এইমাত্র
  • বকশীগঞ্জের এক স্কুলেরই ৬৬ ছাত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা
  • নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে নিরাপত্তা জোরদার
  • যমুনায় জেগে উঠেছে অসংখ্য ডুবোচর, নৌ চলাচল ব্যাহত
  • সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে এভারকেয়ার ছাড়লেন হাদি
  • আগামীকাল সাময়িক বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল
  • হাদি গুলিবিদ্ধের ঘটনায় গুজবে সয়লাব ফেসবুক : ফ্যাক্টওয়াচ
  • কওমী মাদ্রাসার বোর্ড পরীক্ষার সময়সূচি এগিয়ে আনা হয়েছে
  • কলম্বিয়ায় স্কুলবাস খাদে পড়ে নিহত ১৭
  • হাদির ওপর হামলায় নির্বাচনে প্রভাব পড়বে না: সিইসি
  • হাদিকে গুলি করা অভিযুক্ত মাসুদের ভারতে গিয়ে সেলফি
  • আজ সোমবার, ১ পৌষ, ১৪৩২ | ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    বাঁশের সাঁকোই ভরসা আট গ্রামের মানুষের, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল প্রতিদিন

    অনিল চন্দ্র রায়, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৫ পিএম
    অনিল চন্দ্র রায়, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৫ পিএম

    বাঁশের সাঁকোই ভরসা আট গ্রামের মানুষের, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল প্রতিদিন

    অনিল চন্দ্র রায়, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৫ পিএম

    কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের বালাটারী ও চন্দ্রখানা গ্রামের মাঝখানে বয়ে যাওয়া নীলকমল নদীর ওপর আট গ্রামের ১০ হাজারের বেশি মানুষের ভরসা এখন এক বাঁশের সরু সাঁকো। গত তিন বছর ধরে জীবন হাতে নিয়ে এই সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন পার হতে হচ্ছে স্থানীয়দের। আগে এখানে একটি কাঠের সেতু ছিল। সেটি ভেঙে গেলে আজও আর কোনো স্থায়ী সেতু হয়নি। জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের লোকজন এসেছেন, দিয়েছেন আশ্বাস, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

    এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো থেকে পড়ে আহত হয়েছেন অনেকেই। এক যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাণও হারিয়েছেন। তবুও নিরুপায় গ্রামবাসী প্রতিদিন ব্যবহার করছেন এ সাঁকো। তবে ভারী মালপত্র আনা-নেওয়ার জন্য নৌকার ওপর নির্ভর করতে হয়।

    ৬০ বছর বয়সী কৃষক এহসান আলীর হৃদয় ভেঙেছে এই সাঁকোতে। তার ছেলে আতিকুর রহমান (৩৬) এক বছর আগে সাঁকো থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। প্রায় এক মাস চিকিৎসার পর মৃত্যু হয় তার। কণ্ঠ ভারী করে এহসান আলী জানান, ‘আমি নিজেও দুইবার এই সাঁকো থেকে পড়ে আহত হয়েছি। প্রতিবার শুধু প্রতিশ্রুতি পাই, সেতু পাই না। কবে নীলকমলের ওপর একটি সেতু হবে, আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।’

    স্থানীয় কলেজছাত্র ফারুক হোসেন (১৯) বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে আমিও পড়ে গিয়ে আহত হই। আমার মোবাইলও ভেঙে গেছে। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে এখানে।’ ‘আগে যখন কাঠের সেতু ছিল, তখন নিরাপদে চলাচল করেছি। ঝুঁকি আবাসনের ৮০টি পরিবারের। বিশেষ করে নারীরা বাচ্চা কোলে নিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পাড়াপাড় করছেন। এখানে কংক্রিটের একটি সেতু জরুরি হয়ে পড়েছে,’ তিনি জানিয়েছেন।

    অন্য দিকে ওই এলাকার কৃষক আক্তার আলী (৫৮) জানান, ‘তিন বছর ধরে আমরা নিজেরাই বাঁশ দিয়ে এই সাঁকো বানাই। প্রতিবছর আমি প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি বাঁশ দিই, বাকিরা শ্রম দেয়। অভিজ্ঞতা না থাকলে এক বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাই যায় না। প্রতিদিন হাঁটলেও মনে হয় আজই বুঝি পড়ে যাব। ‘কংক্রিটের সেতু নির্মাণ করতে না চাইলে আপাতত একটি কাঠের সেতু নির্মাণ হলে আমাদের দু:খ লাঘব হবে।’ তিনি দ্রুত একটি কাঠের সেতুর দাবি জানান।

    এক বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন বালাটারী, চন্দ্রখানা, জেলেপাড়া, কুমারপাড়া, বামনটারী, আবাসন, বৈরাগিপাড়া ও দাশিয়ারছড়ার মানুষ। বিশেষত শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন স্কুল–কলেজ–মাদ্রাসায় যেতে হলে পার হতে হয় এ ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো।

    এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মামুনুর রহমান জানান, ‘আমি সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। নীলকমল নদীর ওপর ১২০ মিটার সেতু নির্মাণের প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’

    উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম জানান, ‘গ্রামের লোকজনের আপাতত চলাচলের জন্য বাঁশ-কাঠের সাঁকো নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই কাজ শুরু হবে। পাশাপাশি স্থায়ী সেতু নির্মাণের প্রস্তাব এলজিইডিতে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দের অপেক্ষায় আছি।’

    এসআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…