ঢাকার ধামরাইয়ে জমি কিনতে গিয়ে সোহরাব হোসেন নামে এক ব্যক্তি প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীর দাবি, গোলাম মোস্তফা নামে এক ব্যক্তি কৌশলে ওই প্রতারণা করেন। সম্প্রতি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার সাটুরিয়া বাসষ্ট্যান্ড এলাকার সাটুরিয়া মৌজায় আর এস ২৮২ নং দাগে ৮ শতাংশ জমি নিয়ে ওই প্রতারণার ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী সোহরাব হোসেন ধামরাইয়ের আমতা ইউনিয়নের নান্দেশ্বরী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফা মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার সাটুরিয়া এলাকার বাসিন্দা।
ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিন মাস আগে স্থানীয় হাসান ও রুবেল নামে দুই ব্যক্তি জানান ওই জমিটি বিক্রি হবে। জমির মালিক নাবালক দুই শিশু দীন ইসলাম কায়িফ ও আফজাল মাহামুদ জারিফ। এজন্য আদালতের মাধ্যমে তাদের বাবা গোলাম মোস্তফা জমিটি বিক্রি করবেন। এজন্য গোলাম মোস্তফা, হাসান ও রুবেলসহ একত্রে বসে ওই জমির মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৫৫ লাখ টাকা।
গত ২৯ জানুয়ারি জমি ক্রয়ের জন্য নগদ ৩৫ লাখ টাকা গোলাম মোস্তফাকে দেন তিনি। টাকার প্রমাণ হিসেবে ভুক্তভোগী লিখিত স্ট্যাম্প করতে চাইলে প্রমাণ হিসেবে ন্যাশনাল ব্যাংকের একটি চেকে ৩৫ লাখ টাকা উল্লেখ করে তাকে দেন গোলাম মোস্তফা। ওই সময় তারা সিদ্ধান্ত নেন যেহেতু জমি মালিকরা নাবালক তাই আদালতের আদেশ এনে জমি রেজিস্ট্রি করা হবে। এরপর থেকেই আদালতের অনুমতি মিলছে না জানিয়ে রেজিস্ট্রি নিয়ে তালবাহানা শুরু করে গোলাম মোস্তফা।
একপর্যায়ে সোহরাব জানতে পারেন, একই জমি স্থানীয় মনজুর রহমান, আলমগীর হোসেন ও মেহেদী হাসান নামে তিন ব্যক্তির কাছে ৬২ লাখ টাকা দাম নির্ধারণ করে রেজিস্টার বায়না করেন তিনি। এতে বুঝতে পারেন, প্রতারকদের ফাঁদে পড়েছেন তিনি। এজন্য মধ্যস্থতাকারী হাসান ও রুবেলকে নিয়ে গোলাম মোস্তফার কাছে গেলে তিনি বায়নার টাকা ফেরত দেবেন বলে জানান। তবে টাকা না পেয়ে সোহরাব ব্যাংক চেক ডিজঅনার করে গোলাম মোস্তফাকে উকিল নোটিশ পাঠান।
সোহরাব হোসেন বলেন, ধারদেনা করে জমি কিনতে এতগুলো টাকা বায়না করেছিলাম। সেই টাকা না পেয়ে নোটিশ পাঠানোর পর থেকেই আমাকে হয়রানি করছে তারা। পুলিশসহ নানা দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ করে ও আদালতে একটি সিআর মামলাও করেছে, যা পিবিআই তদন্ত করছে। আমি এখন সর্বস্বান্ত। এজন্য সরকার ও প্রশাসনের কাছে দাবি, এই বিষয়ে তদন্ত করে তারা যেন আইনের যে উপায় আছে, সেভাবে শাস্তির ব্যবস্থা করে।
মধ্যস্থতাকারী হাসান ও রুবেল জানান, তাদের উপস্থিতিতেই গোলাম মোস্তফা টাকা নিয়েছিলেন। তিনি টাকা ফেরতও দিতে চেয়েছেন। কিন্তু এখন চালাকি করে তাকে হয়রানি করছেন।
এ বিষয়ে গোলাম মোস্তফাকে কল দিয়ে ও তার বাড়ি গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।
সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম মোল্যা বলেন, বিষয়টি নিয়ে আদালতে দুই পক্ষের মামলা চলছে। ফলে বিষয়টি নিয়ে আমি মন্তব্য করতে পারি না।
সাটুরিয়া উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শান্তা রহমান বলেন, চেকের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। অন্য বিষয়ে পাইনি। চেকের বিষয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছ।
এমআর