নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্তবর্তী বন থেকে লোকালয়ে বেরিয়ে আসা একটি হরিণ আটক করে স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) লেংঙরা বিওপি । উদ্ধার হওয়াপর মায়া হরিণকে বনে অবমুক্ত করেছে বন বিভাগ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ দ্য এনিমেলস অফ সুসং স্বেচ্ছাসেবকরা।
বৃহস্পতিবার (১৩ই জুন) দুপুরে উপজেলার লেংঙরা ইউনিয়নের তারানগর এলাকায় শিশির মারাক বাড়ীর সংলগ্ন থেকে এই হরিণটি উদ্ধার করা হয়। পরে
সন্ধ্যায় লেঙ্গুড়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি'র কাছ থেকে বুঝে নেয় বন বিভাগ ও সেচ্ছাসেবীরা। তারপর রাতেই দুর্গাপুরের গহীন বনে হরিণটিকে অবমুক্ত করা হয়।
তবে বিজিবির সদস্যরা কাদের কাছে থেকে পেয়েছে বা আটক করেছে সেটির তথ্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় ও বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, এটিকে গণেশ্বরী নদীর তারানগর এলাকায় স্থানীয় কয়েক যুবক দেখতে পেয়ে তাড়া করে। দীর্ঘক্ষণ তাড়া করার পর একজন হরিণটি ধরে বাড়ি নিয়ে যায়। এ সময় ৩১ বিজিবি'র লেংগুড়া বিওপির একটি টহল দল প্রাণীটিকে দেখেই উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
এই খবরটি জানতে পেয়ে প্রাণীটিকে উদ্ধারের তৎপরতা শুরু করে স্থানীয় পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা। পরে বন বিভাগের স্পেশাল সেল বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সাথে যোগাযোগ করে তাদের সহায়তায় রাতেই বিজিবি'র কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।
তবে কার কাছ থেকে হরিণটিকে বিজিবি সদস্যরা উদ্ধার করেছেন তাদের নাম ঠিকানা কিংবা কোন পথ দিয়ে লোকালের প্রবেশ করেছে তার কোন কিছুই জানায়নি বিজিবি।
এদিকে বিজিবির কাছ থেকে নিয়ে পরবর্তীতে রাতেই মায়া হরিণটিকে পার্শ্ববর্তী আরেক সীমান্ত উপজেলা দুর্গাপুরের গোপালপুর নামক বনের ভেতর ছেড়ে দেয়া হয়।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক ও বন বিভাগ আরও জানায়, বিভিন্ন রকমের সাপ, বানর জাতীয় প্রাণি বন উজারসহ খাদ্য সংকট ও নানা কারণে আজকাল লোকালয়ে চলে আসলেও কলমাকান্দা দুর্গাপুর দিয়ে কোন ধরনের বাঘ হরিণ প্রাণী আসেনি কোন দিন। অথবা আসা সম্ভবও নয়। তবে সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাচালানসহ নানা কারণে বিলুপ্ত প্রজাতির প্রানীরও দেখা মিলছে বর্তমান সময়ে। সম্প্রতি একটি মহা বিপ্নন প্রানী বনরুই উদ্ধার করেছে স্বেচ্ছাসেবকরা। ধারণা করা হয় এগুলো পাচারের সময় ধরা পড়ে।
সেভ দ্য এনিমেলস অফ সুসং এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিসুল হক সুমন জানান, আমরা সংবাদ পাওয়ার পর স্থানীয় বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে যৌথভাবে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে মায়া হরিণটিকে উদ্ধার করি। উদ্ধারের পর প্রাথমিক চিকিৎসার শেষে তাৎক্ষণিক প্রাণীটিকে গহীন বনে ছেড়ে দেই।
তিনি বন্যপ্রাণী রক্ষায় সাধারণ মানুষকে সচেতন ও আন্তরিক হওয়ার আহবান জানান। সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক সুশান্ত প্রসাদ জানান এ পর্যন্ত তারা প্রথমবারের মতো মায়া হরিণসহ মোট ৫১ টি উদ্ধার অভিযান করেছেন। তার মধ্যে সাপ বানর সহ বিলুপ্ত প্রজাতির বিভিন্ন রকমের প্রাণি রয়েছে।
বন বিভাগের দুর্গাপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলী জানান, আমরা স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ দ্য এনিমেলস অফ সুসং এর স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে নিয়ে হরিণটিকে উদ্ধার করে বনে করেছি। দুর্গাপুর ও কলমাকান্দায় হরিণ তেমন একটা দেখা যায় না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এব্যাপারে লেঙ্গুরা বিওপির কোন বিজিবির সদস্যের সাথেই কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এসএফ