“পরিমাপে কারচুপি একটি জঘন্য অপরাধ, যা সব ধর্মেই নিষিদ্ধ। আমাদের উচিত সততা ও ন্যায়নিষ্ঠার সঙ্গে জীবন পরিচালনা করা। পণ্যে ভেজাল ও পরিমাপে কারচুপি রোধে বিএসটিআইসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো কাজ করে যাচ্ছে, তবে সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হলেই সমাজ থেকে এই ব্যাধি নির্মূল সম্ভব।”
মঙ্গলবার (২০ মে) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে বিএসটিআই, কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ের উদ্যোগে এবং জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এক বিশেষ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোঃ আমিরুল কায়ছার।
তিনি আরও বলেন, “পণ্যের গুণগতমান ও সঠিক পরিমাপ নিশ্চিত করার জন্য আমাদের বিবেকই সবচেয়ে বড় নিয়ামক। প্রত্যেককে নিজের অবস্থান থেকে সততা বজায় রেখে কাজ করতে হবে।” এ সময় তিনি বিএসটিআই, কুমিল্লার উদ্যোগ এবং আধুনিক সেবাপদ্ধতির প্রশংসাও করেন।
এসময়, সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আলী নূর মোহাম্মদ বশীর আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসটিআই, কুমিল্লার উপপরিচালক (সিএম) ও অফিস প্রধান কে এম হানিফ।
‘সর্বকালেই পরিমাপ সকলের জন্য’ এই প্রতিপাদ্যকে কেন্দ্র করে আয়োজিত সভায় শুরুতেই বিএসটিআই’র বিভিন্ন আধুনিক কার্যক্রম তুলে ধরা হয় একটি প্রামাণ্যচিত্রের মাধ্যমে। এতে ইট টেস্টিং ল্যাবরেটরি, মাইক্রোবায়োলজি ল্যাব, ভেজালবিরোধী অভিযান, ই-অ্যাপ্লিকেশন ব্যবস্থা, ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার এবং কিউআর কোডযুক্ত লাইসেন্সিংসহ অন্যান্য সেবা তুলে ধরা হয়।
প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের পর বক্তব্যে বিএসটিআই অফিস প্রধান কে এম হানিফ বলেন, কুমিল্লা অফিসের সক্ষমতা বিগত সময়ে বহুগুণে বেড়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের নতুন ল্যাবরেটরিগুলোর মাধ্যমে জনগণ আরও নির্ভরযোগ্য ও মানসম্পন্ন সেবা পাচ্ছে। তবে এ কার্যক্রমকে সফল করতে সমাজের প্রতিটি স্তরের সহযোগিতা প্রয়োজন।”
বিশেষ অতিথি সিভিল সার্জন ডাঃ আলী নূর মোহাম্মদ বশীর আহমেদ বলেন, “পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ ও পরিমাপে কারচুপি রোধে বিএসটিআই নিরলসভাবে কাজ করছে। দেশের স্বাস্থ্যসুরক্ষার জন্য এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি।” তিনি ভেজালবিরোধী কার্যক্রম আরও জোরদার করার আহ্বান জানান।
আলোচনা সভার মুক্ত পর্বে জেলার ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পণ্যসেবা সংশ্লিষ্ট সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। উপস্থিত ছিলেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতি, জুয়েলারি মালিক সমিতি, বেকারি মালিক সমিতি, ইটভাটা মালিক সমিতি এবং মিষ্টি ও দুগ্ধজাত পণ্য প্রস্তুতকারী মালিকদের প্রতিনিধিরা। তারা বিএসটিআই’র কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আরও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
এনআই