চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। বিভাগের নীতিমালা অনুসারে প্ল্যানিং কমিটির অনুমোদনের পর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নিয়ম থাকলেও চলতি বছরের ১৯ মে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি বলে জানা গেছে।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বিভাগের চাহিদা ছাড়াই হঠাৎ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং নিয়োগ বোর্ডে ফারসি বিভাগের কোনো শিক্ষককে অন্তর্ভুক্ত না করা প্রক্রিয়াটিকে অস্বচ্ছতার দিকে ইঙ্গিত করছে।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিতব্য এ নিয়োগ পরীক্ষার বোর্ডে রাখা হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি বিভাগের অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন ও চবি আরবি বিভাগের অধ্যাপক মমতাজউদ্দিন আল-কাদেরীকে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফারসি বিভাগের শিক্ষকরা।
বিভাগীয় সভাপতি সহকারী অধ্যাপক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘নিয়োগ বোর্ডে আমাদের বিভাগের কোনো শিক্ষককে রাখা হয়নি। বাইরে থেকে শিক্ষক রাখা হয়েছে বলে জেনেছি।’
বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি অধ্যাপক মো. আবুল হাশেম বলেন, ‘বোর্ডে অভিজ্ঞ শিক্ষক থাকা নীতিসংগত। কিন্তু আমাদের বিভাগের কাউকে রাখা হয়নি বলে শুনেছি।’
অভিযোগ রয়েছে, ২০২২ সালেও এ নিয়োগকে ঘিরে অর্থ লেনদেনের অডিও ফাঁস হয়। উপাচার্য শিরীণ আখতারের পিএসসহ কয়েকজনের নাম সেখানে উঠে আসে। পরবর্তীতে সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে সে নিয়োগ বাতিল করা হয়। বর্তমান নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও পূর্বের সংশ্লিষ্টরা সক্রিয় আছেন বলে মনে করছেন অনেকেই।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন পরীক্ষায় অংশ নেওয়া তিন প্রার্থী—আশরাফুল নেছা, মহিমা আকতার এবং মো. আকিব।
লিখিত বক্তব্যে মো. আকিব বলেন, লিখিত পরীক্ষায় আবেদন করেছিলেন ৪৩ জন, অংশ নেন ২৯ জন। তাদের মধ্যে চবির শিক্ষার্থী ছিলেন ১৩ জন, কিন্তু কাউকেই উত্তীর্ণ করা হয়নি। তার দাবি, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক খাতা মূল্যায়ন করেছেন এবং তার পছন্দের প্রার্থীকে প্রশ্ন বুঝিয়ে দিয়েছেন। সিসিটিভি ফুটেজে বিষয়টি প্রমাণ করা সম্ভব।’
প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, নিয়োগ বোর্ডে ফারসি বিভাগের শিক্ষক না রেখে অন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগের শিক্ষক রাখা হয়েছে। এতে চবির শিক্ষার্থীদের ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উত্তীর্ণ হয়েছেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলেও বোর্ডের সদস্য চবি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন কাদেরী ফোনে সাড়া দেননি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অনিয়ম বা স্বজনপ্রীতির কোনো বিষয় আমার চোখে পড়েনি। যারা সংবাদ সম্মেলন করেছে তারা পরীক্ষায় বাদ পড়েছে। স্বজনপ্রীতির কোনো সুযোগ নেই, আমরা স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছি।’
এইচএ