ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আজ শনিবার শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। গত সম্মেলন অনুষ্ঠানের ৯ বছর পর আজ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থাকবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল।
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৬ সালের ২২ নভেম্বর। এরপর প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দলটি আর কোনো সম্মেলন করতে পারেনি। সম্মেলন ঘিরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ কারা পাচ্ছেন, তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। দীর্ঘদিন পরে দলের কাউন্সিলকে ঘিরে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সম্মেলনের সফলতা কামনা করে এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের স্বাগত জানিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে সাটানো হয়েছে পোস্টার, ব্যানার ও প্যানাফ্ল্যাক্স। এসবে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। নির্মাণ করা হয়েছে শত শত তোরণ। এবার সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য মোট ছয়জন নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৩টি উপজেলা ও ৮ পৌর কমিটির ২ হাজার ৯০ জন কাউন্সিলরের ভোটের মাধ্যমে শীর্ষ দুটি পদে নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ঐক্যমতের ভিত্তিতে মো. শরীফুল আলমকে সভাপতি ও মাজহারুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। ওই সম্মেলনেও প্রধান অতিথি হিসেবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ১৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। এবার সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন জেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি মো. শরীফুল আলম। তাঁকে প্রতীক দেওয়া হয়েছে ‘আনারস’। তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির ময়মনসিংহ অঞ্চলের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বেও আছেন। তাঁর সঙ্গে ‘ছাতা’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান জেলা কমিটির সহসভাপতি রুহুল হোসাইন।
সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মাজহারুল ইসলাম (রিকশা), কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল (ফুটবল), নিকলী উপজেলা বিএনপির সদস্য শফিকুল আলম রাজন (মাছ) ও নিকলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সাজ্জাদুল হক (গোলাপ ফুল)। তবে এই সম্মেলনের তফসিলের পর প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়ার সময় দলীয় গঠনতন্ত্রের ‘এক নেতা এক পদ’ বিধান মানা হয়নি বলে কোনো কোনো প্রার্থীর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। বক্তৃতা, বিবৃতি ও সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের তাঁরা এসব অভিযোগ জানান।
আয়োজকরা বলছেন, সম্মেলনে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ অংশ নেবেন। সেজন্য পুরাতন স্টেডিয়ামে নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল। বৃষ্টির বিষয়টি মাথায় রেখে ওপরে কার্পেট দিয়ে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন পর সম্মেলন হওয়ায় নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত। তাঁদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে কাউন্সিলররা তাঁদের নেতা নির্বাচন করবেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম বলেন, রেকর্ড সংখ্যক দলীয় নেতাকর্মী সম্মেলনে অংশ নেবেন বলে আমাদের ধারণা। সম্মেলনের কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করতে নেওয়া হচ্ছে প্রস্তুতি। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। প্রায় দুই হাজার ১শ কাউন্সিলর ভোট দিয়ে তাদের নেতা নির্বাচন করবেন।
এআই