এইমাত্র
  • জয়পুরহাটে চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা
  • কেরানীগঞ্জে গাঁজাসহ মাদককারবারি গ্রেপ্তার
  • বড়াইগ্রামে ভুয়া সাংবাদিক দম্পতির বিরুদ্ধে পৃথক এজাহার
  • তারাগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা ডাঃ নজরুল গ্রেপ্তার
  • সহিংসতার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি
  • কুষ্টিয়ায় প্রথম আলো অফিসে হামলা-ভাঙচুর
  • পাকুন্দিয়ায় স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, স্বামী পলাতক
  • পরিক্ষা যেন ক্ষুদে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের উৎসব
  • টেকনাফের পাহাড় থেকে অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার
  • পুঠিয়ায় ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
  • আজ শুক্রবার, ৫ পৌষ, ১৪৩২ | ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫
    করপোরেট সংবাদ

    একাডেমিক ডিগ্রির সঙ্গে শিল্প খাতের প্রকৃত চাহিদার অসঙ্গতি দূর করতে কাঠামোগত শিক্ষানীতির সংস্কার

    মুক্তমত প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৪৬ এএম
    মুক্তমত প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৪৬ এএম

    একাডেমিক ডিগ্রির সঙ্গে শিল্প খাতের প্রকৃত চাহিদার অসঙ্গতি দূর করতে কাঠামোগত শিক্ষানীতির সংস্কার

    মুক্তমত প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৪৬ এএম

    বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা গত এক দশকে বিস্তারের দিক থেকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, উচ্চশিক্ষায় ভর্তির হার বেড়েছে এবং প্রাথমিক শিক্ষায় প্রায় সর্বজনীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত হয়েছে। কিন্তু এই সংখ্যাগত অগ্রগতির আড়ালে গুণগত উন্নয়ন, দক্ষতা সৃষ্টির সক্ষমতা এবং শ্রমবাজারের সঙ্গে শিক্ষার বাস্তব সামঞ্জস্য—এই তিনটি মৌলিক সূচকে দেশের অবস্থান এখনও উদ্বেগজনক।

    আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতাকে “degree-rich but skill-poor” হিসেবে চিহ্নিত করেছে। অর্থাৎ, ডিগ্রির সংখ্যা বাড়লেও কর্মক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দক্ষতা তৈরি হচ্ছে না। এই প্রতিকূলতা দীর্ঘমেয়াদে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, উৎপাদনশীলতা এবং প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতার জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে।

    প্রাথমিক শিক্ষায় বাংলাদেশ প্রায় ৯৭ শতাংশ ভর্তি হার ধরে রাখতে পারলেও প্রকৃত শিখনদক্ষতার চিত্র হতাশাজনক। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (BBS) মূল্যায়নে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণির প্রায় ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী সাধারণ গণিত সমস্যার সমাধান করতে পারে না এবং প্রায় ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাঠ্যবস্তুর অর্থ অনুধাবনে ব্যর্থ হয়। এই শিখন ঘাটতি পরবর্তী স্তরে গিয়ে “learning delay”-এ রূপ নেয়, যা শিক্ষার্থীর পুরো শিক্ষাজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

    মাধ্যমিক শিক্ষায় এই সংকট আরও প্রকট। পরীক্ষানির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষকের স্বল্পতা এবং বিজ্ঞান ও গণিত শিক্ষার দুর্বল কাঠামোর কারণে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার গড় মানের নিচে অবস্থান করছে। পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ সীমিত হওয়ায় এই স্তর থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিশ্লেষণী চিন্তা, সমস্যা সমাধান ও ব্যবহারিক দক্ষতা গড়ে ওঠে না।

    উচ্চশিক্ষার চিত্র আরও উদ্বেগজনক। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (UGC) তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকে উচ্চশিক্ষায় ভর্তির হার দ্বিগুণ হলেও গ্র্যাজুয়েট বেকারত্বের হার ১২ থেকে ১৪ শতাংশের মধ্যেই রয়ে গেছে। অর্থাৎ, অধিকসংখ্যক গ্র্যাজুয়েট তৈরি হলেও তারা শ্রমবাজারে কার্যকরভাবে যুক্ত হতে পারছে না। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (BIDS)-এর গবেষণায় দেখা যায়, প্রায় অর্ধেক গ্র্যাজুয়েট চাকরি পেতে দীর্ঘ সময় নেয়, যার প্রধান কারণ একাডেমিক কারিকুলামের সঙ্গে শিল্পখাতের বাস্তব চাহিদার স্পষ্ট অসামঞ্জস্যতা।

    বিশ্বব্যাংকের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, বাংলাদেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম বর্তমান সময়ের তুলনায় প্রায় ৫ থেকে ৮ বছর পিছিয়ে। ফলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), অটোমেশন, ডেটা অ্যানালিটিক্স ও রোবটিক্সের মতো চতুর্থ শিল্পবিপ্লব-সংশ্লিষ্ট দক্ষতা গড়ে ওঠার সুযোগ সীমিত।

    মেডিক্যাল শিক্ষার ক্ষেত্রেও একই ধরনের কাঠামোগত দুর্বলতা লক্ষ্য করা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) এক মূল্যায়নে দেখা যায়, ক্লিনিক্যাল স্কিল ট্রেনিং, গবেষণা অবকাঠামো এবং আধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের তুলনায় পিছিয়ে। এর ফলে দ্রুত পরিবর্তনশীল স্বাস্থ্যখাতের চাহিদা পূরণে সক্ষম মানবসম্পদ তৈরি হচ্ছে না। এই দক্ষতা সংকট এখন জাতীয় অর্থনীতির জন্য একটি বড় ঝুঁকিতে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO) ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশের প্রায় ৩৮ শতাংশ শিল্পপ্রতিষ্ঠান দক্ষ জনবল না

    লেখক: বোর্ড অব ট্রাস্টিজ মেম্বার, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ ও স্টেট কলেজ অব হেলথ সায়েন্সেস, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টার ও ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ল্যাবএইড গ্রুপ।

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…