পঞ্চগড়ে আদালতে আসামীদের জামিন দেওয়ায় সংক্ষুব্ধ হয়ে এজলাস চলাকালীন সময় বিচারককে জুতা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। জুতা নিক্ষেপ করেছে মামলার বাদীনি।
সোমবার (১১ডিসেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় আমলী আদালত-১ এ এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে। এঘটনায় ওই নারীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের আইনজীবি আবু ইউনুস মোহাম্মদ লেলিন।
তিনি বলেন, বিজ্ঞ আদালত আসামীদেরকে জামিন দেওয়ায় বিবাদী সংক্ষুব্ধ হয়ে তার পায়ের জুতা খুলে আদালতের বিচারক অলরাম কার্জিকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করে। জুতাটি বিচারকের সামনে থাকা গ্লাসে লেগে নিচে পড়ে যায়। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়।
বিচারককে জুতা নিক্ষেপকারী বাদীর নাম মিনারা আক্তার (২৫)। তিনি পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার মৃত ইয়াকুব আলীর মেয়ে।
জানা গেছে, গত ৫ ডিসেম্বর মিনারা আক্তার বাদী হয়ে ১৯ জনের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করেন, তার বাবা ইয়াকুব আলীকে কিল-ঘুষি মেরে আসামীরা হত্যা করেছে। সোমবার এই মামলার ১৯ জন আসামীর মধ্যে ১৬ জন আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালত প্রত্যেকেরই জামিন মঞ্জুর করেন।
বাদিনী পক্ষের আইনজীবি হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, গত কয়েকদিন আগে বাদীনির বাবা মারা গেছেন। আজকে তাদের বাড়িতে কুলখানি হচ্ছে। এ অবস্থায় একটি হত্যা মামলার সব আসামীকে জামিন দেয়া কোনভাবেই কাম্য নয়। বিচারকের এমন আদেশে আমরা আদালত ত্যাগ করে চলে এসেছি।
আসামী পক্ষের আইনজীবি রাকিবুত তারেক বলেন, আসামীদেরকে আগামী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তী কালীন জামিন দিয়েছে আদালত। আর মামলার যারা মূল আসামী তারা আত্মসমর্পন করেনি। যারা আত্মসমর্পন করেছে তাদের অধিকাংশই নারী ছিলো। এছাড়া আসামীদের বক্তব্য ছিলো- ওই ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়নি, বরং হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। আর যেহেতু মামলায় জব্দ তালিকা এবং সুরতহাল রিপোর্ট নথিতে নাই, তাই হয়তো সার্বিক বিবেচনা করে এই জামিন দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা আইনজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল বারি বলেন, আদালত চলাকালীন একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার খবর শুনেছি। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ এ বিষয়ে কোন অভিযোগ করেনি। যার কারণে সমিতির পক্ষ থেকে কোন সিদ্ধান্তও নেয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ২৮ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারককে লক্ষ্য করে পর পর দুটি জুতা নিক্ষেপ করেন মনির খান নামের এক আসামী।
এমআর