আজ ০৮ সেপ্টেম্বর, আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০২৫’।
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থার (ইউনেসকো) নির্ধারিত এ বছর সাক্ষরতা দিবসের প্রতিপাদ্য হলো, ‘প্রযুক্তির যুগে সাক্ষরতার প্রসার’।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো আজ রাজধানীর তেজগাঁওয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। দিবসটি উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন।
সাক্ষরতা নিয়ে কাজ করা সরকারি প্রতিষ্ঠান উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের ৬৪ জেলার ২৪৮টি উপজেলার ১৫-৪৫ বছর বয়সী সাড়ে ৪৪ লাখ জনগোষ্ঠীকে মৌলিক সাক্ষরতার আওতায় আনা হয়েছে। আর ১৪-১৮ বছর বয়সী যারা বিদ্যালয়ে যায়নি, এমন কিশোর-কিশোরীদের জন্য একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তবে এ পরিসংখ্যানের সঙ্গে বাস্তবতার মিল তেমন পাওয়া যায় না।
সাক্ষরতায় দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় বাংলাদেশ
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সাক্ষরতার দিক দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। এ দিক দিয়ে প্রথম মালদ্বীপ। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মালদ্বীপের সাক্ষরতার হার ৯৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। শ্রীলংকায় সাক্ষরতার হার ৯২ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং ভারতে ৭৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর পাকিস্তানে এ হার মাত্র ৫৮ শতাংশ। বাংলাদেশে এই হার ৭৮ শতাংশ।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী এবং ১৯৭২ সাল থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে ৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উদযাপিত হয়ে আসছে।
অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা থেকে মুক্তির অন্যতম উপায় হলো সাক্ষরতা অর্জন করা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই সাক্ষরতার সংজ্ঞায় ভিন্নতা থাকলেও, ১৯৬৭ সালে ইউনেস্কো সর্বজনীন একটা সংজ্ঞা নির্ধারণ করে। তখন শুধু কেউ নাম লিখতে পারলেই তাকে সাক্ষর বলা হতো।
পরবর্তীতে প্রায় প্রতি দশকেই এই সংজ্ঞায় পরিবর্তন এসেছে এবং ১৯৯৩ সালের একটি সংজ্ঞায় ব্যক্তিকে সাক্ষর হওয়ার জন্য তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়।
শর্ত তিনটি হচ্ছে— ১. ব্যক্তি নিজ ভাষায় সহজ ও ছোট বাক্য পড়তে পারবে, ২. ব্যক্তি নিজ ভাষায় সহজ ও ছোট বাক্য লিখতে পারবে এবং ৩. ব্যক্তি দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ হিসাব-নিকাশ করতে পারবে।
স্বাধীন বাংলাদেশে মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য জাতিকে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের সংবিধানের ১৭ অনুচ্ছেদে অবৈতনিক বাধ্যতামূলক শিক্ষার অধিকার সন্নিবেশিত হয়েছে।
সাক্ষরতা ও উন্নয়ন একই সূত্রে গাঁথা। নিরক্ষরতা উন্নয়নের অন্তরায়। টেকসই সমাজ গঠনের জন্য যে জ্ঞান ও দক্ষতা প্রয়োজন, তা সাক্ষরতার মাধ্যমেই অর্জন করা সম্ভব।
এইচএ