২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর তত্ত্বাবধায়ক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এক বছরের বেশি সময় কেটে গেলেও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, অর্থনৈতিক চাপ, এবং সামাজিক বিভাজন দেশকে গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে রেখেছে।
২০২৫ সালে বাংলাদেশের জিডিপি ৫.৮২% বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এটি কেবলই সংখ্যামাত্র। কেননা, জিডিপি বৃদ্ধি পেলেও জনগণের মনস্তত্ত্বে আস্থা পৌঁছেছে তলানিতে। বিশ্বব্যাংকের শাসন সূচক (–০.৬৯) এবং গভর্ন্যান্স ইনডেক্স মাত্র ২৩/১০০। এগুলো স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিচ্ছে দেশের রাজনৈতিক-প্রশাসনিক কাঠামোর প্রতি মানুষের বিশ্বাস নড়বড়ে হয়ে পড়েছে।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারীতে অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনের প্রাক্কালে বাংলাদেশ তার রাজনৈতিক ইতিহাসের এক মোড় ঘোরানো মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আছে। এই নির্বাচনকে শুধু একটি ভোটযুদ্ধ হিসেবে দেখা হচ্ছে না; বরং এটি বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে এক গুরুত্বপূর্ণ গণভোট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আজ তাদের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে। ঠিক এই মুহূর্তে গোটা জাতির দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়েছে দলের পরিবর্তিত ভূমিকার দিকে—বিশেষ করে ২০২৬ সালের নির্বাচনকে ঘিরে। এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এসেছে এমন এক সন্ধিক্ষণে, যখন শুধু বিএনপির টিকে থাকার ক্ষমতাই নয়, বরং দেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তিও কঠিন পরীক্ষার মুখে।
১৯৭৮ সালের এই দিনে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বিএনপি বর্তমানে জাতীয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও বহুত্ববাদী গণতন্ত্রের আদর্শে শেকড়গাঁথা এ দলটি দীর্ঘ দেড় দশকের রাজনৈতিক প্রান্তিক অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে নিজেদেরকে জাতীয় পুনর্গঠনের অপরিহার্য বাহন হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে।
পরিস্থিতি শঙ্কা ও আশার এক মিশ্র আবহে আবৃত। সরকারি অর্থনৈতিক সূচকগুলো দীর্ঘদিন ধরে প্রবৃদ্ধির ইঙ্গিত দিলেও, বাস্তবে কোটি মানুষের জীবনযাত্রা নিত্যপণ্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি, ভঙ্গুর ব্যাংকিং খাত, এবং প্রতিষ্ঠানগত আস্থাহীনতার গভীর সংকটে নিমজ্জিত। সাম্প্রতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে জনগণের বার্তাও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে: শান্তি, স্থিতিশীলতা ও কার্যকর শাসনের প্রতি এক প্রবল আকাঙ্ক্ষা।
এই প্রেক্ষাপটে ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচন কেবল আরেকটি গণতান্ত্রিক ইভেন্ট নয়। এটি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য একটি ঐতিহাসিক পরীক্ষা।
শান্তির রাজনীতি: প্রতিহিংসা নয়, সংযম
২০২৪ সালের অরাজকতা বাংলাদেশকে একেবারে দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছিল। কিন্তু সেই অস্থিরতার মধ্যেই বিএনপি নেতৃত্ব—বিশেষত তারেক রহমান—জনগণের সামনে শান্তির বার্তা তুলে ধরেন। তার আহ্বান ছিল: ‘আর সংঘাত নয়, আমাদের প্রয়োজন স্থিতিশীলতা।’
এ আহ্বান ছিল সময়োপযোগী। কারণ, মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল সংঘাত-সহিংসতায়। তাদের চাওয়া, নিরাপত্তা, স্থিতি এবং আশ্বাস। তারেক রহমানের শান্তির ডাক সেই মুহূর্তে এক ভিন্ন রাজনৈতিক বয়ান হাজির করে, যা প্রতিশোধ নয় বরং সমঝোতা ও আস্থার রাজনীতিকে সামনে আনে।
তবে শান্তি কেবল বক্তৃতায় সীমাবদ্ধ নয়। এটি কার্যকর করতে হলে শক্তিশালী নেতৃত্ব, আইনের শাসন ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা অপরিহার্য। বিএনপি ঠিক সেই জায়গাতেই আজ সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে উঠে আসছে।
আস্থার অর্থনীতি: ন্যায্যতা, জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা
আজ জনগণ আর শুধুই উন্নয়নশীল অর্থনীতির পরিসংখ্যান শুনতে চায় না। তারা চায়—
• বাজারে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীলতা
• বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নিরাপত্তা
• সাশ্রয়ী চিকিৎসা ও শিক্ষা
• ন্যায়বিচার ও সুশাসনের নিশ্চয়তা
অর্থনীতির বর্তমান চিত্র:
• জুন ২০২৫ পর্যন্ত মুদ্রাস্ফীতি ৮.৫৫% (এক বছর আগে থেকে ২.২৩% কমেছে)।
• বেকারত্বের হার আনুমানিক ৪.৭০%।
• বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২,৮২২.৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
• খাতভিত্তিক প্রবৃদ্ধি: কৃষি ৩.২১%, শিল্প ৬.৫৮%, সেবা ৫.৮%।
এখনকার ডেটা বলছে—অর্থনীতি ৫.৮২% হারে বেড়েছে বটে, কিন্তু সাধারণ মানুষ মুদ্রাস্ফীতি আর কর্মসংস্থান সংকটে হাঁসফাঁস করছে। বিদ্যুৎ ঘাটতি আবারও জনরোষে রূপ নিতে পারে। দুর্নীতি নিয়ে মানুষের আস্থা সর্বনিম্ন পর্যায়ে। মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। অর্থনীতির মূল সমস্যা হলো আস্থার সংকট। এই সংকট কাটাতে হলে স্বচ্ছতা, পূর্বানুমানযোগ্যতা এবং জবাবদিহিমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য।
বিএনপি তাদের ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচিতে এ বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিয়েছে—
• বাজেটের প্রতিটি খাতে জনগণের জন্য খোলামেলা ব্যাখ্যা
• বিদেশি বিনিয়োগে স্বচ্ছ নীতি
• আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জবাবদিহি
• দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা ইত্যাদি।
অর্থনীতির পুনর্জাগরণ তাই কেবল পরিসংখ্যানের গল্প নয়; এটি জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার বাস্তব লড়াই।
কর্মসংস্থান: রোজগারই রাজনীতি - তরুণদের আশা, জাতির শক্তি
বাংলাদেশের জনসংখ্যার সবচেয়ে বড় অংশই তরুণ। এই তরুণরা কেবল রাজনৈতিক বক্তৃতা শুনতে চায় না; তারা চায় বাস্তব সুযোগ, চাকরি, উদ্যোক্তা হওয়ার পরিবেশ এবং নিরাপদ ভবিষ্যৎ।
কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বিএনপির প্রস্তাবিত দিকনির্দেশনা:
• ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগকে বিশেষ সহায়তা দেওয়া
• কৃষি ও শিল্পখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি
• ডিজিটাল খাত ও স্টার্টআপে তরুণ উদ্যোক্তাদের অন্তর্ভুক্তি
• শিক্ষা ও প্রশিক্ষণকেন্দ্রিক উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপন
যদি ২০২৬ সালেই কয়েক লাখ নতুন তরুণ কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়, তবে এটি শুধু অর্থনৈতিক সাফল্য নয়; বরং রাজনৈতিকভাবে জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার সেরা উদাহরণ হবে।
নেতৃত্বের চ্যালেঞ্জ: তারেক রহমানের অগ্নিপরীক্ষা
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের প্রশ্নে আজ জাতির চোখ স্বাভাবিকভাবেই তারেক রহমানের দিকে। তিনি কি কেবল রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী, নাকি সত্যিকার অর্থে জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম একজন রাষ্ট্রনায়ক?
এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে তার সাম্প্রতিক ভূমিকা ও রাজনৈতিক কৌশল চোখে পড়ে। তিনি সংঘাতের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে শান্তি, আস্থা এবং উন্নয়নের রাজনীতিকে সামনে এনেছেন। তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে ইতিবাচক বয়ানের মাধ্যমে জনগণকে নতুন করে আশাবাদী করেছে।
তারেক রহমানের সামনে চ্যালেঞ্জ আছে, সন্দেহ নেই। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জই প্রমাণ করার সুযোগ—তিনি বাংলাদেশের জন্য একটি দায়িত্বশীল, বিশ্বাসযোগ্য ও দূরদর্শী নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।
তাঁর রোডম্যাপ:
১. অর্থনীতি পুনর্গঠন – মিশন ল্যাবস (অর্থনীতি, জ্বালানি, শিক্ষা, শাসন ও বিচার খাতে KPI নির্ধারণ)।
২. সহিংসতা পরিহার – No-Violence Doctrine, যাতে প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শান্তিপূর্ণ হয়।
৩. নাগরিক চুক্তি – জনগণের সঙ্গে কমপ্যাক্ট: কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীলতা, জবাবদিহি নিশ্চিত করা।
৪. তরুণ অন্তর্ভুক্তি – শিক্ষা, প্রযুক্তি ও কর্মসংস্থানে তরুণদের অগ্রাধিকার।
৫. ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা – আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ।
এই পাঁচটি স্তম্ভই তাঁকে কেবল একজন রাজনৈতিক নেতা নয়, বরং একজন বিশ্বাসযোগ্য রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে বলে সারা বাংলাদেশের লাখো জনতার বিশ্বাস।
বাংলাদেশের ইতিহাসে দলগুলো প্রায়ই অতীত মুছে দিয়ে নতুন বয়ান দাঁড় করিয়েছে। ইউনুস সরকারের জুলাই ঘোষণাই তার সাম্প্রতিক প্রমাণ। কিন্তু আজকের জনগণ আর ইতিহাসের বয়ানে আটকে নেই; তারা চায় শান্তি, কর্মসংস্থান আর সাশ্রয়ী বাজার।
জনগণের চোখে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—
• শান্তি: দলে কঠোর শৃঙ্খলা,
• আস্থা: দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্বচ্ছতা,
• রোজগার: যুবকদের জন্য নতুন কাজ,
• নিয়ম: আইন সবার জন্য সমান।
যে দল এই চারটি অঙ্গীকার বাস্তবভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবে, তাদের জন্য ২০২৬-এর নির্বাচন শুধু বিজয়ের সুযোগই নয়, দীর্ঘমেয়াদি শাসনক্ষমতার ভিত্তিও তৈরি করবে।
২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত মানবাধিকার সংগঠনের তথ্যে দেখা যায়, ৭০-এর বেশি বিএনপি কর্মী অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে নিহত এবং হাজারো আহত হয়েছে। সমালোচকরা তাই বলেন—‘বিএনপি ও আওয়ামী লীগ একই মুদ্রার দুটি পিঠ।’ তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দলীয় বহিষ্কার, শোকজ ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই ধরনের পদক্ষেপ প্রমাণ করে—ভেতরের সমস্যাগুলো অস্বীকার না করে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
নির্বাচনের আগে এসব সংকট দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, কিন্তু একইসাথে প্রতিটি সমস্যাই সুযোগে পরিণত হতে পারে। সংস্কারমূলক পদক্ষেপ, দৃশ্যমান জনসেবা আর কার্যকর পরিবর্তন দেখাতে পারলে জনগণের আস্থা বহুগুণে বাড়বে।
তারেক রহমানের কৌশলগত রোডম্যাপ হতে পারে -
তারেক রহমান যে রূপরেখা সামনে এনেছেন, তা অনেকের চোখে বাস্তবায়নযোগ্য ও সুনির্দিষ্ট। এছাড়াও তার কৌশলগত পদক্ষেপ হতে পারে -
১. সংস্কারকে বাস্তবধর্মী করা
• আইনগত রোডম্যাপ ও সময়সীমা প্রকাশ।
• নাগরিক পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন।
• একটি বা দুটি প্রতিষ্ঠানে সংস্কারের পাইলট প্রকল্প চালু করে ফলাফল দেখানো।
২. অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নির্মূল করা
• স্থানীয় পর্যায়ে মীমাংসা কর্মশালা আয়োজন।
• নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ, যেখানে দলীয় সহিংসতা মোকাবিলা ও শৃঙ্খলা রক্ষার দক্ষতা শেখানো হবে।
৩. নতুন রাজনৈতিক বর্ণনা তৈরি
• দলীয় নেতাকর্মীদের জনসেবামূলক কাজে যুক্ত করা—যেমন গ্রামীণ স্যানিটেশন, স্কুল সংস্কার, স্বাস্থ্যসেবা উদ্যোগ।
• দৃশ্যমান ফলাফল জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপন করবে।
৪. তরুণদের আস্থা অর্জন
• ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নীতি-প্রচার ও সরাসরি মতামত গ্রহণ।
• তরুণদের অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থায় যুক্ত করার প্রতিশ্রুতি।
৫. প্রত্যাবর্তনকে ন্যায়বিচারের প্রতীক বানানো
• এটি শুধুই ক্ষমতার প্রত্যাবর্তন নয়, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা।
বাস্তব উদাহরণে নতুন রাজনীতির চর্চা
লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ইতোমধ্যেই বিএনপি অনেক উদ্যোগ হাতে নিয়েছে, যা স্বভাবতই প্রশংসনীয়। মাঠপর্যায়ে গ্রামীণ এলাকায় স্কুল সংস্কার, ড্রেন পরিষ্কার কিংবা কৃষকের জন্য পরামর্শমূলক সভা—এসব কার্যক্রম জনগণের চোখে নতুন রাজনীতির চিত্র তুলে ধরছে।
এসব দৃশ্যমান কাজ দেখাচ্ছে—রাজনীতি কেবল নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে সীমাবদ্ধ নয়; জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের পথও বটে। এভাবেই ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে দীর্ঘস্থায়ী জনপ্রিয়তা, যা আগামী নির্বাচনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। গ্রামীণ পর্যায়ে দেখা যাচ্ছে “ক্লিন ভিলেজ উদ্যোগ”—যেখানে দলীয় কর্মীরা স্কুল সংস্কার করছে, ড্রেন পরিষ্কার করছে, কৃষকের জন্য ক্ষুদ্রঋণ পরামর্শ দিচ্ছে।
এসব কার্যক্রম জনগণের মনে আস্থা তৈরি করছে। এটি প্রমাণ করছে যে বিএনপি আর কেবল নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে সীমাবদ্ধ নয়; তারা জনগণের দৈনন্দিন জীবনে পরিবর্তন আনতে কাজ করছে। ফলে দলটি এখন আস্থা, বিশ্বাস ও স্থায়ী গ্রহণযোগ্যতার প্রতীক হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশ আজ এক ঐতিহাসিক বাঁক ঘুরছে। জনগণ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে সংঘাতের রাজনীতিতে। তারা চায়—শান্তি, আস্থা, কাজ এবং ন্যায়বিচার।
বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচি এই আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সরাসরি সাযুজ্যপূর্ণ। আর তারেক রহমানের নেতৃত্ব এই আকাঙ্ক্ষাগুলিকে বাস্তবায়নের জন্য সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক ও স্বাভাবিক পছন্দ হিসেবে উঠে আসছে।
২০২৬ সালের নির্বাচন তাই কেবল ভোটের প্রতিযোগিতা নয়; এটি জাতির সামনে পুনর্জাগরণের সুযোগ। যদি বিএনপি নেতৃত্ব—তারেক রহমানের নেতৃত্বে—এই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারে, তবে বাংলাদেশের সামনে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত।