশিপ ইনস্টিটিউট।
পড়াশোনা, গবেষণা ও নিজের ইনস্টিটিউটের কাজ সামলে ১৭ বছর বয়সে এখন তিনি ড. ডরোথি জিন টিলম্যান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে তার অনুভূতি জানাতে গিয়ে লেখেন, ‘আমি খুশি যে আচরণগত স্বাস্থ্যশিক্ষার ওপর ডক্টরেট সম্পন্ন করতে পেরেছি। অনেক মানুষকে আমার ধন্যবাদ জানানোর আছে আমাকে সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য। কিন্তু এ মুহূর্তে শুধু আমার ১ নম্বর চ্যাম্পিয়ন আমার মাকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’
এবি