মাত্র একদিনের ব্যবধানে পাকিস্তানের আধ্যাত্মিক অঙ্গন থেকে বিদায় নিয়েছেন ২ উজ্জ্বল আলেম নক্ষত্র। এতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে উপমহাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হৃদয়ে। ইন্তেকাল করেছেন বিশ্ববিখ্যাত আধ্যাত্মিক রাহবার ও পীরে তরিকত হযরত মাওলানা পীর জুলফিকার আহমদ নকশবন্দী (রহ.) এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম উত্তর পাঞ্জাবের আমির হযরত মাওলানা পীর আব্দুর রহিম নকশবন্দী (রহ.)।
এক হৃদয়বিদারক ঘটনার মধ্য দিয়ে আসে পীর জুলফিকার নকশবন্দী (রহ.)-এর ইন্তেকালের সংবাদ। তার ইন্তেকালের খবরটি রবিবার (১১ ডিসেম্বর) প্রথম জানান তার খলিফা পাকিস্তানের মাওলানা মাসুমুল হক। তিনি তখন পীর আব্দুর রহিম নকশবন্দী (রহ.)-এর জানাজার নামাজে শরিক ছিলেন।
জানাজার নামাজ চলাকালেই সংবাদ আসে, পীর জুলফিকার নকশবন্দী (রহ.) আর এই দুনিয়াতে নেই। শোকের তীব্রতায় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। সেই মুহূর্তটি কেমন হৃদয়বিদারক ছিল, তা কল্পনাই করা যায়।
পীর জুলফিকার আহমদ নকশবন্দী (রহ.) ছিলেন বর্তমান সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আধ্যাত্মিক রাহবার। তিনি পীরে তরিকত ও শরীয়তের একনিষ্ঠ খাদেম হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত ছিলেন। তাঁর দাওয়াত, বয়ান ও আত্মশুদ্ধির শিক্ষা লাখো মানুষের জীবন পরিবর্তনের মাধ্যম হয়েছে। তাঁর ইন্তেকালে মুসলিম উম্মাহ একজন দরদি অভিভাবক ও সময়ের এক মহান মুরব্বিকে হারাল, যা নিঃসন্দেহে এক অপূরণীয় ক্ষতি।
অন্যদিকে, হযরত পীর আব্দুর রহিম নকশবন্দী (রহ.) ছিলেন প্রখ্যাত বুজুর্গ হযরত পীর গোলাম হাবিব নকশবন্দী (রহ.)-এর সুযোগ্য সন্তান ও স্থলাভিষিক্ত। তিনি ছিলেন মরহুম পীর আব্দুর রহমান কাসেমী ও পীর আব্দুল কুদ্দুস নকশবন্দীর সহোদর ভাই। দ্বীনি খেদমত, আধ্যাত্মিকতা ও নেতৃত্বে তিনি নিজস্ব মর্যাদার অধিকারী ছিলেন এবং উত্তর পাঞ্জাবে দ্বীনের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
একদিনের ব্যবধানে এই দুই মহান আলেমের ইন্তেকালে গোটা উপমহাদেশে শোকের আবহ বিরাজ করছে। আলেম, তালেবে ইলম, ভক্ত-মুরিদ ও সাধারণ মুসলমানরা গভীর শোক ও বেদনায় মুহ্যমান।
আল্লাহ তাআলা উভয় মহান মনীষীকে জান্নাতুল ফেরদাউসের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন। তাঁদের শোকসন্তপ্ত পরিবার, আত্মীয়স্বজন, ভক্ত ও মুরিদদের সবরে জামিল দান করুন। আমিন।