ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর পর সবাইকে ধৈর্য ধারণ ও সংযমের আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সব অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিপ্লবী রক্তে উজ্জীবিত তরুণ নেতা ওসমান হাদি ছিলেন প্রতিবাদের অনন্য প্রতীক। তার কর্মের মধ্য দিয়ে তিনি শুধু প্রতিবাদ নয়, দেশপ্রেম, ধৈর্য ও দৃঢ়তার অনন্য দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। আমি দেশের সব নাগরিকের প্রতি আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছি—আপনারা ধৈর্য ও সংযম বজায় রাখুন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে পেশাদারত্বের সঙ্গে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করার সুযোগ দিন। রাষ্ট্র আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি আবার আরও স্পষ্টভাবে বলতে চাই, ওসমান হাদি পরাজিত শক্তি ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীদের শত্রুতার কণ্ঠ স্তব্ধ করে বিপ্লবীদের ভয় দেখানোর অপচেষ্টা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ করে দেন। ভয়-সন্ত্রাস কিংবা রক্তপাতের মাধ্যমে এদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না।
তিনি বলেন, আমরা এখন গণতান্ত্রিক উত্তরণের চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়েছি। শহীদ হাদি ছিলেন এই প্রক্রিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ। তার একান্ত ইচ্ছা ছিল আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের পরবর্তী ধাপে সক্রিয় ভূমিকা রাখার। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, তার এই মহতি ইচ্ছা অপূর্ণ রয়ে গেলো। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায় আজ সমগ্র জাতির কাঁধে ন্যস্ত। আগামী দিনগুলোতে আমাদের সবাইকে ধৈর্য, সংযম, সাহস ও দূরদর্শিতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে, যাতে নির্বাচন ও গণতন্ত্রের শত্রু ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসী অপশক্তিকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করা যায়।
তিনি আরও বলেন, এই শোকের মুহূর্তে আসুন, আমরা শহীদ শরিফ ওসমান হাদির আদর্শ ও ত্যাগকে শক্তিতে পরিণত করি। ধৈর্য ধারণ করি, অপপ্রচার ও গুজবে কান না দিই এবং যেকোনও হঠকারী সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকি।
ড. ইউনূস বলেন, যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চান, তাদের ফাঁদে পা না দিয়ে আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে অবিচল পদক্ষেপে এগিয়ে যাই। এটাই হবে শহীদ হাদির প্রতি আমাদের প্রকৃত শ্রদ্ধা।