ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাটে ভিড় করছেন ঘরমুখো মানুষ। তবে নেই সদরঘাটে দক্ষিণাঞ্চলগামী মানুষের চিরচেনা চাপ। ঈদের আর দুই-একদিন বাকি থাকলেও এখনও অধিকাংশ কেবিন ফাঁকা রেখেই ছেড়ে যাচ্ছে লঞ্চগুলো।
সোমবার (৮ এপ্রিল) রাতে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, পন্টুনে বাঁধা রয়েছে সারি সারি লঞ্চ। হাকডাক করে যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন লঞ্চ শ্রমিকরা। চাঁদপুরের লঞ্চগুলোতে যাত্রীর চাপ থাকলেও বরিশাল-ঝালকাঠি-ভোলা-বরগুনা রুটের লঞ্চগুলো কেবিন ফাঁকা রেখেই ছেড়ে গেছে। তবে ডেকে যাত্রী ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিন ভোর ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সদরঘাট থেকে বিভিন্ন রুটে ৬১টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে।
বরিশালে সড়ক যোগাযোগ সহজ হওয়ার আগে ঈদের সময় সদরঘাটে সবচেয়ে বেশি চাপ হতো বরিশাল রুটের যাত্রীর। এদিন ঘাটে রাত ৮টার পর অপেক্ষমাণ ছিল এই রুটের ৬টি লঞ্চ। সবগুলো লঞ্চেই ডেকে যাত্রী উপস্থিতি থাকলেও কেবিন অধিকাংশই ছিল ফাঁকা।
সুরভী শিপিংয়ের পরিচালক রিয়াজুল কবির বলেন, ডেকে যাত্রী ভালো হয়েছে কিন্তু কেবিন অর্ধেকেরও বেশি ফাঁকা। আমাদের মূল লাভটা আসে কেবিন থেকে। কেবিন বিক্রি না হলে লঞ্চ চালিয়ে লাভ নেই।’
সদরঘাট থেকে যতগুলো রুটে ঢাকা থেকে লঞ্চ যায় তার মধ্যে কেবল চাঁদপুর রুটে যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। বরিশাল রুটে যখন যাত্রী খরায় ভুগছেন লঞ্চ মালিকরা তখন চাঁদপুর রুটে চলছে একচেটিয়া ব্যবসা।
চাঁদপুর রুটের নাফিস নামের একজন লঞ্চশ্রমিক বলেন, গত দুই দিন চাঁদপুরগামী লঞ্চে বেশ ভালো ভিড় ছিল। ভিড় আরও বাড়ছে। এই রুটে চাঁদপুর লক্ষীপুর নোয়াখালীর যাত্রীদের পদচারণা বেশি। চাঁদপুর লক্ষ্মীপুরের বেশিরভাগ মানুষ লঞ্চে চলাচল করেন। কাল-পরশু আরও বেশি ভিড় হবে বলেও জানান তিনি।
চাঁদপুর রুটে লঞ্চ মালিকদের একচেটিয়া ব্যবসার বিষয়ে সোহাগ নামে একজন যাত্রী বলেন, অন্য সব রুটে যখন যাত্রী খরা চাঁদপুর রুটে তখন একচেটিয়া ব্যবসা চলছে। এই সুবাদে লঞ্চ মালিকরা ভাড়া বাড়িয়েছেন। এখানে দুই বছর আগেও লোকাল ভাড়া ছিল ১০০ টাকা মাত্র। এখন সেই ভাড়া ২০০ টাকা। ঈদ উপলক্ষে আড়াইশো টাকা পর্যন্ত ভাড়া হয়েছে।
ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে লঞ্চশ্রমিকরা জানান, ভাড়া ঈদ উপলক্ষে নয় আরও অনেক আগেই বাড়ানো হয়েছে। তেলের দাম বেড়েছে তাই ভাড়াও বেড়েছে।
এদিকে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
সদরঘাট নৌ থানার ওসি আবুল কালাম বলেন, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন। সাদা পোশাকেও অনেকে দায়িত্ব পালন করছেন। যাত্রীর চাপ বাড়লে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে।