মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর (বেতবাড়ীয়া-মধুগাড়ি) গার্ডার সেতু নির্মাণের তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এক অংশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ হয়নি আজও। জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় আটকে আছে সড়কের কাজ। ফলে থমকে দাঁড়িয়ে আছে সাড়ে ৭ কোটি টাকার সেতু।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বামন্দী এইচডি থেকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের প্রাগপুর জিসি ভায়া মধুগাড়ি ঘাট সড়কের মাথাভাঙা নদীর ওপর ৭৫ মিটার গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ২ ফেব্রুয়ারী। সেতুর ব্যয় ধরা হয় ৭ কোটি ২৯ লাখ ৩২ হাজার ৯৭৯ টাকা। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক করা হয়নি। মেসার্স কহিনুর এন্ড কফিল এন্টারপ্রাইজ সেতুর ঠিকাদারি কাজ সম্পন্ন করে। সেতুটি নির্মাণের আগে স্থানীয়রা সংযোগ সড়কের জন্য বিনামূল্যে জমি দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেতু নির্মাণের পর স্থানীয়রা বেঁকে বসেছেন। তারা এখন জমির বর্তমান বাজার মূল্য দাবি করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর দুই জেলার মানুষের জন্য তৈরি (বেতবাড়ীয়া-মধুগাড়ি) সংযোগ সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। সেতুর দৌলতপুর উপজেলার পাশে সংযোগ সড়ক তৈরি হলেও গাংনী অংশে এখনো হয়নি। সেতু নির্মিত হলেও এখনো ভোগান্তি দূর হয়নি দুই পাড়ের লক্ষাধিক মানুষের। ফলে চিকিৎসাসেবা কিংবা ফসলাদি নিয়ে দুপারের মানুষকে যাতায়াত করতে হলে ৯ কিলোমিটার ঘুরতে হচ্ছে।
বেতবাড়ীয়া গ্রামের আরশাদ আলী জানান, বছর দশেক ধরে তিনি নদী পার হয়ে যাতায়াত করেন। সেতু নির্মাণের খবরে এলাকাবাসী খুশি হলেও নির্মাণের পর আর সেটি নেই। সংযোগ সড়ক না থাকায় সুফল পাচ্ছেন না তারা।
গোবরগাড়া গ্রামের গোলাম মর্তুজা জানান, সংযোগ সড়ক না থাকায় মাঠের ফসল মাথায় করে নিয়ে যায় কৃষকরা। অতিদ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
পীরতলা গ্রামের আকরামুল ইসলাম জানান, সেতু নির্মাণ হলেও হয়নি রাস্তা। যারফলে মোটরসাইকেল নিয়ে যাতায়াত করতে কষ্ট হয়। তবুও পথ কমাতে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
যাদের জমি অধিগ্রহণ না করায় আটকে গেছে সেতুর সংযোগ সড়ক, কথা হয় সে দুজন বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম ও আমিরুল ইসলামের সাথে। তারা জানান, আমরা কষ্ট করে দেশ স্বাধীন করেছি আমাদের জমির ন্যায্য মূল্য দিচ্ছে না, সরকার সঠিক লোক পাঠিয়ে বাজারমূল্য দিয়ে অধিগ্রহণ করে রাস্তা তৈরি করুক।
গাংনী উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী ফয়সাল আহমেদ বলেন, সেতু নির্মাণের আগে সেতুর সংযোগ সড়কের জন্য জমির মালিকগণ জমি দিতে চাইলেও বর্তমানে আপত্তি জানাচ্ছেন। তারা বাজারমূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ দাম চাচ্ছেন। তাই ভূমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, সেখানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আশা করছি শিগগিরই অধিগ্রহণের কাজ শুরু হবে।
আরইউ