নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার বীরজোয়ান উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভুয়া শিক্ষক নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করে দীর্ঘদিন চাকরি করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, জীববিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুজ্জামান মন্ডল ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ের শিক্ষক বাবুল আক্তার জাল সনদ দিয়ে চাকরি গ্রহণ করে বর্তমানে সরকারি কোষাগার থেকে বিপুল পরিমাণ বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন।
এ ঘটনায় স্থানীয় এক নাগরিকের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে নিয়ামতপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) শাহ আলম শেখ। তিনি জানান, 'অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের শিক্ষক নিবন্ধন সনদের মূল কপি জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাচাই-বাছাইয়ে প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে সরকারি বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, শিক্ষক কামরুজ্জামান মন্ডল ২০০৬ সালে অনুষ্ঠিত ২য় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার রোল নম্বর ৪১২৬১৩২৭ ব্যবহার করে এবং বাবুল আক্তার রোল নম্বর ১১২২০০৫৪ ব্যবহার করে নিজেকে উত্তীর্ণ প্রার্থী দাবি করেন। কিন্তু তদন্তকারীদের সন্দেহ, এই রোল নম্বরদ্বয় আসল উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নয়, বরং অন্য কারো তথ্য হুবহু নকল করে জাল সনদ তৈরি করে তারা চাকরি গ্রহণ করেছেন।
অভিযোগে আরও দাবি করা হয়, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জনাব আলী এ বিষয়ে অবগত থাকার পরও তাদের সহায়তা করেছেন। তার মদদেই তারা বছরের পর বছর ধরে বেতন-ভাতা তুলেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক কামরুজ্জামান মন্ডল বলেন, 'আমি এই বিষয়ে এখন কিছুই বলতে পারব না।' তার সনদ সম্পর্কে কার কাছে জানা যাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'সেটাও আমি জানি না।'
অন্যদিকে, শিক্ষক বাবুল আক্তারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জনাব আলী বলেন, 'আমি এখন পর্যন্ত কোনো চিঠি হাতে পাইনি। চিঠি হাতে পেলে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
এ বিষয়ে স্থানীয় অভিভাবক ও সচেতন মহলের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তারা অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
এসআর