রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় গণপিটুনিতে নিহত রুপলাল দাসের ছেলে জয় দাস (১৪) বাবার পেশায় ফিরেছে।
সরেজমিনে শুক্রবার (২৯ আগস্ট) তারাগঞ্জ হাট গিয়ে দেখা যায় নতুন চৌপথী বাসস্ট্যান্ড থেকে অগ্রণী ব্যাংক মোড়ের মধ্যবর্তী স্থান তারাগঞ্জ জুতা পট্টির সামনের রাস্তার পাশে চকির উপরে বসে জুতা সেলাইয়ের কাজ করছে রুপলাল দাসের ছেলে জয় দাস।
বাবার পেশাই জীবনে পেশা হিসেবে বেছে নিবেন বলে জানিয়েছে রুপলাল দাসের ছেলে জয় দাস।
জয় দাসের সাথে কথা হলে সে বলে, 'বাবার পেশাকেই আজ থেকে পেশা হিসেবে বেছে নিলাম। বাড়িতে আমার দাদি, মা ও ২ বোন রয়েছে। তাদেরকে দেখাশোনার ও ভরণপোষণের দায়িত্বও আমার উপরেই। বাবা বেঁচে থাকলে আমাকে হয়তো এত তাড়াতাড়ি এ কাজে আসতে হত না। বাবা মারা যাওয়ার কারণে আমাকে এখন এই ছোট্ট বয়সেই বাবার কাজে ফিরতে হয়েছে।'
জয় দাস আরও বলেন, 'আমি বাবা হারা হয়েছি। যারা আমার বাবাকে মেরেছে, আমি তাদের বিচার চাই। আমার স্কুলে যাওয়ার এই বয়সেই যারা আমাকে খাবারের জন্য চিন্তায় বসিয়েছে, তাদের বিচার চাই। আমি তারাগঞ্জ সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির মানবিক বিভাগে পড়ি। আমার আশা ছিলো পড়াশোনা করে একদিন মানুষের মতো মানুষ হবো। কিন্তু বাবা মারা যাওয়ার পর তা আদৌ সম্ভব কিনা তা উপরওয়ালা জানেন।'
জয় দাসের পার্শ্ববর্তী দোকানদার সেতু মিয়া বলেন, 'রুপলাল দাস একজন নিরীহ মানুষ ছিলেন। তিনি কখনও কারও সাথে কোন ঝগড়া-বিবাদে জড়াতেন না। কতিপয় লোক নিরীহ লোকটিকে পিটিয়ে হত্যা করে পরিবারটিকে পথে বসিয়েছে। যে বয়সে স্কুলে যাওয়ার কথা, সেই বয়সেই জয় বাবার কাজ করছে। খুব দুঃখ লাগছে দেখে।'
উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট শনিবার উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বুড়ীরহাট বটতলা নামক স্থানে ভ্যান চোর সন্দেহে শ্বশুর রুপলাল দাস ও জামাতা প্রদীপ দাসকে পিটিয়ে হত্যা করে কতিপয় স্থানীয় লোকজন। ঘটনাস্থলেই রুপলাল দাস নিহত হন এবং জামাতা প্রদীপ দাস রমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এইচএ