নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানার মুন্নি খানম হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন করে ১২ ঘন্টার মধ্যে প্রেমিক সোহেল সরদার (২০) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোর।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোরের পক্ষ থেকে এক প্রেস রিলিজে এসব তথ্য জানানো হয়।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সোহেল সরদারকে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার তেঘরিয়া বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন মশিউর সরদারের মেস হতে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়। সে নড়াগাতী থানার ডুমুরিয়া পশ্চিমপাড়ার সামাদ সরদারের ছেলে।
বুধবার মুন্নির মা বাদী হয়ে নড়াগাতী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২। মামলাটির তদন্তভার পিবিআই যশোর জেলা স্ব-উদ্যোগে গ্রহণ করে। সোহেল সরদারকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
প্রেস রিলিজে জানানো হয়, নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানার দক্ষিণ নলামারা গ্রামের শিমুল মিনার সেজো মেয়ে মুন্নি খানমের প্রায় ১৪ মাস পূর্বে খুলনা জেলার তেরখাদা থানার হৃদয় ফকিরের সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। গত ২৯ আগস্ট বিকাল অনুমান ৪টার দিকে মুন্নি খানম শ্বশুর বাড়ি থেকে তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসে এবং ঐদিনই তার শ্বশুর বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় সে আর শ্বশুর বাড়িতে যায়নি।
একই দিন রাত ৯টার পরে মুন্নি খানম নিখোঁজ হন। তার পরিবারের লোকজন সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজা-খুঁজি করে মেয়েকে না পেয়ে স্থানীয় থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করে। পরবর্তীতে নড়াগাতী থানা পুলিশ গত ২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে নড়াগাতী থানার দক্ষিণ নলামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে পরিত্যক্ত পুকুরের উত্তর পশ্চিম কোণে পানির মধ্যে একজন অজ্ঞাতনামা মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে। সংবাদ পেয়ে মুন্নির পরিবার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহটি তাদের মেয়ে মুন্নির সনাক্ত করে। নড়াগাতী থানা পুলিশ মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোর ছায়া তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তি সহায়তা ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পিবিআই যশোর জেলা পুলিশ সুপার রেশমা শারমিনের নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক সাইদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত চৌকস দল গত ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার তেঘরিয়া বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন মশিউর সরদারের মেস হতে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় সোহেলকে গ্রেফতার করে।
এসময় সোহেলের দেখানো ও তথ্য মতে মুন্নির গলায় থাকা স্বর্ণের লুণ্ঠিত চেইনটি তার (সোহেলের) নিজ বাড়ির পিছন থেকে উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল জানায়, ‘মুন্নি খানমের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত ২৯ আগস্ট মুন্নি শ্বশুর বাড়ি থেকে তার পিতার বাড়িতে আসে। ঐদিনই রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রেমের টানে তারা নলামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে দেখা করে। তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হলে সোহেল মুন্নিকে হত্যা করে পার্শ্ববর্তী ডোবায় কচুরিপানার মধ্যে মরদেহ ফেলে চলে আসে। আসার সময় মুন্নির গলায় থাকা চেইন নিয়ে যায় সোহেল। চেইনটি ইমিটেশন মনে করে সোহেলের বাড়ির পিছনে বাঁশবাগানে ফেলে দেয়।
এনআই