নেত্রকোনায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীরা চার দফা দাবীতে আন্দোলন করায় মোট ছয়জনকে বরখাস্তের ঘটনায় গণছুটিতে রয়েছেন কর্মকর্তা কর্মচারীরা। ঘোষণা দিয়ে গত বৃহস্পতিবার থেকে ৮০৯ জনের গণছুটিতে দেখা দিয়েছে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ বিপর্যয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন জেলার গ্রাহকরা। বেশি বিপাকে মৎস্য চাষীরা। শনিবার দিনব্যাপী বিদ্যুৎ না থাকায় জেলার পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন বিভিন্ন গ্রামে দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ। সাময়িকভাবে কোথাও কোথাও সমাধান হলেও কোথাও আবার ১২ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎবিহীন।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পল্লী বিদ্যুতের সিস্টেম সংস্কার এবং আরইবির শোষণ, নিপীড়ন ও নিম্নমানের মালামাল থেকে মুক্তির (৪ দফা) দাবীতে দেশব্যাপী মানববন্ধন, বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচী পালন করছে সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এর ধারাবাহিকতায় গত ৫ দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীরা। কিন্তু যৌক্তিক এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ায় বেশকজনকে সাময়িক ও স্থায়ী বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ।
চারজনকে সাময়িক ও দুইজনকে স্থায়ী বরখাস্ত করায় ক্ষুব্ধ হয়ে এক পর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার থেকে একযোগে ৮০৯ জন কর্মকর্তা কর্মচারী অনির্দিষ্ট কালের ছুটির আবেদন দিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। ফলে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের আশঙ্কা থেকে এখন বিপর্যয়ে পড়েছেন গ্রাহকরা। যদিও ঠিকাদার দিয়ে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা চালু রাখতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু জেলার বারহাট্টা, দুর্গাপুর, পূর্বধলা, মোহনগঞ্জ, আটপাড়া সহ বিভিন্ন উপজেলায় একাধিক গ্রামে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় ভোগান্তিতে গ্রাহকরা।
বারাট্টার বাট্টাপাড়া এলাকার সোহাগ মিয়া ও মো. আব্দুর রাজ্জাকসহ ওই এলাকার ভুক্তভোগীরা বলেন, বিদ্যুৎ ছাড়া দোকানপাটের ফ্রিজের জিনিস কেউ নিচ্ছে না। শিশু, বৃদ্ধ সকলেই কষ্টে। পুকুরে অক্সিজেন হচ্ছেনা। মাছ মরে ভেসে উঠছে। তবে অন্য জেলা থেকে লোকবল এনে সমাধানের চেষ্টা করছে জেলা প্রশাসন।
পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার মোঃ আকরাম হোসেন বলেন, আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমত, ঝরবৃষ্টি নেই। ফলে তেমন কোন সমস্যা হচ্ছে না। যেখানে খবর পাচ্ছি, আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি ঠিকাদারের মাধ্যমে সচল রাখতে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান জানান, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ চলমান রাখতে আলোচনা করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এদিকে সাধারণ গ্রাহক যাতে ভোগান্তিতে না পড়েন, সেজন্য আমরা বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে যোগাযোগ করছি।
জানা গেছে, জেলার সাড়ে ৬ লাখ গ্রাহকের জন্য ২৬টি অভিযোগ কেন্দ্রসহ ২০টি সাব-স্টেশন ও ১২টি জোনাল অফিস রয়েছে।
এসআর