চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পারকি সমুদ্র সৈকতে নির্মাণাধীন পর্যটন কমপ্লেক্সের কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা জানিয়েছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন।
আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) সকাল ১১টায় পারকি সমুদ্র সৈকত এবং চলমান উন্নয়ন প্রকল্প ‘পারকিতে পর্যটন সুবিধাদি প্রবর্তন (২য় সংশোধিত)’ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন বলেন, ‘পানি সমস্যাসহ নানা কারণে পারকি সমুদ্র সৈকতে নির্মাধীন পর্যটন কমপ্লেক্সের কাজে কিছুটা ধীরগতি দেখা দিয়েছে। তবে প্রকল্পের সাথে জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্প পরিচালকরা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন যে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রকল্পের সব অবকাঠামোগত কাজ শেষ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সমুদ্র সৈকত চট্টগ্রাম শহর থেকে খুব কাছাকাছি হওয়ায় এর পর্যটন সম্ভাবনা অনেক বেশি। কিন্তু অব্যবস্থাপনা, যোগাযোগ সমস্যা ও পর্যাপ্ত অবকাঠামোর অভাবে এর পুরো সুযোগ কাজে লাগানো যাচ্ছে না। সঠিক পরিকল্পনা ও দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে এটি দেশের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটে রূপ নিতে পারে।’
পরিদর্শনকালে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পর্যটন সংশ্লিষ্টরা সৈকতের নানা সমস্যার কথা উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেন। তারা বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় সৈকতে প্রতিনিয়ত ভাঙন দেখা দিচ্ছে, ঝাউবন ও বালিয়াড়ি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বিশুদ্ধ পানির অভাব, পর্যটকদের বসার ব্যবস্থা ও মানসম্মত হোটেল না থাকার কারণে পর্যটকরা সঠিক সুবিধা পাচ্ছেন না।
এসময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম নাসরীন জাহান বলেন, ‘পারকি সমুদ্র সৈকতের পর্যটন কমপ্লেক্স প্রকল্পটি সম্ভাবনাময়। এর সফল বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয়দের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। পাশাপাশি পর্যটন পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও আরও সক্রিয় হতে হবে।’
উপদেষ্টা রিসোর্টের কাজের ধীরগতি এবং নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ ২০১৮ সালে প্রায় ৭৯ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হলেও এখনও শেষ হয়নি। ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ না হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পারকি প্রকল্প পরিদর্শন শেষে উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন বাংলাদেশ বিমানের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘সকল নৈরাজ্য কাটিয়ে বাংলাদেশ বিমানকে একটি সচল ও ব্যবসা সফল প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর আমার প্রধান লক্ষ্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে লাভজনক ও টেকসই একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করানো। এজন্য সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ও সহযোগিতা প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিমানের চলমান সংকট কাটাতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে একসাথে কাজ করতে হবে। সেবার মান উন্নয়ন, যাত্রীদের আস্থা অর্জন এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকেও আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।’
পারকি সৈকত ও রিসোর্ট পরিদর্শন শেষে উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে এবং অন্যান্য নির্মাণাধীন প্রকল্প পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানা, প্রকল্প পরিচালক মাজেদুর রহমান, আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) দীপক ত্রিপুরা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
এইচএ