রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়ে হত্যার ঘটনায় মূল আসামি গৃহকর্মী আয়েশাকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হত্যার পর গৃহকর্মী আয়েশা তার স্বামীর সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করলে তার স্বামী রাব্বী তাকে পালাতে সহায়তা করে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের এডিসি মোহাম্মাদ জুয়েল রানা এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, নলছিটির দাদা শ্বশুরের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। খুনের পর আয়েশা তার স্বামী রাব্বীকে হত্যার বিষয়ে জানালে তারা ঢাকা থেকে পালিয়ে যান। আয়েশাকে পালাতে সহায়তা করে স্বামী রাব্বী।
তিনি আরও জানান, জোড়া খুনের ৬ মাস আগে মোহাম্মদপুরের বছিলার একটি বাসায় চুরি করেছিল আয়েশা। সে সময় তার ব্যাপারে অভিযোগ করা হয়েছিল। সেই অভিযোগের সূত্র ধরে আয়েশার খোঁজ শুরু করে পুলিশ। অবশেষে সকালে তাকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যাবে হত্যার কারণ।
এর আগে, সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় গৃহকত্রী লায়লা আফরোজ ও তার মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিয়াকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটে। এই হত্যার ঘটনায় অন্যতম সন্দেহভাজন ছিল গৃহকর্মী আয়েশা।
ঘটনার দিন সকাল ৭টা ৫২ মিনিটে বোরকা পরে বাসায় ঢোকে সে। আর সাড়ে ৯টার নাগাদ মা-মেয়েকে খুন করে মেয়ে নাফিসার স্কুল ড্রেস পরে ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে যায়। এই জোড়া খুনের ঘটনায় সোমবার রাতে নিহত লায়লা আফরোজের স্বামী আজিজুল ইসলাম মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন।
এদিকে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চুরির ঘটনা নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে জানিয়েছে গৃহকর্মী আয়েশা।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে আয়েশাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানিয়েছে, তাকে চুরির অপবাদ দেওয়া হয়েছিল। সেই ক্ষোভে সে মা-মেয়েকে হত্যা করেছে।
পুলিশের সূত্র আরও জানায়, ঘটনার দিন বাসার মালামাল চুরি করে নেওয়ার সময় লায়লা আফরোজের কাছে আয়েশা ধরা পড়ে। একপর্যায়ে লায়লা আফরোজ তাকে আটকে পুলিশে ফোন দিতে গেলে আয়েশা ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে তাকে হত্যা করে।
মায়ের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে মেয়ে নাফিজা বিনতে আজিজ দৌড়ে ড্রয়িংরুমে এসে মাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায়। ওই সময় গৃহকর্মী তাকেও ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করে, এরপর স্কুলড্রেস পরে পালিয়ে যায়।
গ্রেপ্তারের সময় আয়েশার থেকে ৬ ভরি স্বর্ণ, একটি ল্যাপটপ, একটি মোবাইল ফোন ও হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আরডি