কুমিল্লা নগরীর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাটাবিল এলাকায় মাদকের জেরে মহরম নামের এক যুবককে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার (৩০ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কাটাবিল মসজিদের সামনে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় মহরমকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, মহরম শনিবার সন্ধ্যায় মোটরসাইকেলে করে যাওয়ার সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত হঠাৎ তার ওপর হামলা চালায়। প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে এবং পরপর চারটি গুলি তার মাথায় ছোড়া হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
নিহতের প্রতিবেশী মো. অপু অভিযোগ করে বলেন, মহরম এলাকায় মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় প্রতিপক্ষের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। সেই দ্বন্দ্বের জের ধরেই পরিকল্পিতভাবে তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। অপু বলেন, 'আমার ভাইকে মাথায় গুলি করে এবং শরীরজুড়ে কুপিয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।'
হাসপাতালে কান্নায় ভেঙে পড়া মহরমের মা বলেন, 'আমার ছেলের কারো সঙ্গে কোনো শত্রুতা ছিল না। তবুও কেন তাকে এভাবে মেরে ফেললো আমি বুঝি না। জাভেদ, ইমরানসহ কয়েকজনের নাম শুনেছি যারা এ হত্যায় জড়িত। ঘটনার সময় চারপাশে দোকান ভর্তি মানুষ ছিল, কিন্তু কেউ আমার ছেলেকে বাঁচাতে আসেনি। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।'
এদিকে, হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়তেই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ভিড় করেন নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা। পরিবারের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে হাসপাতাল এলাকা। রাত ১১ টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মরদেহ মর্গে রাখা ছিল এবং মর্গের সামনে ভিড় করে শোকে কাতর স্বজনরা।
পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে। তবে হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত এবং এর নেপথ্যে মূল কারণ কী তা এখনো স্পষ্ট নয়।
রাত ১১ টায় এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে কোতওয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মহিনুল ইসলাম বলেন, 'আমরা এখনো ঘটনাস্থলে রয়েছি। লাশ মর্গে রয়েছে। তদন্ত করে বিস্তারিত বলা যাবে।'
উল্লেখ্য, নিহত মহরমের চার বছরের এক ছেলে এবং সাত বছরের এক মেয়ে রয়েছে। হঠাৎ করেই বাবাহারা হয়ে পড়লো দুটি ছোট্ট শিশু আর শোকে নিস্তব্ধ হয়ে গেল একটি পরিবার।
এনআই