এইমাত্র
  • আগামীকাল সাময়িক বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল
  • হাদি গুলিবিদ্ধের ঘটনায় গুজবে সয়লাব ফেসবুক : ফ্যাক্টওয়াচ
  • কওমী মাদ্রাসার বোর্ড পরীক্ষার সময়সূচি এগিয়ে আনা হয়েছে
  • কলম্বিয়ায় স্কুলবাস খাদে পড়ে নিহত ১৭
  • হাদির ওপর হামলায় নির্বাচনে প্রভাব পড়বে না: সিইসি
  • হাদিকে গুলি করা অভিযুক্ত মাসুদের ভারতে গিয়ে সেলফি
  • ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় আরও ২ জন আটক
  • প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় উপদেষ্টার দপ্তরের নির্দেশে তদন্ত শুরু
  • সাবেক বিচারপতি মেজবাহ উদ্দিন মারা গেছেন
  • বাসভবন-কার্যালয় প্রস্তুত, সিলেট হয়ে ঢাকায় ফিরবেন তারেক রহমান
  • আজ সোমবার, ১ পৌষ, ১৪৩২ | ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    ফটিকছড়িতে অবাধে কাটা হচ্ছে পাহাড়-টিলা-কৃষি জমি, হুমকিতে পরিবেশ

    কামরুল হাসান, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৪ এএম
    কামরুল হাসান, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৪ এএম

    ফটিকছড়িতে অবাধে কাটা হচ্ছে পাহাড়-টিলা-কৃষি জমি, হুমকিতে পরিবেশ

    কামরুল হাসান, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৪ এএম

    চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় পরিবেশ ধ্বংসের হিড়িক পড়েছে। মাটিকারবারীদের থাবা থেকে রেহাই পাচ্ছে না বনাঞ্চলের পাহাড়-টিলা ও সোনাফলা কৃষি জমির উর্বর মাটিও। প্রশাসনের অভিযান ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলার পরও কোনো কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না মাটিখেকোদের দৌরাত্ম্য।

    জানা যায়, উপজেলার পাইন্দং, ভূজপুর, নারায়ণহাট, দাঁতমারা, বাগানবাজার, সুয়াবিল, হারুয়ালছড়ি ও কাঞ্চন নগর, ধর্মপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে সর্বদলীয় একাধিক সিন্ডিকেট। রাজনৈতিক দল ও পদবীকে পুঁজি করে গড়ে উঠা মাটিখেকোরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে দিনদিন। তারা দিনে ঘুমান, সন্ধ্যা নামলেই কাটেন পাহাড় ও টপ সয়েল। ভোর হলেই বন্ধ হয়। যার কারণে হুমকিতে পড়ছে ফসল উৎপাদন। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য।

    অপরদিকে, কৃষিজমি থেকে মাটি কাটা রোধে অভিযান চালাচ্ছে প্রশাসন। তবে কৌশল বদলে দিনের বেলার পরিবর্তে রাতে কাটা হচ্ছে মাটি। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ফসলি জমি ও টিলা থেকে মাটি কাটছেন অন্তত অর্ধশতাধিক সিন্ডিকেট। মাটিদস্যুরা কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বেপরোয়াভাবে এক্সকেভেটর দিয়ে ফসলি জমির টপসয়েল কেটে ডাম্পট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে করে ইটভাটা, পুকুর, ডোবা ও নতুন বাড়ির জায়গায় মাটি ভরাট করছে। মাটি কাটায় নিয়োজিত ড্রাম ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান থেকে মাটি পড়ে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, ধূলিময় সড়কে চলাচলে মানুষজনকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

    সরেজমিনে গত শনি ও রবিবার (১৩ ও ১৪ নভেম্বর) দু'দিন উপজেলার পাইন্দং, হারুয়ালছড়ি, নানুপুর, ভূজপুর, বাগানবাজার ইউনিয়নের একাধিক এলাকা ঘুরে দেখা মেলে পরিবেশ ধ্বংসের এমন ভয়াবহতার চিত্র।

    অনুসন্ধানে জানা যায়, পাইন্দংয়ের ফকিরাচাঁন, হালদার পাড়, আমতল, এলাকায় রাতের আঁধারে কয়েকটি স্কেভেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে কৃষিজমির মাটি। ভূজপুর ইউনিয়নের আন্ধারমানিক গলাচিপা এলাকায় স্থানীয় মো. রাশেদের নেতৃত্বে ৪/৫ জনের একটি সিন্ডিকেট রাতের আঁধারে এস্কেভেটর দিয়ে কেটে নেওয়া হয়েছে বিশালাকার টিলা।

    এসব মাটি ড্যামট্রাকে পরিবহন করে যাচ্ছে কাজীরহাট বাজারের একাধিক কৃষি জমি ভরাট কাজে। একই কায়দায় হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের আপন ব্রীকফিল্ড সংলগ্ন, বাংলাবাজার সরকার বাড়ি এলাকায় কাটা হয়েছে টিলা। একইভাবে ভূজপুর ইউনিয়নের আছিয়া চা বাগান সংলগ্ন মা আমেনা লেয়ার ফার্মের পাশে মোঃ আরিফ নামে এক ব্যক্তির মুরগীর ফার্ম তৈরির জন্য কাটা হয়েছে বিশালাকার টিলা।

    একই দৃশ্য বাগানবাজার ইউনিয়নের লালমাই এলাকায়। যেখানে ভবন নির্মাণের জন্য দিনদুপুরে কাটা হচ্ছে উচুঁ পাহাড়-টিলা। লালমাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে স্থানীয় মনির ও মফিজের নেতৃত্বে ফেলুডার সাহায্যে কেটে সাবাড় করা হয়েছে ব্যবসায়ী মো. হাসেমের টিলা। মাটি কাটার বিষয়টি স্বীকার করেন হাসেমের ছেলে মাহবুব। তিনি বলেন, 'আমরা যাদেরকে দিয়ে মাটি কাটিয়েছি তারা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছে বলে আমাদের জানিয়েছে।’ তবে কাদেরকে দিয়ে মাটি কাটিয়েছেন, তাদের নাম বলতে পারেননি তিনি।

    এ ছাড়াও একই ইউনিয়নের বাগমারা এলাকায় মাহবুবুল হকের টিলা, গার্ডের দোকানে নবী মাস্টারের টিলা, গার্ডের দোকান এলাকার লায়েসের নেতৃত্বে কাটা হচ্ছে কৃষি জমি। এতে স্থানীয়রা বাঁধা দিলে তাদেরকে দেওয়া হয় নানা হুমকিধমকি। তবে মাটি কাটার বিষয়টি অস্বীকার করে মো. লায়েস বলেন, ‘আমি এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত নই।’

    বাগানবাজার এলাকার নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাসিন্দা জানান, 'যে দল ক্ষমতায় আসে, সে দলের লোকেরাই পাহাড়-টিলা কর্তন করে। মাটিখেকোরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে না, প্রতিবাদ করে না।'

    চট্টগ্রাম জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের রিসার্স অফিসার মোঃ আশরাফ উদ্দিন বলেন, 'কর্তনকৃত এসব স্থান পরিদর্শন করে শীঘ্রই জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

    উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মাটি কাটার সংবাদ পেলে যত রাতই হোক অভিযান পরিচালনা করছি। টিলা-পাহাড় ও কৃষি জমির টপসয়েল কাটা মারাত্মক অপরাধ।'

    ইখা

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…