এইমাত্র
  • ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় আরও ২ জন আটক
  • প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় উপদেষ্টার দপ্তরের নির্দেশে তদন্ত শুরু
  • সাবেক বিচারপতি মেজবাহ উদ্দিন মারা গেছেন
  • বাসভবন-কার্যালয় প্রস্তুত, সিলেট হয়ে ঢাকায় ফিরবেন তারেক রহমান
  • ফটিকছড়িতে অবাধে কাটা হচ্ছে পাহাড়-টিলা-কৃষি জমি, হুমকিতে পরিবেশ
  • আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
  • মেসি-শচীনের ঐতিহাসিক সাক্ষাৎ, উপহার বিনিময়
  • ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় মামলা
  • হাবিবুরসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শুরু আজ
  • বাংলাদেশি শান্তিকর্মীদের ওপর হামলা, সুদানকে সতর্কবার্তা জাতিসংঘের
  • আজ সোমবার, ১ পৌষ, ১৪৩২ | ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
    ধর্ম ও জীবন

    ইসলামে দেনমোহরের টাকা সর্বনিম্ন কত করলে তা বৈধ হবে

    ধর্ম ও জীবন ডেস্ক প্রকাশ: ৪ জুন ২০২৪, ০৫:৫৪ পিএম
    ধর্ম ও জীবন ডেস্ক প্রকাশ: ৪ জুন ২০২৪, ০৫:৫৪ পিএম

    ইসলামে দেনমোহরের টাকা সর্বনিম্ন কত করলে তা বৈধ হবে

    ধর্ম ও জীবন ডেস্ক প্রকাশ: ৪ জুন ২০২৪, ০৫:৫৪ পিএম

    সৃষ্টিগতভাবে নারী-পুরুষ একে অপরের পরিপূরক। তাই মানবতার ধর্ম ইসলাম নারী-পুরুষের মধ্যে সুন্দর ও পূতপবিত্র জীবনযাপনের জন্য বিয়ের নির্দেশ দিয়েছে। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা বিয়ে করো তোমাদের পছন্দের নারীদের থেকে, দুজন অথবা তিনজন অথবা চারজন; কিন্তু যদি আশঙ্কা করো যে তোমরা ভারসাম্যপূর্ণ আচরণ করতে পারবে না, তাহলে মাত্র একজন।’ (সুরা নিসা, আয়াত, ৩)

    মুসলিম বিবাহের রীতি অনুযায়ী দেনমোহর অত্যাবশ্যকীয়। দেনমোহর নির্ধারণ ছাড়া মুসলিম রীতিতে কোনো বিয়ে শুদ্ধ হয় না। দেনমোহর মূলত একটি সম্মানি। যা স্বামী তার স্ত্রীকে দিয়ে থাকেন। এর মূল উদ্দেশ্য, নারীকে সম্মান ও মর্যাদা দেওয়া। এটি স্ত্রীর মূল্য নয় যে, দেনমেহর পরিশোধ করলেই মনে করা হবে নারী নিজেকে বিক্রি করে দিয়েছেন।

    ইসলামি শরিয়তের উদ্দেশ্য হলো- যখন কোনো পুরুষ স্ত্রীকে ঘরে নিয়ে আসবে, তখন তাকে মর্যাদার সঙ্গে আনবে। ইসলামি শরিয়তের নির্দেশনা হচ্ছে, দেনমোহর এতো অল্প নির্ধারণ না করা, যেখানে স্ত্রীর মর্যাদার কোনো ইঙ্গিত থাকে না। আবার এতো অধিকও নির্ধারণ না করা, যা পরিশোধ করা স্বামীর পক্ষে অসম্ভব। অনেকের ধারণা, দেনমোহর একটা হলেই হলো। এটা তো আর দেওয়া লাগবে না। এই ধারনা থেকে বের হয়ে আসতে হবে কারণ দেনমোহর হল স্ত্রীর হক। এটা পরিশোধ করতেই হবে। তবে স্ত্রী যদি সেচ্ছায় তা মাফ করে দেয় তাহলে পরিশোধ না করলেও হবে।

    অনেকেই আবার ১ টাকা বা দশ টাকার কাবিনে বিয়ে করেন। তাহলে জানিয়ে রাখি আপনার বিয়ে এই ক্ষেত্রে শুদ্ধ হবে না। কারণ ইসলামের নিয়মে দেনমোহর সর্ব নিম্ন বলা হয়েছে তার থেকে কম কাবিন হলে সেই বিয়ে শুদ্ধ হবে না ।

    কোনো নারীকে বিয়ে করলে, ইসলামি বিধান অনুযায়ী তাকে অবশ্যই দেনমোহর দিতে হবে। দেনমোহর ধার্য করা শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়। দেনমোহর স্ত্রীর অধিকার। তার ন্যায্য অধিকার তিনি যেন সঠিকভাবে পায়। স্ত্রীর যেন অবমূল্যায়ন না হন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি দেনমোহর নির্ধারণের সময় স্বামীর আর্থিক অবস্থার প্রতিও লক্ষ্য রাখতে হবে। সামর্থ্যের বাইরে দেনমোহর ধার্য করে, তাকে আল্লাহর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। দেনমোহরের শরিয়তি বিধান হলো, ১০ দিরহামের কম না হওয়া। এর মূল্য যখন যা, দেনমোহরের সর্বনিম্ন মূল্যও তখন তাই হবে।

    দেনমোহরের সর্বোচ্চ কোনো পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়নি। ন্যূনতম পরিমাণ হানাফি মাজহাবের মতে ১০ দিরহাম। অর্থাৎ ৩০.৬১৮ গ্রাম রুপা। বর্তমান বাজার অনুযায়ী যার মূল্য ৬৬২৯ টাকা। এর কম পরিমাণ দেনমোহর নির্ধারণে স্ত্রী রাজি হলেও তা শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ হবে না।

    এ প্রসঙ্গে হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, ১০ দিরহামের কম কোনো দেনমোহর নেই (বায়হাকি শরীফ, ৭/২৪০)।

    কিন্তু, এর ওপরে যেকোনো পরিমাণকে দেনমোহর নির্ধারণ করা যাবে। তবে, স্বামী যেহেতু দেনমোহর পরিশোধ করতে বাধ্য। তাই তার পরিশোধের সামর্থ্য বিবেচনা করে তা নির্ধারণ করা উচিৎ। তবে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কোনো নারীকে ঠকানো যাবে না। স্ত্রীর বংশ ও তার সমমানের মেয়েদের মোহরের পরিমাণ বিবেচনা করাও উচিত। মোহরের সর্বোচ্চ কত হবে কোনো পরিমাণ শরিয়ত নির্ধারণ করেনি। (বাদায়েউস সানায়ে : ২/২৭৫, মিরকাতুল মাফাতিহ : ৬/৩৫৮)

    আমাদের সমাজে দেনমোহরের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রচলিত পরিমাণ হলো মোহরে ফাতেমি।

    মহানবী (সা.) নিজ কন্যা হযরত ফাতিমা (রা.)-কে হযরত আলীর (রা.) সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার সময় যে দেনমোহর নির্ধারণ করেছিলেন, তাকেই মোহরে ফাতেমি বলে। এর পরিমাণ হলো ৫০০ দিরহাম। আধুনিক হিসেবে হয় ১৩১.২৫ তোলা বা ১.৫৩০৯ কিলোগ্রাম রূপা। এক দিরহামের ওজন হলো ৩.০৬১৮ গ্রাম। বর্তমান বাজারে প্রতি তোলা রূপার মূল্য ২ হাজার ১০০ টাকা হলে মোহরে ফাতেমির মূল্য হবে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৬২৫ টাকা।

    আমাদের প্রিয় নবী (সা.) উম্মে হাবিবা (রা.) ছাড়া অন্যান্য স্ত্রীর মোহর ছিল ৫০০ দিরহাম, যা প্রচলিত হিসাব অনুযায়ী ১৩১.২৫ ভরি খাঁটি রুপা বা তার সমপরিমাণ বাজারমূল্য। যেহেতু পরিমাণ নির্ধারণে শরিয়ত বিশেষজ্ঞদের ভেতর সামান্য মতবিরোধ রয়েছে, তাই সতর্কতামূলক পূর্ণ ১৫০ ভরি ধরাই ভালো।

    উম্মে হাবিবা (রা.)-এর মোহর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পক্ষ থেকে হাবশার বাদশাহ নাজ্জাশি আদায় করেছিলেন ৪০০ দিনার, যা বর্তমান হিসাবে দেড় শ ভরি খাঁটি সোনা, অপর বর্ণনায় ৪০০ দিরহাম রুপা। (মুসলিম, হাদিস : ১৪২৬, তিরমিজি, হাদিস : ১১১৪, আবু দাউদ : ২১০৮, মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ১৬৩৮৬)

    মোহর শুধু টাকা দিয়েই পরিশোধ করা জরুরি নয়। গয়না, গাড়ি, বাড়ি, জমি, বই-পুস্তক দিয়েও মোহর আদায় করা যায়। কিন্তু ওই জিনিসটি যদি স্ত্রী মোহর হিসেবে গ্রহণ না করতে চায়, তাহলে সে তা ফেরত দিতে পারবে। (আহসানুল ফাতাওয়া : ৫/২৮)

    এবি

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…