এবার বাবা মায়ের মতো চলচ্চিত্রে নাম লেখাচ্ছেন সোনালি যুগের প্রয়াত তারকা দম্পতি সোহেল-দিতির মেয়ে লামিয়া। তবে অভিনয় নয়, তিনি কাজ করবেন পর্দার পেছনে। অর্থাৎ, সিনেমা পরিচালনা করবেন লামিয়া। সংবাদমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। তবে ঠিক কোন সিনেমা দিয়ে রুপালি জগতে পরিচালক হিসেবে পা রাখবেন লামিয়া, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি।
দেড় দশক আগে মা দিতির হাত ধরেই নাকি সিনেমার জগতে পা রাখার স্বপ্ন দেখেছিলেন লামিয়া। কিন্তু দিতি নাকি চাইতেন না মেয়ে মিডিয়ায় আসুক। তাই মায়ের ইচ্ছাকে প্রাধ্যন্য দিয়ে সে সময় লামিয়া চলে যান যুক্তরাজ্যে সেখানেই তিনি অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।
কিন্তু বাবা-মা দুজনেই ছিলেন চলচ্চিত্রের মানুষ। যার রক্তে আছে অভিনয় সে কি পড়াশোনায় অর্থনীতিতে মন বসাতে পারেন! লামিয়ারও মন বসে নি। তাকে তো সিনেমাই বেশি টানে। তাই বাধ্য হয়ে আবারও বিষয়টি মা-কে জানান তিনি।
সবকিছু শুনে দিতি এবার মেয়ের সিদ্ধান্তে সায় দেন। এরপরই ফিল্ম নিয়ে ক্যারিয়ার গড়তে লন্ডন ফিল্ম স্কুলে ফিল্ম প্রডাকশনের ওপর ডিপ্লোমা করা শুরু করেন লামিয়া। সেখানে থেকে নির্মাণ, চিত্রনাট্য লেখা, স্টোরি টেলিং, সম্পাদনাসহ সিনেমার সব বিষয়ে শিখতে থাকেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে গণমাধ্যমে এসব কথা দিতি-কন্যাই জানান।
লামিয়া বলেন, ‘আমি দেশে এসেছিলাম মায়ের সঙ্গে পরিচালনার জন্য। এটাই ছিল আমার জীবনের স্বপ্ন। আমার গল্প ছিল নারীদের নিয়ে। গল্প–ভাবনা নিয়ে মা খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু ততদিনে মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। মা মারা যাওয়ার পর আমি একেবারে একা হয়ে পড়ি। একে তো আমি দেশে নতুন। অনেক কিছুই চিনি না, জানি না। আমাকে গাইড করার মতো কেউ নেই। এসেই যেন অথই এক সাগরে পড়ে যাই। ফলে তখন আমি আর সিনেমা নিয়ে কাজ করতে পারিনি।’
এদিকে খবর প্রকাশ হয়েছে, ‘দিতি চাইতেন না, মেয়ে মিডিয়ায় আসুক। মায়ের প্রতি ভালোবাসা থেকে, লামিয়া মনে কষ্ট নিয়ে শুরু করতে যাচ্ছেন সিনেমা।’ এ খবর লামিয়ার দৃষ্টি এড়ায়নি। খবরটি দেখার পর প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন লামিয়া।
স্ট্যাটাসের শুরুতে লামিয়া চৌধুরী লেখেন, ‘আমি আজকে একটা নিউজ আর্টিকেলে লেখা দেখলাম আমাকে নিয়ে হেডলাইন যে, আমি নাকি মনে কষ্ট নিয়ে সিনেমায় আসছি। এই মিস লিডিং হেডলাইন দেখে আমি মনে কষ্ট নিয়ে চলে গেলাম আমার মায়ের জন্মস্থান সোনার গাঁয়ে। সেখানে মায়ের লিচু বাগানের গাছে ঝাঁকে ঝাঁকে লিচু দেখে মন আবার ভালো হয়ে গেল।’
জানা গেছে, গত বছরের শুরু থেকে সিনেমা নিয়ে নতুন করে ভাবতে থাকেন। পাঁচ মাস ধরে টানা কাজ করছেন। ১০ বছর আগের সেই গল্প এখন পুরোপুরি পরিবর্তন করতে হয়েছে। নিজেই চিত্রনাট্য করেছেন। ইতোমধ্যে অভিনয়শিল্পী নির্বাচন, লোকেশন বাছাই, কস্টিউম ডিজাইনের কাজ শুরু করেছেন। বর্ষা মৌসুমের পরে সিনেমার শুটিংয়ে যেতে চান তিনি। সব কিছু ঠিক থাকলে লামিয়ার ইচ্ছা, সিনেমাটি নেটফ্লিক্সে মুক্তি দেবেন।