নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নিজ বাসা থেকে নিজাম উদ্দিন (২৫) নামে এক প্রবাস ফেরত যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিজামের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার স্ত্রী মনিরা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ভোরে ফতুল্লার হাজীগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সড়কের তজুমুদ্দিনের ভাড়া বাড়ির পঞ্চম তলার ফ্ল্যাট থেকে নিজাম উদ্দিনের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত নিজাম উদ্দিন দিনাজপুর জেলার খানসামা থানার আড়াজি গ্রামের মৃত মনসুর আলীর ছেলে। তিনি স্ত্রী ও ৫ বছরের কন্যা নাফিসাকে নিয়ে হাজীগঞ্জে ভাড়া বাসায় থাকতেন। একই বাড়ির চতুর্থ তলায় থাকতেন তার শ্বশুর-শাশুড়ি।
নিজামের পরিবারের অভিযোগ, নিজাম সৌদি আরবে থাকার সময় তার স্ত্রী মনিরা বেগম পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। এনিয়ে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং নিজাম সৌদি আরব থেকে অতি সম্প্রতি দেশে ফিরে আসেন।
অভিযুক্ত মনিরা বেগমের দাবি, বুধবার রাত ১১টার দিকে কাজ থেকে বাসায় ফেরার পর স্বামী-স্ত্রী রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।
রাতে তার পরকীয়ার বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে নিজাম ডিভোর্সের কথা বললে মনিরা তাতে সায় দেন। রাত আড়াইটার দিকে গোঙানির শব্দে ঘুম ভেঙে গেলে তিনি দেখেন তার ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে নিজাম উদ্দিন জানালায় ঝুলছেন। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে নিজামের মরদেহ নিচে নামায়।
পরকীয়ার বিষয়টি স্বীকার করে মনিরা বলেন, আমার স্বামী প্রবাসে থাকাকালে একজনের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
স্বামী প্রবাসে থাকাকালীন তার সঙ্গে এক যুবকের পরকীয়া প্রেম গড়ে উঠেছিল। কিন্তু সেই সম্পর্ক এখন আর নেই। বিষয়টি আমার স্বামীকে বুঝিয়ে বললেও নিজাম তা মেনে নিতে পারছিলেন না।
নাজিমের বড় ভাই মইনুদ্দিন ও খালাতো ভাই আশরাফুল জানান, বুধবার রাত আড়াইটার দিকে খবর পেয়ে গিয়ে তারা বিছানায় ভাইয়ের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান। নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ভোরে এসে মরদেহ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
তিনি আরও বলেন, যে অবস্থায় ভাইকে এসে পেয়েছি; সেই অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার অবস্থা ছিল না। আমার ভাইকে আগেই হত্যা করা হয়েছে। পরে আমাদের সামনে হাসপাতালে নেওয়ার নাটক করছিল।
ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি রহস্যজনক মনে হওয়ায় নিহতের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এনআই