ইসকনের বহিষ্কৃত নেতা ও বর্তমানে কারাবন্দি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে আরও ৪ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৬ মে) সকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৬ষ্ঠ আদালতের বিচারক এস এম আলাউদ্দীন এ আদেশ দেন।
শুনানিকালে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে নিরাপত্তাজনিত কারণে আদালতে হাজির না করে কারাগার থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, পুলিশের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে চারটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর আগে গতকালও একই আদালতে আলিফ হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
তিনি জানান, আজকে গ্রেপ্তার দেখানো ৩টি মামলা পুলিশের করা ও অন্য এটি মামলা আলিফের ভাইয়ের করা।
এর আগে, রবিবার (৪ মে) চট্টগ্রাম মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চিন্ময় দাসকে আলিফ হত্যাসহ ৪টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন জমা দেওয়া হয়।
২০২৪ সালের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে চিন্ময় দাসের জামিন শুনানাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও সহিংসতা ঘটে। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে বঁটি, কিরিচ ও ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়। ঘটনায় নিহতের বাবা জামাল উদ্দিন ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালী থানায় হত্যা মামলা করেন।
এ ঘটনায় আরও ৫টি মামলা হয় পুলিশের ওপর হামলা, বিচারক-আইনজীবীদের গাড়ি ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ ও আদালতের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে আলিফ হত্যা মামলায় ২১ জনের বিরুদ্ধে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার ৩ আসামি—চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা আইনজীবী সাইফুলকে তারা নির্মমভাবে হত্যা করেন।
চিন্ময় দাসের বিরুদ্ধে আরও একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাও রয়েছে, যা গত বছরের ৩১ অক্টোবর চান্দগাঁও থানায় বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, জাতীয় পতাকা অবমাননা করে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন চিন্ময় ও তার অনুসারীরা। ওই মামলায় ২৫ নভেম্বর ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।
সম্প্রতি হাইকোর্ট ওই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় দাসকে জামিন দিলেও রাষ্ট্রপক্ষ এ জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছে। রবিবার চেম্বার আদালতে এ বিষয়ে শুনানির কথা থাকলেও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আই ফারুকীর মৃত্যুতে বিচারিক কার্যক্রম অর্ধদিবসের জন্য স্থগিত থাকে।
এইচএ