এইমাত্র
  • দেশে মাথাপিছু আয় বেড়ে ২৭৮৪ ডলার
  • ট্রাম্পের পক্ষের সাক্ষীকে বিচারকের হুমকি
  • বাংলাদেশিদের জন্য আবারও বন্ধ মালদ্বীপের শ্রমবাজার
  • নিপুণকে ফিল্মে এনেছেন ডিপজল: মিশা সওদাগর
  • ক্ষতিকর সব ধরনের পানীয় নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন : পবা
  • আজ বিশ্ব চা দিবস
  • রাইসির মৃত্যুতে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালনের ঘোষণা
  • বিরামপুরে ধান-চাল সংগ্রহের শুভ উদ্বোধন
  • রোগীর মনকে সতেজ করে দিচ্ছে থেরাপি ডগ!
  • গোবিন্দগঞ্জে চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
  • আজ মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ২১ মে, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    টেকনাফে শ্রমবাজার রোহিঙ্গা শ্রমিকদের দখলে, বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা

    গিয়াস উদ্দিন ভুলু, টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১ মে ২০২৪, ০৩:২০ পিএম
    গিয়াস উদ্দিন ভুলু, টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১ মে ২০২৪, ০৩:২০ পিএম

    টেকনাফে শ্রমবাজার রোহিঙ্গা শ্রমিকদের দখলে, বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা

    গিয়াস উদ্দিন ভুলু, টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১ মে ২০২৪, ০৩:২০ পিএম

    কক্সবাজারের টেকনাফে স্থানীয় শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করার কর্মস্থলগুলো দিনের পর দিন দখল করে নিচ্ছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীরা। বলতে গেলে অত্র উপজেলার আনাচে কানাছে রোহিঙ্গা নর-নারীদের অবাধ বিচরণ চোঁখে পড়ার মত। অথচ তাদের গতিবিধি লক্ষ্য রাখার জন্য শরণার্থী শিবিরগুলোর ভেতরে এবং বাহিরে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কিন্তু রোহিঙ্গারা প্রশাসনের সদস্যদের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন কৌশলে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি দখল করে নিচ্ছে শ্রমবাজারগুলো।

    এদিকে রোহিঙ্গা শ্রমিকরা কম টাকার বিনিময়ে শ্রম দেওয়ার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়ছে স্থানীয় শ্রমিকরা।

    অনুসন্ধানে দেখা যায়, টেকনাফ উপজেলার সড়কে চলাচলকারী মোটরচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক (টমটম) এর প্রায় চালক রোহিঙ্গা। আবার হোটেল, রেস্তোরা ও চায়ের দোকানে কাজ করা কর্মচারীও রোহিঙ্গা। বলতে গেলে শ্রমবাজারের বেশীরভাগ কর্মস্থলে রোহিঙ্গা শ্রমিকদের অবস্থান চোখে পড়ার মতো।

    ইদানিং সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টেও উঠে এসেছে ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে আসা অনেক রোহিঙ্গা নর-নারী স্থানীয় অর্থলোভী পরিবারের সাথে আত্মীয়তা তৈরি করে তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে থেকে অত্র এলাকার স্থানীয় অসাধু মালিকদের ভাড়া বাসায় বসতি স্থাপন করে মাদক, মানব পাচারসহ টাকার বিনিময়ে এমন কোন অপরাধ নেই যা তারা সংঘটিত করছে না। এতে করে উক্ত উপজেলায় সংঘটিত অপহরণ বাণিজ্য, মানুষ হত্যাসহ নানা প্রকার অপরাধ প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলছে।

    এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেকনাফ সুশীল সমাজের বেশ কয়েকজন ব্যাক্তি সময়ের কন্ঠস্বরকে অভিমত প্রকাশ করে বলেন, টেকনাফের স্থানীয় জনসংখ্যার চেয়ে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বাড়ছে। পর্যটনস্পট খ্যাত উখিয়া-টেকনাফে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের অবাধ বিরচন প্রতিরোধ না করলে অত্র এলাকার মাদক পাচার, অপহরণ বাণিজ্য বৃদ্ধি হওয়ার পাশাপাশি নানামুখী অপরাধ কর্মকাণ্ড বাড়তেই থাকবে। স্থানীয়দের মাঝে বসতি স্থাপন করা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের আইনের আওয়তাই নিয়ে না আসলে স্থানীয় শ্রমবাজারসহ পাড়া মহল্লায় রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণ বাড়তেই থাকবে। যদি এখন থেকে রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণ নিয়ন্ত্রন করা না হয়। এমন একদিন আসবে টেকনাফ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো রোহিঙ্গাদের দখলে চলে যাবে বলেও অভিহিত করেছেন তারা।

    শ্রমবাজার রোহিঙ্গা শ্রমিকদের দখলে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে, টেকনাফ পৌরসভার বেশ কয়েকজন অর্থলোভী হোটেল ও রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী সময়ের কন্ঠস্বরকে জানান, স্থানীয় শ্রমিকদের মাধ্যমে কাজ করালে তারা কাজ করে কম, টাকা চায় বেশি। আর রোহিঙ্গা শ্রমিকরা কাজ করে বেশি, টাকা নেয় কম। এই কারণে বিপাকে পড়ে যাচ্ছে স্থানীয় শ্রমিকরা।

    এ ব্যাপারে টেকনাফ পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো.আলম বাহাদুর সময়ের কন্ঠস্বরকে জানান, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারণে বিগত কয়েক বছর ধরে উখিয়া-টেকনাফের স্বল্প আয়ের স্থানীয় বাসিন্দারা নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে উখিয়া স্থানীয় শ্রমবাজারগুলো এখন রোহিঙ্গা শ্রমিকদের দখল করে নিয়েছে। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সর্বপ্রথম স্থানীয় জনগণকে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের ভাড়া বাসা দিয়ে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে সেই সমস্ত অর্থলোভী বাসা মালিকদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

    রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণ বন্ধ করার জন্য ক্যাম্পে দায়িত্বরত সংশ্লিষ্ট আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যদি কঠোর নজরদারি অবলম্বন করার পাশাপাশি প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলে অত্র এলাকার শ্রমবাজারগুলো রোহিঙ্গা শ্রমিকদের হাত থেকে দখল মুক্ত হবে এবং স্থানীয় অসহায় দিন মজুর শ্রমিকদের আয়ের উৎস বৃদ্ধি পাবে বলেও জানান তিনি।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ ওসমান গনি সময়ের কন্ঠস্বরকে জানান, অত্র এলাকায় ঘটে যাওয়া অপহরণ, মাদক, মানব পাচারসহ নানান অপরাধ কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে জড়িত রোহিঙ্গারা। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে- অর্থলোভী স্থানীয় ব্যক্তিরা কম টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গা নর-নারীদেরকে ব্যবহার করে মাদক ব্যবসাসহ নানান অপরাধ কর্মকাণ্ড সংঘটিত করে যাচ্ছে। বেশি টাকা মুনাফার আশায় কম টাকার বিনিময়ে তাদেরকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিচ্ছে। সেই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে অত্র এলাকার শ্রমবাজারগুলো রোহিঙ্গা শ্রমিকদের দখলে।

    তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের অবাধ বিচরণ বন্ধ করতে হলে স্থানীয়দের মাঝে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। অপরাধীদের অবস্থান নিশ্চিত করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে হবে।

    পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের কাছে বাসা ভাড়া দেওয়া অসাধু মালিকদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য খুব শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

    উল্লেখ্য, বুধবার (১লা মে) মহান মে দিবস। আজ বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। ১৮৮৬ সালের আজকের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।

    সেইদিন থেকে নিহত শ্রমিকদের আত্মদানের মধ্যদিয়ে শ্রমিক শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রতি বছর পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…