পাবনার চাটমোহরে গত এক সপ্তাহে অন্তত ১৫টি বানিজ্যিক মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। সংঘবদ্ধ চোরের দল রাতের আঁধারে মিটার চুরি করে সেখানে চিরকুট লিখে মোবাইল নম্বর দিয়ে রেখে যাচ্ছে। উল্লেখিত নম্বরে যোগাযোগ করলে দাবি করা হচ্ছে টাকা। আর টাকা পাঠালেই ফেরত দেওয়া হচ্ছে মিটার। এমন ঘটনা গত কয়েক মাস যাবৎ অব্যাহতভাবে চলে আসলেও প্রশাসন চোর শনাক্তকরণ কিংবা এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
ভুক্তভোগীরা জানান, কয়েক মাস ধরে চাটমোহর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক বানিজ্যিক বৈদ্যুতিক মিটার চুরির ঘটনা ঘটছে। গত সপ্তাহে রেলবাজার এলাকার আব্দুল মান্নান, আবুল বাশার, আলহাজ্ব শাহজালাল সরকার, পাঞ্জাব বিশ্বাস ও শহীদুল ইসলামের মিল কারখানায় বাণিজ্যিক মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এর আগে মূলগ্রাম বাজার এলাকায় রাতের আঁধারে বেশ কয়েকটি বৈদ্যুতিক মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। সবশেষ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের ভাদড়া বাইপাস এলাকার নিখিলের চাউলের মিলে ও উথুলী গ্রামের মকবুল হোসেনের ফিড মিলের মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে।
চুরি যাওয়া মিটার মালিকদের প্রত্যেককে চিরকুট লিখে মোবাইল নম্বর দিয়ে গেছেন চোর। চোরের দেওয়া মোবাইল নম্বরে ফোন দিলেই বিকাশে টাকা চাওয়া হচ্ছে। ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে মালিককে মিটার ফেরত দিচ্ছে চোরের দল। চিরকুটে লেখা মুঠোফোন নম্বরে কাঙ্খিত অর্থ পাঠালেই চুরি যাওয়া মিটারগুলো ফেরত পাঠানো হচ্ছে। টাকা পেয়ে চক্রটি হারানো মিটার খুঁজে পাওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থানের কথা জানান। পরে সেখান গিয়ে মিটারটি পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। ঝামেলা এড়াতে এসব মিটার মালিকগণ থানা পুলিশকে কিছুই বলতে চায় না বা অভিযোগও দিতে চায় না। এসব চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় গ্রাহকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থের লোকসান হচ্ছে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি এই মিটার চুরির ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এর আগে এমন ঘটনা এই এলাকায় হতো না। যেসব গ্রাহকদের মিটার চুরি হচ্ছে তারা আমাদের অবহিত করলে পল্লী বিদ্যুতের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করছি। তবে কোনো ফলাফল পাচ্ছি না। তবে এমন বিষয়কে সামনে রেখে সকল গ্রাহক সচেতন হতে হবে। মিটার নিরাপত্তায় খাঁচা ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছি আমরা। ধারাবাহিকভাবে গ্রাহক সচেতনতায় মাইকিং ও বিলের কাগজে সচেতনতা মূলক সিল ব্যবহার করা হবে।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মনজুরুল আলম বলেন, এ বিষয়ে থানায় এসে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। তবে ভুক্তভোগীরা যদি ঐ মোবাইল নম্বরগুলো থানায় এসে আমাকে দেন তাহলে অপরাধীদের শনাক্ত করতে থানার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।
এআই