এইমাত্র
  • হাদির মতো এ রকম ঘটনা আরও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা ফখরুলের
  • সদরপুরে প্রার্থীদের নিজ উদ্যোগে নির্বাচনী ব্যানার অপসারণ
  • শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
  • শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা
  • শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
  • দেশের সব নির্বাচন অফিসে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
  • স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ, স্ত্রী ও প্রেমিক আটক
  • রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্দে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা চান এরদোয়ান
  • ওসমান হাদির ওপর হামলাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করছে না বিএনপি
  • ছুটির দিনেও খোলা থাকবে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়
  • আজ রবিবার, ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    হত্যার পর লাশের ওপর দাঁড়িয়ে নৃশংসতার ভিডিও ভাইরাল, যা জানা গেল

    সময়ের কণ্ঠস্বর ডেস্ক প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৯ পিএম
    সময়ের কণ্ঠস্বর ডেস্ক প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৯ পিএম

    হত্যার পর লাশের ওপর দাঁড়িয়ে নৃশংসতার ভিডিও ভাইরাল, যা জানা গেল

    সময়ের কণ্ঠস্বর ডেস্ক প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৯ পিএম

    রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল কম্পাউন্ডে পিটিয়ে ও কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগ নামে এক ব্যবসায়ীকে। এরপর নিথর দেহটাকে সড়কে ফেলে তার ওপর দাঁড়িয়ে চলেছে প্রকাশ্য উন্মত্ততা। শত শত মানুষের সামনে নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায়। ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ ইতোমধ্যে গণমাধ্যমের হাতে এসেছে।

    ঘটনার সময় অদূরেই চলছিল হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা, নিরাপত্তায় ছিলেন আনসার ক্যাম্পের সদস্যরাও। তবে, ভয়ে এগিয়ে আসেনি কেউ। যখন ওই ব্যবসায়ীকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলো, তখন চিকিৎসক জানালেন, আগেই মারা গেছেন সোহাগ।

    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুধু হত্যা করেই থেমে থাকেনি সন্ত্রাসীরা। সোহাগের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরও লাশের ওপর চলতে থাকে নৃশংসতা। রক্তাক্ত নিথর দেহটি রাস্তার মাঝখানে ফেলে লাশের ওপর দাঁড়িয়ে চলে ভয়াবহ উন্মত্ত উল্লাস। একজন নয়, একাধিক যুবক লাশের নাক-মুখে এবং বুকের ওপর একের পর এক আঘাত করে যেতে থাকে।

    ওই এলাকার একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, আতঙ্কিত অনেক লোকজন ভিড় করে তাকিয়ে কী যেন একটা ঘটনা দেখছেন! কিছুক্ষণ পর দেখা যায়, সোহাগের অর্ধবিবস্ত্র নিথর দেহ দুই তরুণ টেনেহিঁচড়ে রাস্তার মাঝখানে নিয়ে আসে। ওই সময় আশপাশে শত শত লোক দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু, ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেননি।

    ভিডিওতে দেখা যায়, নিথর দেহটি টেনেহিঁচড়ে নিয়ে আসা লোকদের মধ্যে একজন মোবাইলে কথা বলছিল। ওই সময় দুই হাত-পা ছড়িয়ে পড়ে থাকা সোহাগের রক্তাক্ত মুখের ওপর কিলঘুষি দিতে থাকে আরেকজন। অন্য এক তরুণ দৌড়ে এসে পড়ে থাকা নিথর দেহের বুকের ওপর লাফাচ্ছিল! মানুষজনও দেখছিল এমন ভয়ংকর দৃশ্য।

    প্রকাশ্যে কেন এই নৃশংসতা?

    পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র বলছে, নিহত সোহাগ মিটফোর্ড এলাকায় ভাঙাড়ি ব্যবসার সঙ্গে পুরোনো বৈদ্যুতিক কেবল কেনাবেচার ব্যবসা করতেন। তার দোকানের নাম সোহানা মেটাল। ওই এলাকায় বিদ্যুতের তামার তার ও সাদা তারের ব্যবসার একটা সিন্ডিকেট রয়েছে। এর নিয়ন্ত্রণ ছিল সোহাগের কাছে। তবে, নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া ছিল মাহমুদুল হাসান মহিন ও সারোয়ার হোসেন টিটু নামে আরও দুজন। তারা ওই অবৈধ বাণিজ্যের ৫০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ চেয়েছিল। তা না হলে নিয়মিত চাঁদা দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল তারা। এর জেরেই দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সেই দ্বন্দ্বেই ঘটেছে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড। ঘটনার দিন সোহাগকে তার দোকান থেকে ডেকে আনা হয়েছিল।

    স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নিহত সোহাগ ও হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া মহিন, টিটুসহ জড়িত অন্যরাও ৩০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তারা দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিত এবং স্থানীয়ভাবেও তাদের সবাই যুবদলের নেতা বলে জানে।

    হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন। মামলায় ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত মাহমুদুল হাসান মহিন, সারোয়ার হোসেন টিটু, মনির ওরফে ছোট মনির, আলমগীর, মনির ওরফে লম্বা মনির, নান্নু, সজীব, রিয়াদ, টিটন গাজী, রাকিব, সাবা করিম লাকী, কালু ওরফে স্বেচ্ছাসেবক কালু, রজব আলী পিন্টু, মো. সিরাজুল ইসলাম, রবিন, মিজান, অপু দাস, হিম্মত আলী, আনিসুর রহমান হাওলাদারসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

    পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনার মূলহোতা মহিনকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরেক আসামিকে যৌথ বাহিনী আটক করেছে।

    নিহতের ভাগ্নি মীম আক্তার জানান, তার মামার পরিচিত লোকজনই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তার মামা স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং মিটফোর্ড এলাকায় ব্যবসা করতেন। কিন্তু টিটু, মহিনসহ স্থানীয় আরও কয়েকজন এই ব্যবসায় ভাগ বসাতে চাচ্ছিল। ওই প্রতিপক্ষের লোকজনও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

    তিনি জানান, খুনিরা সোহাগের কাছে ব্যবসার ৫০ শতাংশ অংশীদার দাবি করেছিল। নইলে লাভের ৫০ শতাংশ চাঁদা দেওয়ার জন্য হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল।

    নিহতের অন্য এক স্বজন জানান, বুধবার দুপুরে টিটু সোহাগের বাসায় খাওয়া-দাওয়া করে। ভাত খাওয়ার সময় টিটু সোহাগকে বলে সব মিটমাট করে ফেলবে। কোনো ঝামেলা ছাড়াই যেন ব্যবসা করা যায়, সেজন্য সবার সঙ্গে বসে একবার কথা বললেই হবে। এই কথা বলে টিটু সোহাগকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করা ৪০ থেকে ৫০ জন সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

    ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের কোতোয়ালি জোনের এডিসি আমিনুল কবির তরফদার বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক এবং ভয়াবহ। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। সব আসামিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে।

    এনআই

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…