এইমাত্র
  • আইপিএলে পুরো সিজনে মুস্তাফিজের খেলা নিয়ে যা বললেন বিসিবি সভাপতি
  • মনোনয়ন দেবে জাতীয় পার্টি, নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত পরিস্থিতি বিবেচনায়
  • গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সেমিফাইনালে বাংলাদেশ
  • আরও ৬৭ মিলিয়ন ডলার কিনলো বাংলাদেশ ব্যাংক
  • নির্বাচন নিয়ে প্রতিবেশীর নসিহতের প্রয়োজন নেই: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নতুন ফরম্যাটে আয়োজিত হবে পিএসএল
  • মেসিকে ‘অতিবিরল’ এক ঘড়ি উপহার দিলেন আম্বানি
  • বাংলাদেশি হাইকমিশনারকে তলব করে যে বার্তা দিলো ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
  • পুলিশের বাধার মুখে ‘লং মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন’
  • বিশ্বকাপ পর্যন্ত নেইমারের সঙ্গে চুক্তি বাড়াচ্ছে সান্তোস
  • আজ বুধবার, ৩ পৌষ, ১৪৩২ | ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    দুই যুগ ধরে জরাজীর্ণ টিনসেডের মধ্যে পাঠদান, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

    মো. সাইফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (ভোলা) প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪০ পিএম
    মো. সাইফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (ভোলা) প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪০ পিএম

    দুই যুগ ধরে জরাজীর্ণ টিনসেডের মধ্যে পাঠদান, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

    মো. সাইফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (ভোলা) প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪০ পিএম

    বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়েছিল পঁচিশ বছর আগে। তখন থেকেই টিনের ছাউনি ও কাঠ দিয়ে শ্রেণীকক্ষগুলো তৈরি করা হয়। সময়ের সাথে সাথে টিনগুলোতে ধরেছে মরিচা, ফুটো হয়ে গেছে অনেক জায়গায়। রোদে প্রচুর গরম এবং বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টি হলেই টিনের চালা দিয়ে ঝরতে থাকে পানি।

    বিদ্যালয়ের নাম ‘সুলতান মিয়ার বাজার নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়’। এটি ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার আসলাম ইউনিয়নে অবস্থিত। এ বিদ্যালয়ের আশি শতাংশ অবকাঠামো ইতোমধ্যেই নষ্ট হয়ে গেছে। শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চগুলোতে নেই পর্যাপ্ত বসার জায়গা।

    যেখানে চারপাশের বিদ্যালয়গুলোতে আধুনিক মানের ভবন নির্মাণ করা হয়েছে, সেখানে সুলতান মিয়ার বাজার নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব ও বারবার মেরামতের ব্যর্থতায় এখন প্রায় জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। বিদ্যালয়ে চলছে চরম ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে পাঠদান।

    স্থানীয়দের আশঙ্কা, যে কোনো মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, তবুও প্রতিদিন শতাধিক শিক্ষার্থী এখানেই পাঠগ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে।

    বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, সুলতান মিয়ার বাজার নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ২০০০ সালে স্থাপিত হয়েছে। পরবর্তীতে ২০২২ সালে এমপিওভূক্ত হয়। বর্তমানে ৬ষ্ট থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানের অনুমতি রয়েছে। তিন শ্রেণীতে শিক্ষার্থী রয়েছে ২০০ জন।

    শিক্ষকরা বলেন, ‘টিনসেড ও কাঠ দিয়ে তৈরি বিদ্যালয়টির ঘর এখন দাড় করিয়ে রাখাই কঠিন। ঝড়-বৃষ্টির সময় পাঠদান প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তবুও শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা ভেবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। বিদ্যালয়টির দরজা ও জানালাও নষ্ট হয়ে গেছে। কাঠ পঁচে যাওয়ার কারণে অনেক দরজা আর ঠিকমতো বন্ধ হয় না। বাতাসে জোরে শব্দ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা প্রায়ই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।’

    শিক্ষার্থী ঝুমুর বলেন, ‘আমি এই স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে বর্তমানে ৮ম শ্রেণিতে পড়ি। আমাদের স্কুলটি পুরো ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। আমাদের চারপাশের প্রতিষ্ঠানগুলো খুবই সুন্দর। আমাদেরও ইচ্ছে করে ভালো মনোরম পরিবেশে পড়াশোনা করতে। স্কুলটিতে ভালো টয়লেট ও মেয়েদের জন্য কমনরুম নেই। পড়াশোনা ভালো হয়, তবে সুন্দর একটি ভবন চাই।’

    শিক্ষার্থী আয়মান শান্ত বলেন, ‘আমি ৮ম শ্রেণির একজন ছাত্র। আমাদের স্কুল টিনসেডের তৈরি। সুন্দর ভবন নেই। স্কুলটিতে ভালো পাঠদান হয়। তবে বৃষ্টির সময় বই-খাতা ভিজে যায়, রোদের সময় শ্রেণি কক্ষে বসতে পারিনা। আমরা সরকারের কাছে একটি ভবনের আবেদন জানাই।’

    শিক্ষক ইয়াছমিন আক্তার বলেন, ‘২০০০ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। স্কুলটি ভবন নেই, তবে টিনসেড ঘর। উপরে দু'চালা বিশিষ্ট টিনের চাল। আনন্দময় শিক্ষার জন্য সুন্দর পরিবেশ সর্বপ্রথম দরকার বলে আমি মনে করি। পরিবেশ সুন্দর হলে স্কুলের প্রতি শিক্ষার্থীরা আকৃষ্ট থাকে। পাঠদানেও মনোযোগি হয়। এই স্কুলটি যদি সুন্দর একটি ভবন হয়। তাহলে শিক্ষার্থীদের মনমানসিকতা ভালো থাকবে এবং শিক্ষার মান উন্নতি হবে।’

    শিক্ষক এনায়েত কবির বলেন, ‘স্কুলটির শুরু থেকেই আমি শিক্ষকতা করে আসছি। নিজেদের অর্থায়নে এই স্কুল ঘরটি নির্মাণ করেছি। ভবন নির্মাণের জন্য আমরা সরকারি কোন অর্থ পাইনি। চেয়ার টেবিল ও শ্রেণি কক্ষের জন্য শিক্ষার্থীদের ঠিকমতো জায়গা দিতে পারি না।’

    বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরউদ্দীন বাবর বলেন, ‘জরাজীর্ণ টিনসেড বিদ্যালয়টির পরিস্থিতি খুবই খারাপ। একটি নিরাপদ ও আধুনিক ভবন হলে শিক্ষার্থীরা আরো ভালোভাবে পড়াশোনা করার পরিবেশে পাবে। অতিদ্রুত সরকার যেনো আমাদের বিদ্যালয়ের জন্য নামে একটি ভবন বরাদ্দ করে এটাই আমার দাবী।’

    উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল খায়ের বলেন, ‘প্রথমেই শিক্ষার জন্য পরিবেশ দরকার। শিক্ষার্থীদের জন্য তিনটি রুম ও শিক্ষকদের জন্য একটি রুম আছে। সুতরাং ওই স্কুলটিতে একটি ভবন অতিব প্রয়োজন। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ আবেদন করলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ পাঠাবো।’

    এসএম

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…