এক সময় ৫০০ টাকা নিয়ে বাজারে গেলে হাতে ব্যাগ ভারী হয়ে যেত। এখন সেই একই টাকায় বাজার থেকে ফিরছেন অনেকে খালি হাতে। মুখে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বাজার থেকে ফিরছেন এক ক্রেতা। জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘এই বাজারে কী আর চলে? একবেলার বাজার মানেই এখন বাজেটের ছেঁড়া জুতো!
রাজধানীর কারওয়ান বাজার, পলাশী, শান্তিনগরসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাধারণ সবজির দামই এখন মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। মাছ-মাংসের দিকে তাকানোর সাহসই পাচ্ছেন না অনেকে। ভরা মৌসুমেও দাম নাগালের বাইরে চলে গেছে।
সবজিতে আগুন–ছোঁয়া দাম
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, সবজির দাম কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না। ক্রেতার পছন্দের সবজি বেগুন। লম্বা এবং গোল; দুই ধরণের বেগুনেরই আছে আলাদা চাহিদা। তবে, বেশ কয়েকদিন ধরেই নাগালে নেই দাম। প্রতি কেজি গোল বেগুনের জন্য এখন গুণতে হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। আর লম্বা বেগুন কিনতে লাগছে ১০০ টাকা। ঝিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে।
পলাশী বাজারে একটি লাউ কিনতে গুনতে হচ্ছে ৮০ টাকা। বরবটির কেজি ১০০ টাকা, আর ভারতীয় টমেটো মিলছে ১৫০ টাকায়। উস্তার দাম ১০০ টাকা, আর সিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি দরে।
এছাড়া ‘ডাবল সেঞ্চুরি’ করেছে কাঁচা মরিচ। বেশিরভাগ বাজারেই ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে এটি। এদিকে সম্প্রতি ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হলেও দাম কমেনি। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে।
মাছ কিনতে ঘাম ঝরছে
চাষের কিছু মাছের দাম কম থাকলেও দেশি মাছের ক্ষেত্রে সেই স্বস্তি নেই। নদীর মাছের দাম শুনেই অনেকে পিছু হটছেন।চাষের চিংড়ি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকারও বেশি দামে। দেশি বোয়াল এবং কাজলীর দামও হাজার টাকার ঘরে। টেংড়া বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৯০০ টাকায়, আর চাষের কই ও পাবদা মিলছে ৩০০-৪০০ টাকায়।
ইলিশের দামেও নেই কোনো ছাড়। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২,৫০০ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম হওয়ায় দাম কমছে না। এর প্রভাব পড়েছে অন্য মাছের দামে।
মুরগি ও ডিমেও অস্থিরতা
ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকায়। সোনালি মুরগি কিনতে হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। কক মুরগির দাম ৩১০, আর দেশি মোরগ ৩৩০ টাকা কেজি। লেয়ার মুরগির দাম ৩৫০ টাকা। ডিমের বাজারেও অস্থিরতা। ডজনপ্রতি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা দরে।
ক্রেতারা বলছেন, আগে বাজারে এসে যা কিনতেন ৫০০ টাকায়, এখন সেটিই কিনতে খরচ হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ। এক বিক্রেতা জানান, সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও পাইকারি দামের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এমন চিত্র তৈরি হয়েছে। এদিকে সরকারের তরফ থেকে মনিটরিং এর কথা বলা হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন খুব একটা যাচ্ছে না বলে বলে অভিযোগ করছেন ক্রেতারা।
আরডি