যশোর সদর উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের বীরনারায়নপুর গ্রামের আসাদ হোসেনের মাসুদ রানা (২৩) একজন টিকটকার। দুই বছর আগে টিকটকে যশোর শহরের শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোড বেলতলা এলাকার মৃত মোস্তফা দেওয়ানের মেয়ে জলি আক্তার ঐশীর (৩০) সাথে পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত বছরের নভেম্বর মাসে তারা বিয়েও করেন। কিন্তু বছর না গড়াতেই দুই জনই পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে। মাসুদ ও ঐশী দুই দিনের ব্যবধানে আত্মহত্যা করেছেন।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাতে ঢাকায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন স্বামী মাসুদ। আর একদিন পর রবিবার (১০ নভেম্বর) রাতে যশোরে আত্মহত্যা করেন ঐশি। পারিবারিক কবরস্থানে দুই জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
স্বজনরা জানিয়েছেন, ঢাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন মাসুদ। পাশাপাশি তিনি একজন টিকটকার। টিকটকের মাধ্যমেই তার সঙ্গে জলি আক্তার ঐশীর পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে এক সময় প্রেম-পরিণয়। গত বছর নভেম্বর মাসে তারা বিয়ে করেন। বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিভেদ তৈরি হয়। এক পর্যায়ে শুক্রবার দিনগত রাতে স্ত্রী ঐশীর সঙ্গে মাসুদের ফোনে ঝগড়া হয়। অভিমান করে ওইরাতে মাসুদ ঢাকার বাসায় ফ্যানে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। শনিবার যশোরে মাসুদের দাফন সম্পন্ন হয়। স্বামীর মৃত্যুর পর দু’দিন ধরে হতাশায় ভুগে রবিবার রাতে ফাঁস দেন স্ত্রী জলি আক্তার ঐশী। সোমবার সকালে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
স্বজনরা আরও জানান, মাসুদের সাথে বিয়ের আগে ঐশীর আরও এক জায়গায় বিয়ে হয়েছিল। সেখানে তার একটি পুত্র সন্তান আছে।
মাসুদের চাচা হাসান আলী বলেন, বিয়ের পর আমরা জানতে পারি ঐশীর আগে এক জায়গায় বিয়ে হয়েছিল। সেখানে তার ১৩-১৪ বছরের একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। তাছাড়া সে দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে ছিল। তারপরও আমার ভাইপো এবং বউমাকে মেনে নিয়েছি। কিন্তু বউমা আবার বিদেশে যেতে চাইলে বিষয়টি নিয়ে ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা কাটাকাটি হয়। এসব বিষয়ে অভিমান করে ছেলে শুক্রবার দিনগত রাতে ঢাকার মিরপুরের বাসায় আত্মহত্যা করে।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, মাসুদ ও ঐশী একে অপরের সাথে অভিমানে আত্মহত্যা করেছে।